বুরো টাঙ্গাইল
বুরো টাঙ্গাইল ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি তৃণমূল পর্যায়ের গ্রামভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক বেসরকারি সংস্থা। দেশের গরিব মানুষের, বিশেষত মহিলাদের উন্নতিই সংস্থাটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সংস্থাটি গ্রামবাংলার দরিদ্র জনসাধারণকে সেই ধরনের স্বয়ংসম্পূর্ণ সংগঠনের আওতায় আনতে আগ্রহী, যেগুলি তাদেরকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথে সব ধরনের অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানে সক্ষম হবে। দরিদ্র জনগণের আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই সংস্থা সঞ্চয় বৃদ্ধি ও ঋণ প্রদানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। সংস্থাটির মূল কর্মসূচি হচ্ছে সুবিধাজনক শর্তে আর্থিক সহায়তা প্রদান অর্থাৎ একটি দীর্ঘস্থায়ী গ্রামীণ সঞ্চয় ও ঋণদান কার্যক্রম গড়ে তোলা। এর অন্যান্য কর্মকান্ডের মধ্যে মানব সম্পদ উন্নয়ন, দুর্যোগ মোকাবেলা, বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণ, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা, ক্ষুদ্র সংগঠকের উন্নয়ন, শিশুদের টিকাদান কর্মসূচিতে প্রেরণা জোগানো, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা ইত্যাদি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। সব ধরনের কাজকর্ম পর্যবেক্ষণ, নীতি নির্ধারণ, বাজেট প্রণয়ন ও প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য সংস্থাটির একটি সাধারণ পরিষদ আছে। সাধারণ পরিষদ কর্তৃক নির্বাচিত নির্বাহী পরিষদ দ্বারা এর কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয়। নির্বাহী পরিষদের প্রধান হচ্ছেন নির্বাহী পরিচালক এবং তাকে সাহায্য করেন প্রোগ্রাম, প্রশিক্ষণ ও অর্থায়ন এবং হিসাব বিভাগের পরিচালকবৃন্দ।
বাংলাদেশের আটটি জেলায় বুরো টাঙ্গাইল-এর কার্যক্রম ব্যাপৃত। জেলাগুলি হচ্ছে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও ঢাকা। ২০০১ সালে এর সদস্যসংখ্যা ছিল ৮৬,৭৮৭ জন এবং একই বছরের জন্য এর বাজেট ছিল ৪৩৫ মিলিয়ন টাকা। সংস্থাটির তহবিলের শতকরা ৮০ ভাগ গঠিত হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুদানের অর্থ দিয়ে। এর আয়ের অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে আজীবন সদস্যদের চাঁদা ২.৬%, সার্ভিস চার্জ ৭.৯%, উন্নয়নমূলক শুল্ক ৩.৯%, ভর্তি ফি ৪.৬%, ব্যাংক সুদ ০.৬% এবং সদস্য ফরমের আয় ০.৬%।
প্রতিষ্ঠার পর বুরো টাঙ্গাইল এক দশকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এসব অর্জন সংস্থাটির নিজের এবং এর ক্লায়েন্ট উভয়ের জন্যই গৌরবের বিষয়। শুরুতে সংস্থাটি টাঙ্গাইল জেলায় ক্ষুদ্রশিল্পে অর্থায়নের ওপর একটি দীর্ঘস্থায়ী ও স্বাবলম্বী মডেল উদ্ভাবন করে। পরবর্তী সময়ে এই মডেলটি দেশের অন্যত্র প্রবর্তন করা হয়। সংস্থাটির কার্যক্রম এমনভাবে প্রণয়ন করা হয় যাতে এর বর্তমান অর্জন, নিজস্ব অভ্যন্তরীণ শক্তি ও বাইরের সুযোগ-সুবিধা সমন্বিত হয় এবং এসবের সদ্ব্যবহার সম্ভব হয়। [শামসুল হুদা]