বিরামপুর উপজেলা
বিরামপুর উপজেলা (দিনাজপুর জেলা) আয়তন: ২১২.৮৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৮´ থেকে ২৫°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫০´ থেকে ৮৯°০৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ফুলবাড়ী ও নবাবগঞ্জ উপজেলা (দিনাজপুর), দক্ষিণে হাকিমপুর উপজেলা ও পশ্চিমবঙ্গ (ভারত), পূর্বে নবাবগঞ্জ ও হাকিমপুর উপজেলা, পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ (ভারত) ও ফুলবাড়ী উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৭০৮০৬; পুরুষ ৮৬৩৯৩, মহিলা ৮৪৪১৩। মুসলিম ১৫৩০২৯, হিন্দু ১০৩০৮, বৌদ্ধ ২, খ্রিস্টান ৪৮৭৯ এবং অন্যান্য ২৫৮৮।
জলাশয় প্রধান নদী: যমুনা। অশোলার বিল, চেঙ্গার বিল, বগঘার বিল ও কাটুয়ার বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন বিরামপুর থানা গঠিত হয় ১৯৮১ সালের ১৭ জুন এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। পৌরসভা গঠন করা হয় ১৯৯৫ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ৭ | ১৫০ | ১৬৯ | ৪৭৫৩৯ | ১২৩২৬৭ | ৮০২ | ৫৩.৩ (২০০১) | ৪৮.৭ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার(%) | |||
২৬.৩৫ (২০০১) | ৯ | ২৬ | ৪৫৩৩৪ | ১৩১৮ (২০০১) | ৫৯.৭ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৫ (২০০১) | ২ | ২২০৫ | ৪১১ (২০০১) | ৫০.৬ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
কাটলা ৫৯ | ৪০৭৫ | ৮৯১৫ | ৮৫৯১ | ৪৮.৬ | ||||
খানপুর ৭১ | ৯১২৪ | ৯২৮৮ | ৯০৩০ | ৪৫.১ | ||||
জোতবানী ৪৭ | ৮৯৮৪ | ১২৩৬৩ | ১২০৭৭ | ৫০.৮ | ||||
দিওড় ৩৫ | ৭৯৬০ | ১১৩২৯ | ১১৩২০ | ৪৯.১ | ||||
পলি প্রয়াগপুর ৮৩ | ২৭৪১ | ৪৬৩৮ | ৪৫৯৬ | ৫০.৪ | ||||
বিনাইল ১১ | ৯০৭১ | ৯৬৮২ | ৯৪০৫ | ৪৭.৮ | ||||
মুকুন্দপুর ২৩ | ৩৮৫০ | ৭১৯৯ | ৭০৩৯ | ৪৯.৬ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বানেশ্বর শিব মন্দির।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল পাকবাহিনী বিরামপুরের পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলায় চড়ারহাটে কয়েক’শ নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৯৭১ সালে কেটরা হাটে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ লড়াইয়ে ৭ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৪ ডিসেম্বর সাধারন জনগণ উপজেলার বেপারীটোলায় পাকবাহিনীর একটি জীপকে আক্রমণ করে কয়েকজন পাকসেনাকে হত্যা করে।
বিস্তারিত দেখুন বিরামপুর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩০৮, মন্দির ১৫, গির্জা ৩, মাযার ৪।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫১.৬%; পুরুষ ৫৪.১%, মহিলা ৪৯.২%। কলেজ ৫, টেক্সটাইল ইনষ্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬২, মাদ্রাসা ২৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বিরামপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪), বিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৯), বিরামপুর টেকনিক্যাল এন্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজ (২০০১), একইর মঙ্গলপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০), বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৫), শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫১), বিরামপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭১), আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৮), কোঁচগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিজুল দারুল হুদা কামিল মাদ্রাসা (১৯৫৮), মুকুন্দপুর সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৭৪)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: বিরামপুর বার্তা, বিরাম।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ৭, সিনেমা হল ৭।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৮.৩৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯২%, শিল্প ০.৮৬%, ব্যবসা ১৩.০৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৬৪%, চাকরি ৫.১%, নির্মাণ ০.৬৭%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৭% এবং অন্যান্য ৬.০৩%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৭.২৪%, ভূমিহীন ৪২.৭৬%। শহরে ৪৪.৩৪% এবং গ্রামে ৬১.৩৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, ভূট্টা, পাট, আলু, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি সরিষা, আখ, তিল।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কলা, কাঁঠাল, জাম।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার হাঁস-মুরগি ১৭, গবাদিপশু ১৩।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৯০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১০০ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৪৫ কিমি; রেলপথ ১১ কিমি
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, হাসকিংমিল, স’মিল, ফ্লাওয়ারমিল, আইস ফ্যাক্টরি, বিড়ি ফ্যাক্টরি।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৭, মেলা ২। বিরামপুর হাট, কাটলা হাট, কেটরা হাট এবং কাটলা মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, চাল।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪২.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.৬%, ট্যাপ ০.৯% এবং অন্যান্য ২.৫%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৮.৮% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৮.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১২.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ৩, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ২।
এনজিও ব্র্যাক, আশা। [শামসুজ্জামান]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বিরামপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।