বাসাইল উপজেলা

বাসাইল উপজেলা (টাঙ্গাইল জেলা)  আয়তন: ১৫৭.৭৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৭´ থেকে ২৪°১৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৮´ থেকে ৯০°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কালিহাতি উপজেলা, দক্ষিণে মির্জাপুর ও দেলদুয়ার উপজেলা, পূর্বে সখীপুর উপজেলা, পশ্চিমে দেলদুয়ার ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৫৯৮৭০; পুরুষ ৭৫২২৬, মহিলা ৮৪৬৪৪। মুসলিম ১৪৩১৩৫, হিন্দু ১৬৭২৭, খ্রিস্টান ৪ এবং অন্যান্য ৪।

জলাশয় প্রধান নদী: বংশী, লৌহজং, লাংলী। চাপড়া বিল, ডুবাইল বিল, কাউলজানী বিল, বনিকিশোরী বিল ও বালিয়া বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন বাসাইল থানা গঠিত হয় ১৯১৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৭২ ১০৭ ১৩৪৯৬ ১৪৬৩৭৪ ১০১৩ ৫৪.৩ ৫০.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১১.৩০ ১৩৪৯৬ ১১৯৪ ৫৪.৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কাউলজানী ৮৩ ৫৩৪০ ৯৯৪৬ ১১৬০৮ ৪৯.৯
কাঞ্চনপুর ৫৯ ৭৩৯৫ ১১৩৩১ ১২৯১২ ৪৭.৩
কাশিল ৭১ ৬০৫৮ ১২১৮৮ ১৩৫৭৩ ৫০.৪
ফুলকি ৩৫ ৬৮৫০ ১৩৮৭৮ ১৫৯১৪ ৪৮.০
বাসাইল ১১ ৬৪৫৬ ১২৮৬২ ১৩৮৪৪ ৪৮.৬
হাবলা ৪৭ ৬৫০৯ ১৫০২১ ১৬৭৯৩ ৫৭.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে এ উপজেলার কামুটিয়ায় ঝিনাই নদীর দুই পাড়ে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয় এবং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়া বাসাইল থানা, পাথরঘাটা ও বাথুলিসহ আরও কয়েকটি গ্রামে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। উপজেলার ঝিনাই নদীর তীরে কামুটিয়ায় ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন বাসাইল উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫০.৪%; পুরুষ ৫৩.৭%, মহিলা ৪৭.৬%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৪, কিন্ডার গার্টেন ১২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১১, মাদ্রাসা ১৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বাসাইল এমদাদ হামিদা ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৫), কাউলজানী কলেজ, কাউলজানী নওশেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬), আইসড়া উচ্চ বিদ্যালয়, বাসাইল গোবিন্দ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৫), কে বি এন বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৮), কাঞ্চনপুর এলাহিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৪১)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৪০, লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ২, খেলার মাঠ ৩০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৬.৮৩%, অকৃষি শ্রমিক ২.৭১%, শিল্প ১.৩৫%, ব্যবসা ১১.১৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৫৪%, চাকরি ৮.২১%, নির্মাণ ০.৮০%, ধর্মীয় সেবা ০.১৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৬.৯৯% এবং অন্যান্য ১০.২৯%।

কৃষিভিূমির মালিকানা  ভূমিমালিক ৬৪.৯২%, ভূমিহীন ৩৫.০৮%। শহরে ৪৬.৪৩% এবং গ্রামে ৬৬.৫৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, সরিষা, আখ, আলু, গম, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি বিভিন্ন ধরনের ডাল, মিষ্টি আলু।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৫, গবাদিপশু ৮২, হাঁস-মুরগি ৭১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭১.৭ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ০.৭৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩২৯.১৮ কিমি; রেলপথ ৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন ঘোড়া ও গরুর গাড়ি, ডুলি।

শিল্প ও কলকারখানা বেকারি, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি, রাইসমিল, সাবান কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা বাসাইল হাট, সুন্না হাট, ময়থা হাট, কাউলজানী হাট, আইসড়া হাট, সৈদামপুর বাজার, ফুলকি বাজার, খাটরা শান্তি বাজার এবং ফাইলা পাগলার মেলা ও নববছ পাগলার মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পাট, আখের গুড়, আলু।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৭০.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৮.৬%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ১.২%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮৬.৪% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১১.৩% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৯৬ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, গাছপালা ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও প্রশিকা, ব্র্যাক, সিডো।  [নুরুর রহমান সেলিম]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাসাইল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।