বারী, এস.এ
বারী, এস.এ (১৯২৭-১৯৮৭) রাজনীতিক। জন্ম ১৯২৭ সালে দিনাজপুরে। পিতা মোহাম্মদ তাইমুর ছিলেন বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, ফার্সি ও আরবি সাহিত্যে সুপন্ডিত। এস.এ বারী ছাত্র জীবনেই রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি ১৯৪১ সাল থেকে সকল প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৪২ সালে তিনি ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫১ সালে তিনি সিভিল লিবার্টি লীগের সদস্য হন। তিনি ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন এবং ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। প্রায় ১ বছর কারাবাসের পর আবার ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৫৩-৫৪ শিক্ষাবর্ষে তিনি ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৫৫ সালে ৯২-ক ধারা জারির প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুনরায় গ্রেপ্তার হন। এ সময় তিনি কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় ছাত্র সম্মেলনের আহবায়ক এবং আন্তর্জাতিক ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। ১৯৫১ সালে গঠিত যুবলীগের তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য।
এস.এ বারী ১৯৬১ সালে দিনাজপুর বারের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি বার কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি দিনাজপুর আইন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৬২ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে তাঁর অগ্রণী ভূমিকা ছিল। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের তিনি অন্যতম সংগঠক। এ সময় তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মুজিববাহিনীর ডালিমগা ক্যাম্পের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ভারতীয় শরণার্থী শিবিরে ত্রাণকার্যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পর এস.এ বারী ন্যাপের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন এবং ১৯৭৭ সালে দলের সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং জনশক্তি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালের ৩ মার্চ তাঁর মৃত্যু হয়। [আবু মো. দেলোয়ার হোসেন]