বানিয়াচং উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''বানিয়াচং উপজেলা''' ([[হবিগঞ্জ জেলা|হবিগঞ্জ জেলা]])  আয়তন: ৪৮২.২৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২১´ থেকে ২৪°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৩´ থেকে ৯১°৩০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দিরাই, সাল্লা ও আজমিরিগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে হবিগঞ্জ সদর ও লাখাই উপজেলা, পূর্বে হবিগঞ্জ সদর ও নবীগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে আজমিরিগঞ্জ, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা। বানিয়াচং গ্রাম এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম গ্রাম হিসেবে পরিচিত।।
'''বানিয়াচং উপজেলা''' ([[হবিগঞ্জ জেলা|হবিগঞ্জ জেলা]])  আয়তন: ৪৮২.২৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২১´ থেকে ২৪°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৩´ থেকে ৯১°৩০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দিরাই, সাল্লা ও আজমিরিগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে হবিগঞ্জ সদর ও লাখাই উপজেলা, পূর্বে হবিগঞ্জ সদর ও নবীগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে আজমিরিগঞ্জ, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা। বানিয়াচং গ্রাম এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম গ্রাম হিসেবে পরিচিত।।


''জনসংখ্যা'' ২৬৮৬৯১; পুরুষ ১৩৭৯১২, মহিলা ১৩০৭৭৯। মুসলিম ২১৫৪০১, হিন্দু ৫২৭৯৯, বৌদ্ধ ১৮৭ এবং অন্যান্য ৩০৪।
''জনসংখ্যা'' ৩৩২৫৩০; পুরুষ ১৬৩৮৭৫, মহিলা ১৬৮৬৫৫। মুসলিম ২৭২৬৭২, হিন্দু ৫৯৩৪৩, খ্রিস্টান ১৮, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ৪৮৯।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: কালনী। চোরগাঁও বিল, চাকুয়া বিল, সোনামুয়া বিল, বাটা বিল, আন্দুরা বিল, ধলা বিল, বাউড়াবান্দা বিল, কান্দাইয়াল বিল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: কালনী। চোরগাঁও বিল, চাকুয়া বিল, সোনামুয়া বিল, বাটা বিল, আন্দুরা বিল, ধলা বিল, বাউড়াবান্দা বিল, কান্দাইয়াল বিল উল্লেখযোগ্য।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ১৫ || ২৩৭ || ৩৩৭  || ২২৯৭৩  || ২৪৫৭১৮  || ৫৫৭  || ৩৭.২৬  || ৩১.০০
| - || ১৫ || ২৩৭ || ৩৫৯ || ২৮৫০৬ || ৩০৪০২৪ || ৬৯০ || ৪৪.|| ৩৩.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| .০৬  || ৭  || ২২৯৭৩  || ৭৫০৮  || ৩৯.৩০
| ১৩.২৯ || || ২৮৫০৬ || ২১৪৫ || ৪৪.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৪ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| উত্তর পশ্চিম বানিয়াচং ১২ || ৪৬৯৭  || ৮৯৫৫ || ৮৫৬২  || ৩৮.৬৩
| উত্তর-পশ্চিম বানিয়াচং ১২ || ৫১৯৩ || ১১৮৭৮ || ১২৬৬৮ || ৪০.
|-
|-
| উত্তর পূর্ব বানিয়াচং ০৬ || ৬৩১১  || ১০৩০৫ || ৯৭৮৫  || ৩৭.৮৩
| উত্তর-পূর্ব বানিয়াচং ০৬ || ৮৪৬৩ || ৬৬৬৯ || ৬৫৩৪ || ৪০.
|-
|-
| সুবিদপুর ৯৪ || ৮০৪৭  || ৬৫৬৭ || ৬২৮২  || ২৯.৩৬
| সুবিদপুর ৯৪ || ৮৫৯৩ || ৭৭১৩ || ৭৮১৬ || ৪০.
|-
|-
| কাগাপাশা ৪৪ || ১৬৫৭২  || ১০৬৪২ || ১০১১৯  || ৩২.১৭
| কাগাপাশা ৪৪ || ১৭৮২৮ || ১২৮১৮ || ১২৯৮২ || ২৭.
|-
|-
| খাগাউড়া ৫০ || ৭০২৬  || ১০৮০০ || ১০১৮৯  || ২৬.৭১
| খাগাউড়া ৫০ || ৭০২৭ || ১১৯৪৮ || ১২৪৪৩ || ৩৩.
|-
|-
| দক্ষিণ পশ্চিম বানিয়াচং ২৫ || ৪৭৯৫  || ৯০৪৭ || ৮৭০৭  || ২৮.৭২
| দক্ষিণ-পশ্চিম বানিয়াচং ২৫ || ৬০৪৯ || ১১৭৮৭ || ১২৬৭৭ || ৩৫.
|-
|-
| দক্ষিণ পূর্ব বানিয়াচং ১৮ || ৪৯৫৮  || ৯৩৬৩ || ৯০০৩  || ২৩.৫২
| দক্ষিণ-পূর্ব বানিয়াচং ১৮ || ৪০০৭ || ১৩০৯৯ || ১৪০৯৮ || ৩৪.
|-
|-
| দৌলতপুর ৩৭ || ৬৮১৬ || ১২১৯০ || ১১৬৪৬  || ৪২.৭৭
| দৌলতপুর ৩৭ || ৬৮১৬ || ১৪৯৭৬ || ১৫২২৮ || ৪৩.
|-
|-
| পুখড়া ৮২ || ১০০৬১  || ১০৩২০ || ৯৭৬৯  || ৩৯.৫৩
| পুখড়া ৮২ || ১০৪৭৫ || ১২৪৪২ || ১২৫৩০ || ৪০.
|-
|-
| পাইলারকান্দি ৭৫ || ৫৭৭৮ || ৮১৫৯ || ৭৬৮৬  || ৩২.০৫
| পাইলারকান্দি ৭৫ || ৫৭৭৮ || ৮৯২৩ || ৮৮৩১ || ২৭.
|-
|-
| বাড়ৈউড়ি ৩১ || ৭৫২০  || ৮৪৯৫ || ৮২০৫  || ৩০.৯২
| বাড়ৈউড়ি ৩১ || ৮১৩৮ || ৯৪৪৬ || ১০১৪৬ || ৩২.
|-
|-
| মকরমপুর ৫৬ || ৮৪৩১  || ১০৫৭৪ || ৯৮৫৭  || ১৯.৯২
| মকরমপুর ৫৬ || ৮৪৩৩ || ১১৯৫৮ || ১২৪৫২ || ২৮.
|-
|-
| মান্দারি ৬৩ || ৮১৮৯  || ৮১৮৩ || ৭৫৬৬  || ২০.২৩
| মান্দারি ৬৩ || ৮৯১৯ || ৯৫১১ || ৯২৬৭ || ২৮.
|-
|-
| মুরাদপুর ৬৯ || ৬০১৬  || ৬২০৫ || ৫৮৫৬  || ২৬.১২
| মুরাদপুর ৬৯ || ৬০১৭ || ৭০৭৫ || ৭১৬১ || ২০.
|-
|-
| সুজাতপুর ৮৮ || ৯৯১৫  || ৭৮০৭ || ৭৫৪৭  || ৩৮.৫০
| সুজাতপুর ৮৮ || ৮৭২৬ || ৯২৫৮ || ৯২০৯ || ৩৬.
|}
|}


''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:BanichangUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:BanichangUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' প্রাচীন রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ (পুরানবাগ, ১৭৩৭-৩৮), বিবির দরগাহ্ মসজিদ, বিখঙ্গল আখড়া ইত্যাদি।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' প্রাচীন রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ (পুরানবাগ, ১৭৩৭-৩৮), বিবির দরগাহ্ মসজিদ, বিখঙ্গল আখড়া ইত্যাদি।


''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি''  সপ্তদশ শতকের প্রথম দশকে বানিয়াচং-এ বারো ভূঁইয়া আনোয়ার খাঁ ও তাঁর ভ্রাতা হুসেন খাঁর সাথে মুগলবাহিনীর যুদ্ধের বর্ণনা বাহারিস্তান-ই-গায়েবীতে পাওয়া যায়। বানিয়াচং ছিল সিলেটের প্রতাপশালী জমিদার আনোয়ার খানের রাজধানী। তিনি বারভূঁইয়াদের সাথে সম্মিলিত ভাবে মুগলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।
''ঐতিহাসিক ঘটনা'' সপ্তদশ শতকের প্রথম দশকে বানিয়াচং-এ বারো ভূঁইয়া আনোয়ার খাঁ ও তাঁর ভ্রাতা হুসেন খাঁর সাথে মুগলবাহিনীর যুদ্ধের বর্ণনা বাহারিস্তান-ই-গায়েবীতে পাওয়া যায়। বানিয়াচং ছিল সিলেটের প্রতাপশালী জমিদার আনোয়ার খানের রাজধানী। তিনি বারভূঁইয়াদের সাথে সম্মিলিত ভাবে মুগলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ১ (মাকালকান্দি)।
''মুক্তিযুদ্ধ'' বানিয়াচং উপজেলার ভৌগলিক অবস্থান এমন যে পাকসেনারা এখানে এসে স্থায়ী কোনো ক্যাম্প গঠন বিপদজনক বিবেচনা করত। তবে তারা মাঝে মাঝে এসে গণহত্যা, নিপীড়ন, বাড়িঘরে লুঠতরাজ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটাত। মুক্তিযোদ্ধারা হঠাৎ হঠাৎ তাদের হামলা ও তাদের সঙ্গে রাজাকারদের অপকর্ম ঠেকাতে সদা প্রস্তুত ছিল। অক্টোবর মাসে মুক্তিযোদ্ধারা বানিয়াচং থানা দখল করে।
 
''বিস্তারিত দেখুন''  বানিয়াচঙ্গ উপজেলা,  ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৬।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ২৩০, মন্দির ৭০, মাযার ৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: পুরান কালিকা মসজিদ, পুরানবাগ মসজিদ, বিবির দরগাহ্ মসজিদ, শ্যাম বাউলের আখড়া।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ২৩০, মন্দির ৭০, মাযার ৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: পুরান কালিকা মসজিদ, পুরানবাগ মসজিদ, বিবির দরগাহ্ মসজিদ, শ্যাম বাউলের আখড়া।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩১.৫৪%; পুরুষ ৩৪.১১%, মহিলা ২৮.৮৭%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫১, কিন্ডার গার্টেন ২, মাদ্রাসা ২৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৬), নাগুরা ফার্ম উচ্চ বিদ্যালয়, বানিয়াচং সিনিয়র মাদ্রাসা।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৪.%; পুরুষ ৩৫.%, মহিলা ৩৪.%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫১, কিন্ডার গার্টেন ২, মাদ্রাসা ২৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৬), নাগুরা ফার্ম উচ্চ বিদ্যালয়, বানিয়াচং সিনিয়র মাদ্রাসা।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২৬, নাট্যদল ১, কমিউনিটি সেন্টার ২, সংগীত একাডেমি ১, সাহিত্য সংগঠন ২৬, মহিলা সংগঠন ৫, খেলার মাঠ ৪।
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২৬, নাট্যদল ১, কমিউনিটি সেন্টার ২, সংগীত একাডেমি ১, সাহিত্য সংগঠন ২৬, মহিলা সংগঠন ৫, খেলার মাঠ ৪।
৯৪ নং লাইন: ৯৬ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ২৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১২ কিমি, কাঁচারাস্তা ২১৮ কিমি; নৌপথ ২৫০ নটিক্যাল মাইল।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৭২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৪৯ কিমি; নৌপথ ৫০ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি, সোয়ারী, চাঙ্গারী।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি, সোয়ারী, চাঙ্গারী।
১০৬ নং লাইন: ১০৮ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, মাছ।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, মাছ।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১১.১২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৩.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৮২.৮৭%, পুকুর ১০.১২%, ট্যাপ ০.৭৩% এবং অন্যান্য ৬.২৮%।
''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৮৭.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য ১২.৬%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ২২.৬৯% (গ্রামে ২১.২৪% ও শহরে ৩৮.৬২%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭০.৮৩% (গ্রামে ৭২.২৭% ও শহরে ৫৫.০৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর     ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .৪৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ৩৮.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৬.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৫, পরিরবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, কমিউনিটি ক্লিনিক ২, প্রাইভেট ক্লিনিক ৩, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, মাতৃসদন ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ২, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ৫, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ২, পশু চিকিৎসালয় ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৫, পরিরবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, কমিউনিটি ক্লিনিক ২, প্রাইভেট ক্লিনিক ৩, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, মাতৃসদন ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ২, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ৫, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ২, পশু চিকিৎসালয় ১।
১১৬ নং লাইন: ১১৮ নং লাইন:
''এনজিও''  কেয়ার, ব্র্যাক, কারিতাস, আশা।  [জয়ন্ত সিংহ রায়]
''এনজিও''  কেয়ার, ব্র্যাক, কারিতাস, আশা।  [জয়ন্ত সিংহ রায়]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বানিয়াচং উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বানিয়াচং উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।
 
[[en:Baniachang Upazila]]
 
[[en:Baniachang Upazila]]
 
[[en:Baniachang Upazila]]
 
[[en:Baniachang Upazila]]


[[en:Baniachang Upazila]]
[[en:Baniachang Upazila]]

১৯:১৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বানিয়াচং উপজেলা (হবিগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ৪৮২.২৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২১´ থেকে ২৪°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৩´ থেকে ৯১°৩০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দিরাই, সাল্লা ও আজমিরিগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে হবিগঞ্জ সদর ও লাখাই উপজেলা, পূর্বে হবিগঞ্জ সদর ও নবীগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে আজমিরিগঞ্জ, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা। বানিয়াচং গ্রাম এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম গ্রাম হিসেবে পরিচিত।।

জনসংখ্যা ৩৩২৫৩০; পুরুষ ১৬৩৮৭৫, মহিলা ১৬৮৬৫৫। মুসলিম ২৭২৬৭২, হিন্দু ৫৯৩৪৩, খ্রিস্টান ১৮, বৌদ্ধ ৮ এবং অন্যান্য ৪৮৯।

জলাশয় প্রধান নদী: কালনী। চোরগাঁও বিল, চাকুয়া বিল, সোনামুয়া বিল, বাটা বিল, আন্দুরা বিল, ধলা বিল, বাউড়াবান্দা বিল, কান্দাইয়াল বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৭৯০ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৫ ২৩৭ ৩৫৯ ২৮৫০৬ ৩০৪০২৪ ৬৯০ ৪৪.৭ ৩৩.৭
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৩.২৯ ২৮৫০৬ ২১৪৫ ৪৪.৭
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
উত্তর-পশ্চিম বানিয়াচং ১২ ৫১৯৩ ১১৮৭৮ ১২৬৬৮ ৪০.১
উত্তর-পূর্ব বানিয়াচং ০৬ ৮৪৬৩ ৬৬৬৯ ৬৫৩৪ ৪০.৭
সুবিদপুর ৯৪ ৮৫৯৩ ৭৭১৩ ৭৮১৬ ৪০.৯
কাগাপাশা ৪৪ ১৭৮২৮ ১২৮১৮ ১২৯৮২ ২৭.৩
খাগাউড়া ৫০ ৭০২৭ ১১৯৪৮ ১২৪৪৩ ৩৩.৭
দক্ষিণ-পশ্চিম বানিয়াচং ২৫ ৬০৪৯ ১১৭৮৭ ১২৬৭৭ ৩৫.৯
দক্ষিণ-পূর্ব বানিয়াচং ১৮ ৪০০৭ ১৩০৯৯ ১৪০৯৮ ৩৪.২
দৌলতপুর ৩৭ ৬৮১৬ ১৪৯৭৬ ১৫২২৮ ৪৩.৫
পুখড়া ৮২ ১০৪৭৫ ১২৪৪২ ১২৫৩০ ৪০.৫
পাইলারকান্দি ৭৫ ৫৭৭৮ ৮৯২৩ ৮৮৩১ ২৭.৯
বাড়ৈউড়ি ৩১ ৮১৩৮ ৯৪৪৬ ১০১৪৬ ৩২.১
মকরমপুর ৫৬ ৮৪৩৩ ১১৯৫৮ ১২৪৫২ ২৮.৩
মান্দারি ৬৩ ৮৯১৯ ৯৫১১ ৯২৬৭ ২৮.৬
মুরাদপুর ৬৯ ৬০১৭ ৭০৭৫ ৭১৬১ ২০.২
সুজাতপুর ৮৮ ৮৭২৬ ৯২৫৮ ৯২০৯ ৩৬.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ প্রাচীন রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ (পুরানবাগ, ১৭৩৭-৩৮), বিবির দরগাহ্ মসজিদ, বিখঙ্গল আখড়া ইত্যাদি।

ঐতিহাসিক ঘটনা সপ্তদশ শতকের প্রথম দশকে বানিয়াচং-এ বারো ভূঁইয়া আনোয়ার খাঁ ও তাঁর ভ্রাতা হুসেন খাঁর সাথে মুগলবাহিনীর যুদ্ধের বর্ণনা বাহারিস্তান-ই-গায়েবীতে পাওয়া যায়। বানিয়াচং ছিল সিলেটের প্রতাপশালী জমিদার আনোয়ার খানের রাজধানী। তিনি বারভূঁইয়াদের সাথে সম্মিলিত ভাবে মুগলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ বানিয়াচং উপজেলার ভৌগলিক অবস্থান এমন যে পাকসেনারা এখানে এসে স্থায়ী কোনো ক্যাম্প গঠন বিপদজনক বিবেচনা করত। তবে তারা মাঝে মাঝে এসে গণহত্যা, নিপীড়ন, বাড়িঘরে লুঠতরাজ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটাত। মুক্তিযোদ্ধারা হঠাৎ হঠাৎ তাদের হামলা ও তাদের সঙ্গে রাজাকারদের অপকর্ম ঠেকাতে সদা প্রস্তুত ছিল। অক্টোবর মাসে মুক্তিযোদ্ধারা বানিয়াচং থানা দখল করে।

বিস্তারিত দেখুন বানিয়াচঙ্গ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৬।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৩০, মন্দির ৭০, মাযার ৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: পুরান কালিকা মসজিদ, পুরানবাগ মসজিদ, বিবির দরগাহ্ মসজিদ, শ্যাম বাউলের আখড়া।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৪.৭%; পুরুষ ৩৫.২%, মহিলা ৩৪.১%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫১, কিন্ডার গার্টেন ২, মাদ্রাসা ২৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৬), নাগুরা ফার্ম উচ্চ বিদ্যালয়, বানিয়াচং সিনিয়র মাদ্রাসা।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২৬, নাট্যদল ১, কমিউনিটি সেন্টার ২, সংগীত একাডেমি ১, সাহিত্য সংগঠন ২৬, মহিলা সংগঠন ৫, খেলার মাঠ ৪।

দর্শনীয় স্থান বানিয়াচং রাজবাড়ি, সাগরদিঘি।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৫.০১%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৮৯%, ব্যবসা ৫.৮৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৮৪%, চাকরি ২.১৯%, নির্মাণ ১.৮০%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৫০% এবং অন্যান্য ৮.৫০%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৬.৮৩%, ভূমিহীন ৪৩.১৭%। শহরে ৩৬.১৯% এবং গ্রামে ৫৮.৭১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান ফসলাদি  ধান, গম, কচু।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ এবং কাটারী ধান।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৪৯ কিমি; নৌপথ ৫০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি, সোয়ারী, চাঙ্গারী।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠের কাজ।

খনিজ সম্পদ  প্রাকৃতিক গ্যাস।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৬, মেলা ৩। বড় বাজার, গ্যানিংগঞ্জ বাজার, সুজাতপুর বাজার, বিথঙ্গল বাজার এবং কালীবাড়ি মেলা ও শ্যাম বাউলের মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, মাছ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৩.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৭.২%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ১২.৬%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৮.৪% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৬.৯% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪.৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৫, পরিরবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, কমিউনিটি ক্লিনিক ২, প্রাইভেট ক্লিনিক ৩, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, মাতৃসদন ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ২, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ৫, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ২, পশু চিকিৎসালয় ১।

এনজিও কেয়ার, ব্র্যাক, কারিতাস, আশা।  [জয়ন্ত সিংহ রায়]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বানিয়াচং উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।