বাঘাইছড়ি উপজেলা

বাঘাইছড়ি উপজেলা (রাঙ্গামাটি জেলা)  আয়তন: ১৯৩১.২৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০৪´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০৫´ থেকে ৯২°২৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ত্রিপুরা এবং ভারতের মিজোরাম রাজ্য, দক্ষিণে লংগদু ও বরকল উপজেলা, পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য, পশ্চিমে দীঘিনালা উপজেলা।

জনসংখ্যা ৯৬৮৯৯; পুরুষ ৫০৫৯৫, মহিলা ৪৬৩০৪। মুসলিম ২২০০৮, হিন্দু ৬১৪০, বৌদ্ধ ৬৭৭৯৬, খ্রিস্টান ৮৫৮ এবং অন্যান্য ৯৭।

জলাশয় প্রধান নদী: কাসালং। কাপ্তাই লেক উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন বাঘাইছড়ি থানা গঠিত হয় ১৯৬৫ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৯ ৩০৩ ১৯৮৭৫ ৭৭০২৪ ৫০ ৪৫.৩৭ (২০০১) ৩৯.১
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিার হার (%)
- ৩৫ ১৩৮০৭ - ৫৭.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৩.৩১ (২০০১) ৬০৬৮ ৬১৪ (২০০১) ৪১.১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আমতলী ১০ ৩০০০ ২৪৬২ ২৩৪৯ ৫২.৯
কেদারমারা ৪৭ ৬৫৩০ ৪৯৮১ ৪৮৩২ ৪৭.৭
বাঘাইছড়ি ১১ ১১০৪৪ ৫৩৩৬ ৪৯৮২ ৪৫.৪
বাঙ্গালতলী ২৩ ৫৩৭৬ ৫৬৩৬ ৫২৭১ ৪০.১
মারিশ্যা ৫৯ ২৮৫৮ ২৪১৮ ২৩৫৬ ৪২.১
রূপকারি ৭১ ৩৩১৭ ২৪৪০ ২২৬৬ ৪৭.২
সরবোয়াতলী ৩৫ ৩৩০৪ ৫২৫৬ ৪৯৩৯ ৪২.৭
সাজেক ৮৩ ৪৩৭৭৬০ ১৪৭৬২ ১২৮০৬ ২৭.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের মার্চ মাসেই বাঘাইছড়িতে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়। পাকবাহিনী মে মাসের মাঝামাঝি দীঘিনালা হয়ে বাঘাইছড়িতে প্রবেশ করে। ২২ নভেম্বর কাচালং নদীর পশ্চিম তীরে দুরছড়ি বাজারে পাকবাহিনী ও তাদের দোসর মিজো বাহিনীর সঙ্গে মিত্রবাহিনীর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে পাকবাহিনী ও মিজোবাহিনী পরাজিত হয়।

বিস্তারিত দেখুন বাঘাইছড়ি উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৬।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৬, মন্দির ৭, গির্জা ১০, প্যাগোডা ১৫, বৌদ্ধ বিহার ৮৪, পালি টোল ৩, গীর্জা ১০। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: আর্য্যাপুর বৌদ্ধ বিহার।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪১.৯%; পুরুষ ৪৯.১%, মহিলা ৩৩.৯%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩২৭, কিন্ডার গার্টেন ১, মাদ্রাসা ৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কাসালং ডিগ্রি কলেজ, সাজেক কলেজ, কাসালং উচ্চ বিদ্যালয়, বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, উলুছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান  লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২৪, সিনেমা হল ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৪.১৯%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৮২%, ব্যবসা ৬.৬৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৩৮%, চাকরি ৫.৬৬%, নির্মাণ ২.৭৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৮% এবং অন্যান্য ৪.২৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৫.১২%, ভূমিহীন ৩৪.৮৮%। শহরে ৫৪.৩১% এবং গ্রামে ৬৭.৬১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, তুলা, আদা, হলুদ, মরিচ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি গম, সরিষা।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, জাম, পেয়ারা, আনারস, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩০ কিমি, কাঁচারাস্তা ২০০ কিমি; নৌপথ ৪০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রাবার কারখানা, বরফকল, চালকল।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৮। উপজেলা সদর বাজার, দুধছড়ি বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কলা, পেঁপে, আদা, হলুদ, কাঁঠাল, বাঁশ ও বেত।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসুচির আওতাধীন। তবে ২৮.৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৩৭.২%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ৬২.৫%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৩.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭২.৪%পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪, ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, ক্লিনিক ৪, মাতৃমঙ্গল ১।

এনজিও গ্রীনহীল, বাংলা জার্মান সম্প্রীতি।  [রিন্টু তালুকদার]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাঘাইছড়ি উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।