বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট  ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বা আহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসমূহের কল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচির বাস্তবায়নে বিধিবদ্ধ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি কল্যাণধর্মী প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালে সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপতির একটি অধ্যাদেশবলে (রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ নম্বর ৯৪, ১৯৭২) এ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়। শহীদ ও আহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসমূহের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমে অর্থায়নের লক্ষ্যে সরকার ১৯টি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানা ট্রাস্টের নিকট হস্তান্তর করে। বর্তমানে ট্রাস্ট পরিচালিত বিভিন্ন উপার্জনমুখী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠান (তাবানী বেভারেজ কোম্পানি, মিমি চকলেট লি, ইস্টার্ন কেমিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ লি, মালটিপল জুস কনসেনট্রেট প্লান্ট ও মডেল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস); ৪টি সিনেমা হল (গুলিস্তান, নাজ, মুন ও দেলোয়ার পিকচার্স); একটি ছায়াছবি নির্মাণ ও পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান (গুলিস্তান ফিল্ম কর্পোরেশন, ঢাকা); একটি বিজ্ঞাপন প্রচারণা প্রতিষ্ঠান (দুর্বার অ্যাডভার্টাইজিং অ্যান্ড পাবলিকেশনস) এবং একটি জ্বালানি তৈল ক্রয়-বিক্রয় ও যানবাহন মেরামত প্রতিষ্ঠান (পূর্ণিমা ফিলিং অ্যান্ড সার্ভিস স্টেশন)। এসব প্রতিষ্ঠানের আয় ছাড়াও ট্রাস্ট সরকারি কোষাগার থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে। এভাবে গঠিত তহবিল ট্রাস্টের তালিকাভুক্ত প্রায় ছয় হাজার অসচ্ছল শহীদ ও আহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য কল্যাণমূলক বিভিন্ন কর্মসূচির বাস্তবায়নে ব্যয় হয়।

ট্রাস্ট পরিচালিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হচ্ছে এসব পরিবারকে মাসিক রাষ্ট্রীয় ভাতা প্রদান। এ খাতে সরকার ট্রাস্টকে ১৬ কোটি টাকারও অধিক বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ দিয়ে থাকে। ট্রাস্ট তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসমূহকে চিকিৎসা সেবা, তাদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি এবং কন্যাদের বিবাহ অনুষ্ঠানের জন্য অনুদান প্রদান করে থাকে। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের বিনোদনের জন্যও বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। অধিকন্তু, জাতীয় দিবসসমূহ পালন উপলক্ষে ট্রাস্ট মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করে। ট্রাস্টের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ঢাকার মতিঝিলের স্বাধীনতা ভবনে অবস্থিত প্রধান কার্যালয় থেকে। ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান কার্যালয়ে মোট লোকবল ২০৭। সরকার প্রধানের সভাপতিত্বে ১১ সদস্যের একটি ট্রাস্টি বোর্ড নীতি-নির্ধারণী বিষয়সমূহ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।  [এম সাইফুল্লাহ]