বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমী
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমী (বিএমএ) ১৯৭৪ সালের ১১ জানুয়ারি কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে একটি সুশৃঙ্খল ও সুগঠিত সেনাবাহিনীর জন্য বলিষ্ঠ নেতৃত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা হয়। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর অগ্নিগর্ভ কবিতার চরণ ‘চির উন্নত মম শির’ বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীর আদর্শ। ১৯৭৬ সালের মার্চ মাসে এটি একাডেমীর বর্তমান স্থান চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীতে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৭৮ সালে নিয়মিত কোর্স চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীর নতুন অধ্যায়ের সূচনা। ১৯৭৯ সালে প্রথম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের সময় একাডেমীকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডস বা সম্মানসূচক জাতীয় পতাকা প্রদান করা হয়। ১৯৮৩ সাল থেকে নিয়মিত কোর্সের সঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনীর জেন্টলম্যান ক্যাডেটদের প্রাথমিক সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু হয়।
কর্মদক্ষ সেনা অফিসার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিটি কোর্সের জন্য বিশেষভাবে বাছাইকৃত ক্যাডেটদের একই সঙ্গে চারিত্রিক, সামরিক ও একাডেমিক - এই ত্রিমুখী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দুবছর মেয়াদি নিয়মিত কোর্সের ক্যাডেটদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক পরীক্ষার জন্য প্রস্ত্তত করা হয়। কমিশন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ক্যাডেটরা বি.এ, বি.এসসি ডিগ্রি লাভ করে।
সার্বিক জাতীয় প্রতিরক্ষায় বেসামরিক অফিসারদের সক্রিয় ভূমিকা রাখা এবং সামরিক ও বেসামরিক সম্পর্ক সুসংহত করার লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে ‘সিভিল সার্ভিস অফিসার ওরিয়েন্টেশন কোর্স’ প্রবর্তন করা হয়। এছাড়া সেনাবাহিনীর বাছাই করা তরুণ অফিসারদের ‘পটেনশিয়াল প্লাটুন কমান্ডার’ কোর্স পরিচালিত হচ্ছে। জাতীয় সামরিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানরূপে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ এবং সার্বিক উন্নয়নের আরও অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে। [সাদাত উল্লাহ খান]