বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ একটি গণসংগঠন। সাবেক পাকিস্তানে সৃষ্ট মহিলা সংগ্রাম পরিষদ এর পরবর্তী রূপ। আইন, সংবিধান ও বাস্তব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমঅধিকার সংরক্ষণ, নারীর ক্ষমতায়ন ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠাসহ একটি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, বৈষম্যহীন পরিবার ও সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এর সূচনা। উপমহাদেশের নারীমুক্তি আন্দোলনের পথিকৃত বেগম রোকেয়ার উত্তরসুরী কবি বেগম সুফিয়া কামালের উদ্যোগে ১৯৭০ সালের ৮ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয় পূর্বপাকিস্তান মহিলা পরিষদ। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় পাকিস্তানে সৃষ্ট মহিলা সংগ্রাম পরিষদ আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে রূপান্তরিত হয় ‘পূর্বপাকিস্তান মহিলা পরিষদ’-এ। এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকলীন সকল সদস্য সংগঠক হিসেবে কাজ করেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে ঢাকা শহরে অবরুদ্ধ বাঙালি নারীদের ওপর পাকিস্তানী সেনা ও অফিসারদের পাশবিক নির্যাতনের বিভিন্ন আলোকচিত্র ও বিবরণের নিদর্শন হিসাবে To the Conscience of People নামে মহিলা পরিষদ একটি গ্রন্থ প্রকাশ করে। তদানুসরে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ সংগঠনের পরিবর্তিত নাম হয় ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ’।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কর্মধারা পরিচালনার মূলনীতি হচ্ছে নারী সমাজের উন্নয়ন, মুক্তি ও দেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আন্দোলনের সাথে একাত্মতা। এই সংগঠনের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হচ্ছে: নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠা, নীতি নির্ধারণে নারীর সমতা ও উন্নয়নের নিশ্চয়তা বিধানে মধ্যস্থতা করা এবং লবিং ও এ্যাডভোকেসি এজেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে বহুমাত্রিক কর্মসূচি রয়েছে। এই কর্মসূচি ১২টি ইউনিটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই ইউনিটগুলি হচ্ছে: সংগঠন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও আইনি সহযোগিতা, নারী পুনর্বাসন কেন্দ্র, রোকেয়া সদন, আন্দোলন, গবেষণা-প্রশিক্ষণ ও লাইব্রেরি, প্রকাশনা, গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ, সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প এবং নেটওয়ার্কিং।
আইনি অস্তিত্বের জন্য সংগঠনটি ১৯৭৬ সালে সোসাইটি অ্যাক্ট ১৮৬০-ডা-০৮৬২(১৯৭৬) ও ১৯৯২ সালে এনজিও ব্যুরোর অধীনে নিবন্ধিত হয়। ১৯৯৭ সালে সংগঠনটি Economic and Social Council of United Nations (ECOSOC) সদস্যপদ লাভ করে এবং ২০০০ সালে কঙ্গোর সদস্য হয়।
সংগঠনের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের ওপর আস্থা এবং নারীমুক্তির প্রতি বিশ্বাস থাকলে অবস্থান, পেশা, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে দেশের যে কোনো নারী ২০০ টাকা চাঁদার বিনিময়ে পরিষদের সদস্য হতে পারে। সাধারণ সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রাথমিক শাখা কমিটি, থানা কমিটি, জেলা কমিটি, জাতীয় সম্মেলন কমিটি ও জাতীয় পরিষদ কমিটি গঠন করেন। এটি দেশের একটি বৃহৎ নারী সংগঠন। ঢাকা মহানগরীতে এর রয়েছে ২১টি প্রাথমিক শাখা কমিটি। প্রত্যেক কমিটি বর্তমানে সক্রিয় আছে। ৬০টি জেলার ৩১৪টি থানায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ১,৩৪,০০০ রেজিস্টার্ড মহিলা সদস্য রয়েছেন। ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ও বিভিন্ন সাব-কমিটি সংগঠনের ম্যান্ডেট অনুসারে পরিষদের কর্মসূচি পরিচালনা করে।
১৯৭২ সালে এই সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে উত্তরাধিকার আইন সংস্কার, সংসদে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা এবং অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বালিকাদের জন্য অবৈতনিক আনুষ্ঠানিক শিক্ষা চালু করার দাবি জানায়। পরবর্তীকালে তারা সংসদে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বাড়ানো ও নির্বাচিত নারী সাংসদদের দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে সরকারি পর্যায়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।
১৯৭৬-৭৭ সালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দেশব্যাপী যৌতুকের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চালায় এবং সংগৃহীত স্বাক্ষরসহ সরকারের কাছে যৌতুক বিরোধী একটি স্মারকলিপি পেশ করে। সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত থাকায় ১৯৮০ সালের ২৬ ডিসেম্বর যৌতুক বিরোধী আইন প্রণীত হয়। এছাড়া বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে বিশেষ জোরদার আন্দোলনের ফলে এবং এই আন্দোলনের প্রতি ঐক্যবদ্ধ নারী সমাজের সক্রিয় সমর্থন ও ভূমিকা থাকায় ১৯৮৩ সালে ‘নারী নির্যাতন নিবর্তন প্রতিরোধ’ অধ্যাদেশ এবং ১৯৮৫ সালে ‘পারিবারিক আদালত’ অধ্যাদেশ জাতীয় সংসদে পাশ হয়। তাছাড়া বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ Women and Child Repression Act, 2000-এর খসড়া তৈরি ও সংসদে তা পাশ করানোর ব্যাপারে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। আইনি পরামর্শ ও আইনি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পরিষদ দেশের বরেণ্য আইনজীবী, বিচারকসহ অন্যান্য বিশিষ্ট নাগরিক ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং প্রশাসনের সাথে প্রয়োজন মাফিক যোগাযোগ রাখে ও আলাপ-আলোচনা, সংলাপ চালায়।
১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নির্যাতিতা নারীদের পুনর্বাসনের জন্য সহযোগিতামূলক কর্মসূচি হিসাবে ‘রোকেয়াসদন’ নামে একটি অস্থায়ী আশ্রয় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। এতে পারিবারিক, রাষ্ট্রীয় সহিংসতার শিকার ও বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া নির্যাতিত ও দুর্দশাগ্রস্ত উদ্ধারকৃত আশ্রয়হীন নারীদের আশ্রয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। রোকেয়া সদনে আশ্রয় লাভকারী নারীদের চিকিৎসা, ওষুধপত্র, পুষ্টি, পরামর্শ ও আইনি সহায়তা দেওয়া হয়। তাঁদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন ধরনের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রশিক্ষণের ফলে তাদের দক্ষতা বাড়ে ও কাজের প্রতি আগ্রহ জন্মে। এই প্রশিক্ষণের আওতায় রয়েছে কুটির শিল্প, সেলাই শিক্ষা, চামড়ার কাজ, বাটিক ও বুটিক। মহিলা পরিষদ বয়স্ক নারী ও শিশুদের জন্য বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম ছাড়াও একটি ফ্রি ক্লিনিক চালায়। মহিলা পরিষদ দেশব্যাপী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে রোকেয়া সদনের বাসিন্দাদের বিভিন্ন আয়মুখী প্রকল্প, যেমন রান্নাকরা খাবার ও স্ন্যাক্স সরবরাহ, রেডিমেট গার্মেন্টস, মসলা প্রস্ত্ততকরণ, আচার তৈরি, অর্ধেক সিদ্ধ খাবার প্রসেসিং প্রভৃতির সঙ্গে সংযুক্ত করে তাদের জীবিকা নির্বাহের পথ করে দিচ্ছে। তাছাড়া সদনের বাসিন্দারা মহিলা পরিষদের সহায়তায় একটি কেন্টিন পরিচালনা করে থাকে। রোকেয়া সদনের বাসিন্দাদের তৈরি বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বাজারজাত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সেগুন বাগিচায় অবস্থিত মহিলা পরিষদ কার্যলয় প্রাঙ্গনে ‘সৃষ্টি’ নামক একটি বিপনন কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এ পর্যন্তপরিষদ ১০০০-এর বেশি নির্যাতিত নিগৃহীত নারী ও মেয়েদের অস্থায়ীভাবে রোকেয়া সদনে আশ্রয় প্রদান করেছে। সরকারি-বেসরকারি ও দাতাদের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত One Stop Crisis Centre-এর সাথে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জড়িত রয়েছে। তাদের সুপারিশে অনেক নির্যাতিতা নারী রোকেয়া সদনে আশ্রয় পেয়েছে। দেশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে ত্রাণ তৎপরতা ও পুনর্বাসন কাজে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে।
সাংগঠনিক কাজকর্ম আরো জোরদার ও গতিশীল করার লক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ তার বিভিন্ন উপকমিটির মাধ্যমে নিয়মিত কর্মীসভা, কর্মশালা, জমায়েত, গণসমাবেশ, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান, র্যালি, সাংবাদিক সম্মেলন, গোলটেবিল বৈঠক, সংলাপ এর আয়োজন ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবসও পালন করে থাকে। নিয়ত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে পরিষদ নারী জাগরণ ও নারী মুক্তি আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী হিসাবে তার সদস্যদের আলোকিত, দক্ষ এবং আত্মপ্রত্যয়ী সংগঠক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে। ইতোমধ্যে মহিলা পরিষদ স্থানীয় সরকারে, বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত সংগঠনের সদস্যদের ইউনিয়ন পরিষদে কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য দেশব্যাপী প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। মধ্যস্তরের সংগঠক ও কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য পরিষদ General Sensitized Training Module নামে একটি প্রশিক্ষণ রূপরেখা তৈরি করেছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ১৯৭০ সাল থেকে জেন্ডার সমতাকে উন্নয়ন ইস্যুর কৌশল হিসাবে গ্রহণ করেছে। এই সংগঠনের সদস্যরা নারীদের সুবিচার প্রাপ্তি, নায্যতা এবং তাদের মানবাধিকার সংরক্ষণে ও সরকারকে দায়িত্বশীল করার ব্যাপারে সবসময় তৎপর।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গণসংগঠন হিসাবে জাতীয় পর্যায়ে পাবলিক পলিসি বিতর্কে এবং দারিদ্র্য নিরসন কৌশলে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যাযে নারীদের সংযুক্ত করেছে। পরিষদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে স্থানীয়, জেলা শাখা ও কেন্দ্রীয়ভাবে সম্মেলন আয়োজন করা। এ সম্মেলন ২-৩ বৎসরের ব্যবধানে অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনের মাধ্যমে মহিলা পরিষদ তার বক্তব্য, কর্মসুচি এবং সাংগঠনিক অর্জনসমূহ সদস্য ও দেশবাসীর সামনে তুলে ধরে এবং সমাজে নারীদের উন্নতর অবস্থান ও অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ভূমিকাকে নিশ্চিত করার জন্য তাদের আন্দোলনকে গতিশীল ও বেগবান করে।
মহিলা পরিষদ বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, নারী পাচার, পতিতাবৃত্তি, মৌলবাদ, নারীর বিরুদ্ধে ফতোয়া দেওয়া এবং নারীর প্রতি পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারে সবসময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে।
আশির দশকে নারী নির্যাতন বাড়তে থাকলে মহিলা পরিষদ নির্যাতীত এবং নিগৃহীত নারী ও সাধারণ নারীদের গুরুত্ব সহকারে আইনি সহায়তা প্রদান করার কাজ শুরু করে। এই কাজের জন্য মহিলা পরিষদ পৃথকভাবে একটি সেল গঠন করে এবং বিবাহ বিচ্ছেদ, যৌতুক, বহুবিবাহ, মোহরানা প্রদান ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে সহায়ক ভূমিকা রাখে। তাছাড়া ক্রিমিন্যাল কেইস, ধর্ষণ, খুন ও নারী পাচারের মামলা দায়ের করার ক্ষেত্রে মহিলা পরিষদ নির্যাতীতাদের পাশে দাঁড়ায় এবং অপরাধীর বিচারের ব্যবস্থা করে। বাংলাদেশের সকল স্তরের নারীদের পারিবারিক জীবনে সমতা আনার লক্ষ্যে অভিন্ন পারিবারিক নীতিমালা বা ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড প্রণয়নের জন্য মহিলা পরিষদ সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত সুপারিশ সংসদে অনুমোদনের জন্য সরকারের কাছে পেশ করে। মহিলা পরিষদের সুপারিশ বাস্তবায়ন ও অন্যান্য প্রচলিত আইন সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে সরকারি পদক্ষেপ হিসাবে সরকার আইন সংস্কার কমিটি গঠন করে। ১৯৯৭ সালে নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়নে মহিলা পরিষদ কার্যকরী ভুমিকা রাখে। ২০০৪ সালে আরো দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় সিডো শ্যাডো রিপোর্ট তৈরি করে এবং জাতিসংঘ সিডো কমিটির কাছে সিডো শ্যাডো রিপোর্ট পেশ করে।
নারীর অবস্থা ও অবস্থান মূল্যায়ন, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা ও বিভিন্ন ধরনের শোষণ ও নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ এবং নারী উন্নয়নের জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মহিলা পরিষদ গবেষণা কর্ম সম্পাদন করে থাকে এবং সংগঠনের বহুমাত্রিক কার্যকলাপের খবর ও নারী বিষয়ক প্রবন্ধ ফিচার ও তথ্য প্রবাহ সরবরাহ করার জন্য মহিলা সমাচার নামক একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রকাশ করে থাকে। এছাড়া সংগঠন প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ, ইস্যুভিত্তিক লিফলেট, পোস্টার, ব্রশিও, বুকলেট ইত্যাদি ছাপানো ও বিতরণ করে থাকে।
গণ মাধ্যমের সাথে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের মিথস্ত্রিয়া ও জেন্ডার সচেতনতা যোগে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারীর চোখ দিয়ে সমাজকে দেখার জন্য ‘মিডিয়া ওয়াচ’ গড়ে তুলেছে। নিরাপদ পানির ব্যবহার, পয়োনিষ্কাশন, খাদ্য ও পরিপুষ্টি, পরিবেশ বিপর্যয় ও মাদকাশক্তি ইত্যাদি বিষয়ে গণ সচেতনতা সৃষ্টিতে পরিষদ তার অবদান রেখে চলেছে।
দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংগঠনের সাথে মহিলা পরিষদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে। আঞ্চলিক পর্যায়ে Women Rights Action Watch- Asia Pacific (IWRAW), ABC Nepal, SAMHATI, Commission on the Status of Women (CSW), Japanese Women’s Committee 2050 (Japan), Center for Women Global Leadership, Aurat Foundation- Pakistan, North East Network (NEW)- India, COVA- India, Federation of Business & Professional Women-Nepal, National Federation of Indian Women- India, International Center for Ethnic Studies- Sri Lanka (ICES), Durbar- India, Sakhi Resource Center for Women- India, Nirantar India, Shirkat Gah- Pakistan, JAGORI, SANGAT ইত্যাদি সংগঠনের সাথে একত্রে কাজ করছে। বাংলাদেশের প্রায় ২৫০টি প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ ও দ্বিপাক্ষিক বা ইস্যুভিত্তিক কর্মসুচি মহিলা পরিষদের রয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে IWRAW, Global Fund for Women, CONGO, UNIFEM, UNESCAP and UNDP এর সাথে মহিলা পরিষদের অনেক কাজ রয়েছে।
[নিবেদিতা দাশ পুরকায়স্থ]