বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ

বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (বিসিএসআইআর) দেশের বৃহত্তম গবেষণা কেন্দ্র। ১৯৫৫ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে প্রতিষ্ঠানটি জন্ম লাভ করে। তখন এর নাম ছিল পাকিস্তান কাউন্সিল অব সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (পিসিএসআই)। এর প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা ছিলেন বিজ্ঞানী ড.  মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা। প্রাথমিকভাবে এর গবেষণা পাঁচটি ভাগে বিভক্ত ছিলো: প্রাকৃতিক পণ্য বিভাগ, খাদ্য এবং ফল গবেষণা বিভাগ, জ্বালানি গবেষণা বিভাগ, কাঁচ এবং সিরামিক গবেষণা বিভাগ এবং চামড়া গবেষণা বিভাগ। পরে এর গবেষণা বিভাগ নতুনভাবে বিন্যস্ত  হয়ে বিভাগগুলির নাম হয়: প্রাকৃতিক পণ্য বিভাগ; খাদ্য বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিভাগ; জ্বালানি ও পেট্টোক্যামিক্যাল সাইন্স টেকনলজি বিভাগ; চামড়া বিজ্ঞান বিভাগ এবং প্রযুক্তি বিভাগ।

বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ ভবন

১৯৫৮ সালে এ গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি এর বর্তমান ঠিকানায় স্থানান্তর শুরু হয়। ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় প্রয়োজনীয় স্থাপনা ও ল্যাবরেটরি। ১৯৬৫ সালে প্রাকৃতিক সম্পদের খোঁজ বিশেষ করে ঔষধি এবং মিষ্টি ঘ্রাণযুক্ত গাছ খুঁজে বের করার মধ্য দিয়ে গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য চট্টগ্রামে ন্যাশনাল ড্রাগ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই গবেষণাগারটি প্রথম থেকে ১৯৬৭ সালে পর্যন্ত চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং পরে এটি সেনানিবাসের পাশে তার বর্তমান অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। এই গবেষণাগারটি বর্তমানে বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ, চট্টগ্রাম হিসেবে পরিচিত।

দেশের উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন লোকায়ত সম্পদকে ব্যবহার করার জন্য মধ্য ষাটের দশকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নর্থ-ওয়েস্ট রিজোনাল ল্যাবরেটরিজ প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। এজন্য ১৯৬৩-৬৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে মির্জাপুর নামক স্থানে ১০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৬৭ সালে এই গবেষণাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। সিল্ক এবং  লাক্ষার গবেষণা এবং ট্রেনিং এর জন্য এই গবেষণাগার প্রসিদ্ধ।

স্বাধীনতার পর বিসিএসআইআর প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (বিসিএসআইআর) শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময় থেকে কাউন্সিল হেডকোয়ার্টার, ঢাকাসহ আরও দুটো আঞ্চলিক গবেষণা ইউনিট নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ শুরু করে। ১৯৭৮ সালে বর্তমান কাউন্সিলকে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে। এই অধ্যাদেশকে বলা হয় বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৮। অধ্যাপক ড. মফিজউদ্দিন আহমেদ বিসিএসআইআর-এর প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান।

বর্তমানে তিনটি বিভিন্ন জ্ঞানকান্ডীয় আঞ্চলিক গবেষণাগার, পাঁচটি মনো ডিসিপ্লিনারি ইনস্টিটিউট এবং ১টি পাইলট প্যা্ন্ট স্টাডিজ সেন্টার নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সকল ইউনিটই প্রয়োজন অনুযায়ী মৌলিক গবেষণার পাশাপাশি প্রয়োগিক গবেষণাও করে। বিজ্ঞানীদের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ভিত্তি গড়ার জন্য মৌলিক গবেষণা জরুরি যা আসলে দেশের উন্নয়ন বয়ে আনে এবং প্রয়োগিক গবেষণা শিল্পের জন্য প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং দেশের বর্তমান প্রয়োজনের সঙ্গে যুক্ত। প্রত্যেক ইউনিট এর গবেষণা এবং উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলি প্রত্যেক ইউনিটের প্রধান নির্বাহী বা পরিচালকের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত এবং পরিচালিত হয়।

গবেষণা ও উন্নয়নমূলক নিয়মিত কার্যক্রমের বাইরেও বিসিএসআইআর-এর সকল ইউনিট সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকনিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্ট প্রকল্প এবং বিভিন্ন সহায়তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পগুলি ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে বিসিএসআইআর-এর গবেষণা এবং উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক যিনি ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে কাজ করেন তিনি দাতা এবং স্পন্সর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোযোযোগ রাখেন। এই পরিকল্পনা সেল ১৯৭৮ সালে তৈরি করা হয়। পরবর্তীকালে এটি একটি বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৪ সালে প্রথম বারের মত এর পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়।

সমকালীন জাতীয় ইস্যুভিত্তিক গবেষণা প্রকল্পগুলি ছাড়াও বিসিএসআইআর শিল্পালয়, বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি  সংস্থা, উদ্যোক্তা এবং স্টেকহোল্ডারদের বিভিন্ন মৌলিক এবং প্রায়োগিক সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্লেষণধর্মী সেবা দিয়ে থাকে।

এখন পর্যন্ত বিসিএসআইআর-এর গবেষণা ইউনিট আলাদাভাবেই এই ধরনের বিশ্লেষণধর্মী সেবা দিয়ে আসছে। এই সেবাকে দ্রুত এবং দৃঢ় করতে বিসিএসআইআর গবেষণা সমন্বয়কারীর নিয়ন্ত্রণে ২০০৯ সালের ১৫ নভেম্বর ওয়ান স্টপ এনালাইটিক্যাল সার্ভিস সেন্টার চালু করেছে। ২০০৯ সালে বিসিএসআইআর তথ্য এবং যোগাযোগ দ্রুত করতে আইসিটি সেল চালু করে।

বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষার্থীদের সেবা প্রদানের জন্য বিসিএসআইআর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেছে। বিসিএসআইআর-এর নয়টি গবেষণা ইউনিট থেকে পাবলিক এবং বেসরকারি সংস্থা, উদ্যোক্তা, শিল্প এবং একাডেমিকদের কয়েক ধরনের সহযোগিতা করা হয়: ১. প্রযুক্তির স্থানান্তর ২. শিল্পালয়গুলিকে সহযোগিতা ৩. বিশেষায়িত সেবা ৪. দারিদ্র্য বিমোচন এবং নারীর ক্ষমতায়ন ৫. মানব সম্পদ উন্নয়ন ৬. সামাজিক সচেতনতা তৈরি এবং কনসালটেন্সি সেবা।

১৯৭৮ সালের অধ্যাদেশ ভি (৫) অনুযায়ী বিসিএসআইআর-এর কার্যাবলী: শিল্পের প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়ন সমস্যাকে কেন্দ্র করে সবধরনের বৈজ্ঞানিক, শিল্প কেন্দ্রিক এবং প্রযyুক্তগত উন্নয়ন কেন্দ্রিক গবেষণার উদ্যোগ পরিচালনা এবং নেতৃত্ব দেওয়া হয়। এই ধরনের কাজ সরকার এই সংস্থার কাছে পাঠাতে পারে; বৈজ্ঞানিক এবং শিল্পকেন্দ্রিক গবেষণার জন্য সর্বোচ্চ উপায়ে প্রাকৃতিক সম্পদ উৎঘাটন এবং এর ব্যবহারের উদ্দেশ্যে গবেষণাগার, কর্মশালা, ইনস্টিটিউট, সেন্টার  এবং বিভিন্ন সংস্থা স্থাপন ও দেখভাল করা; আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক, শিল্পায়িত এবং প্রযুক্তিগত গবেষণা এবং প্রকল্পে অর্থায়ন করা; কাউন্সিল, বিশ্ববিদ্যালয় অথবা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের গবেষণা ফলাফল বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া; কাউন্সিল থেকে যেসকল গবেষণা হয় সেসব গবেষকদের মধ্যে পুরস্কার প্রবর্তন; বৈজ্ঞানিক, শিল্পায়ত, প্রযুক্তিগত জ্ঞান সংগ্রহ করা ও ছড়িয়ে দেওয়া এবং বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ, রিপোর্ট এবং সময়ভিত্তিক রিপোর্ট প্রকাশ করা; শিল্পকেন্দ্রিক গবেষণা সংস্থা তৈরিতে উৎসাহ দেওয়া; অন্যান্য দেশের বৈজ্ঞানিক, শিল্পায়িত এবং প্রযুক্তিগত গবষেণা সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা; মেধাস্বত্ব রক্ষা, কাউন্সিল এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এবং গবেষণাগারের সঙ্গে গবেষণা উন্নয়নকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ; বোর্ডের বিবেচনা অনুযায়ী গ্রন্থাগার, যাদুঘর এবং অনুসন্ধানী বৃক্ষায়ন এবং হারবার করা; এবং অধ্যাদেশের প্রয়োজন অনুযায়ী যা যা প্রয়োজন হয় সেগুলি করা।

গবেষণা এবং উন্নয়ননীতির লক্ষ্য ১৯৭৮ সালের অধ্যাদেশ ভি (৫) অনুযায়ী বিসিএসআইআর গবেষণা এবং উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্দেশ্যগুলি হলো:

১      আমদানিকৃত পণ্যের বিপরীতে প্রাকৃতিক উৎস থেকে বাজারজাত পণ্য তৈরি করা এবং রপ্তানিকে উৎসাহ করা;

২      আমদানিকৃত প্রযুক্তির অভিযোজন এবং সংযুক্তির মধ্য দিয়ে আমাদের পরিবেশ অনুযায়ী নিজস্ব কৌশল তৈরি  করতে হবে, প্রযুক্তিগত সেবার এবং শিল্প কারখানাগুলিতে বৈজ্ঞানিক তথ্য দিয়ে জাতীয় শিল্প উন্নয়নকে সহযোগিতা করা;

৩      সমাজ এবং শিল্পের চাহিদা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী প্রয়োগিক ক্ষেত্রে গুরুত্ব বিবেচনা করে গবেষণা এবং উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলি অগ্রাধিকার দেওয়া।

বিসিএসআইআর সফলতা শুরু হয়েছে ড. মুহাম্মদ কুদরাত-এ-খুদার সময় থেকে এবং এখন পর্যন্ত আরও অনেক সফলতা যোগ হয়েছে। ড. কুদরত-এ-খুদা এবং তাঁর সহযোগিরা ১৮টি বৈজ্ঞানিক কাজের স্বত্ত্ব রেখেছেন। পাঠকাঠি থেকে পারটেক্স তৈরি এখন পর্যন্ত ড. কুদরাত-এ-খুদার সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে দেখা হয়। অন্যান্য আবিস্কারের মধ্যে আছে আখ এবং চিনির শিরা থেকে পরিণত হওয়া শিরকা; পাট এবং পাটকাঠি থেকে সুতা এবং পাট থেকে কাগজ ছিলো উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে আরও কিছু সফল কার্যক্রম নেতৃত্বাধীন পিআরআই-কে সমৃদ্ধ করেছে। এইগুলি হলো:

১.     বিসিএসআইআর ইরানের তেহরানে অনুষ্ঠিত তৃতীয় এফএজেআর আঞ্চলিক উদ্ভাবন এবং উদ্ভাবন প্রদশর্নী ২০১১-এ অংশগ্রহণ করে এবং এর নতুন গবেষণা এবং উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য তৃতীয় পুরষ্কার লাভ করে;

২.     সরকারের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১২টি ওয়াটার কোয়ালিটি প্যারামিটার বিশ্লেষণের জন্য বিশ্ব বাজারে বিসিএসআইআর-কে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে;

৩.     বিসিএসআইআর হলো সরকারের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা আর্সেনিক নির্মূল যন্ত্রপাতির দক্ষতা তদন্ত করার দায়িত্ব পেয়েছে;

৪.     ইইউ এর চাহিদামতো গঁড়ো দুধে মেলামাইন এবং চিংড়িতে রিট্রাইসাইক্লায়িন বের করা বিজ্ঞানিদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিলো;

৫.     এনার্জি সেভিং ইট এবং এনার্জি দক্ষ ইট তৈরি করেছে;

৬.     বায়োগ্যাস কৌশল কাজে লাগিয়ে অল্প দামে এবং বহনযোগ্য ফাইবার গ্লাস বায়োগ্যাস ডাইজেস্টার তৈরি কর;

৭.     নগর অঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহে যেন কোন ধরনের সমস্যা তৈরি না হয় সেজন্য সোলার গ্রিড হাইিব্রডাইজেশন প্রযুক্তি তৈরি করেছে;

৮.     দ্বিপদীয় জ্বালানীর উদ্ভাবন ছিলো (সিএনজি/ডিজেল) সেচের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যার মাধ্যমে ৬০% জ্বালানী সাশ্রয় নিশ্চিত হয়েছে;

৯.     বিসিএসআইআর যানবাহন পুল সরকারের যানবাহন পুল হিসেবে আন্তর্জাতিক মানসম্মতভাবে ডিভেলপড ব্রেক ওয়েল হিসেবে কাজ করছে;

১০.   বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় বিসিএসআইআর ইন্টসুম্যানশেন এবং ক্যালব্রেশন সার্ভিস কেমিক্যাল মা্যটিলজির মতো একটি ইউনিক গবেষণাগার স্থাপন করা;

১১.   পিপিএনবি প্রকল্পের আওতায় ‘Strengthening of the laboratory for maintaining environment quality and soil health’ শিরোনামে প্রকল্পটি সাফল্যজনকভাবে শেষ হয়েছে;

১২.   বিসিএসআইআর ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে ‘Support to BCSIR-ICSL for chemical metrology under BQI-BEST program’ শিরোনামে কাজ করার জন্য একটি টেকনিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্ট গ্রান্ড পেয়েছে;

১৩.   গবেষণা এবং উন্নয়ন কর্মকান্ডের সিবায়োসিস তৈরি করার জন্য বিসিএসআইআর সম্প্রতি বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগের সঙ্গে এমওইউএস এ প্রবেশ করেছে;

১৪.   বাংলাদেশের ক্যামিকেল মেট্রোলজি কাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে বিসিএসআইআর একটি জাতীয় পরিকল্পনা তৈরি করেছে।

এডিপি প্রকল্প ১৯৭৩ সাল থেকে বিসিএসআইআর কয়েকটি বিষয়কে লক্ষ্য রেখে প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন করেছে। এইগুলি হলো ১. অবকাঠামোগত উন্নয়ন ২. নতুন প্রতিষ্ঠান, গবেষণাগার এবং সেন্টার চালু করা ৩. সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় গবেষণা কাজ বাড়ানো এবং এখন পর্যন্ত বিসিএসআইআর ৫০টি এডিপি প্রকল্প শেষ করেছে এবং বর্তমানে ৬টির কাজ চলছে।

বাজেট ১৯৭৩ সাল থেকেই গবেষণা এবং উন্নয়ন বরাদ্দসহ পুরো ব্যয়ভার সরকার থেকে পেয়ে থাকে। দেখা গেছে যে, ২০০৯-২০১০ অর্থ বছরে পূর্বের বছরের তুলনায় একটি বড় ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গিয়েছে এবং আশা করা যায় এটি আগামী বছরগুলিতেও অব্যাহত থাকবে। এখানে এটি বলা প্রয়োজন যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ১% জিডিপি বাড়ানো মানে হলো দেশের মোট জিডিপি ৫% বৃদ্ধি পাওয়া।

বিসিএসআইআর ৫৬ বছরের কর্যক্রমে তার লক্ষ্যের আংশিক পূরণ করেছে। দেশের প্রধান পিআরই দেশের বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে অবদান রাখে যা এসএমএই সেক্টরের উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত। উদ্যোক্তা এবং এস এবং টি এর মধ্যেকার সংযোগহীনতা এই বিষয়কেই ইঙ্গিত করে যে বর্তমানের উদ্যোক্তারা স্থানীয় প্রযুক্তিকে উন্নয়নের জন্য সঠিকভাবে সাহায্য করার মতো অবস্থায় ছিলো না। বিসিএসআইআর-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলির ঠিকমতো কাজকরার প্রতিবন্ধকতা হলো বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাব। ১৯৭৮ সালে পদ বিন্যাস যেভাবে তৈরি করা হয়েছে সেটি আর পরিবর্তন করা হয় নি এবং কাউন্সিলকে সঠিকভাবে কাজ করার জন্য কোন নিয়ম তৈরি করা হয় নি। এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম সঠিকভাবে চলার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করেছে। সত্যিকারের অর্থনৈতিক মুক্তি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ঠিকমত চলার জন্য একটি বড় বিষয়। যদি অর্থ অপর্যাপ্ত হয়, তাহলে সত্যিকারের স্বায়ত্তশাসন অর্জন করা সম্ভব নয় এবং কাউন্সিল দেশকে সম্পূর্ণভাবে কিছু দিতে পারবেনা। [এস.এম ইমামুল হক এবং সামিনা আহমেদ]