বাংলাদেশে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ১৯৯৮ সালের ৬ মে বাংলাদেশে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন আইন-১৯৯৮ এর ৮ নং আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত হয়। ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্গত সোনারগাঁও এ। তবে এটি প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে যেকোনো স্থানে শাখা কার্যালয় স্থাপন করতে পারবে। ফাউন্ডেশন পরিচালনা ও এর প্রশাসন একটি পরিচালনা বোর্ডের উপর ন্যাস্ত এবং ফাউন্ডেশন যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ এবং কার্য সম্পাদন করতে পারে পরিচালনা বোর্ডও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করতে পারে। পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী। এছাড়াও বোর্ডে থাকেন, সরকার কর্তৃক মনোনীত জাতীয় সংসদদের তিনজন সদস্য, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব, অর্থবিভাগ কর্তৃক মনোনীত যুগ্ম-সচিবের পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা, জাতীয় যাদুঘরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার চেয়ারম্যান, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক, পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংশ্লিষ্ট উপ-সচিব, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, সরকার কর্তৃক মনোনীত লোক ও কারুশিল্প উন্নয়নে উৎসাহী তিনজন ব্যক্তি, চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক যিনি এই ফাউন্ডেশনের সচিব।
ফাউন্ডেশনের অন্তর্ভূক্ত কার্যাবলী হলো: ঐতিহাসিক লোক ও কারুশিল্প সামগ্রী সংরক্ষণ করা, কারুশিল্প বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে লোকশিল্প যাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা, নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্গত সোনারগাঁও-এ একটি শিল্প গ্রাম প্রতিষ্ঠা করা, লোক ও কারুশিল্প বিষয়ক গবেষণার ব্যবস্থা ও গবেষণালব্ধ তত্ত্ব ও তথ্যাদির প্রকাশনার ব্যবস্থা করা, ঐতিহ্যবাহী লোক ও কারুশিল্প চর্চায় উৎসাহ প্রদান, লোক ও কারুশিল্প উন্নয়নে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, লোক ও কারুশিল্পের গবেষণায় নিয়োজিত যেকোনো ব্যক্তি বা সংস্থাকে সাহায্য ও সহযোগিতা করা, লোক ও কারুশিল্প উন্নয়ন নীতি প্রণয়নে সরকারকে সাহায্য করা ছাড়াও তৎসম্পর্কিত যেকোনো বিষয়ে সরকার, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শ প্রদান এবং সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে বিদেশি ও আন্তর্জাতিক লোক ও কারুশিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একই বিষয়ে যৌথ কর্মসূচি গ্রহণ করা। এর বাইরেও প্রতিষ্ঠানের কার্যাদির সম্পূরক ও প্রাসঙ্গিক অন্যান্য কার্য করা। চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে বোর্ডের নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে অনুযায়ী প্রতি তিন মাসে কমপক্ষে একটি সভা অুনষ্ঠিত হয়। সভায় সাধারণত বোর্ডের চেয়ারম্যান সভাপতিত্ব করেন। তবে তাঁর অনুপস্থিতে চেয়ারম্যান কর্তৃক সদস্যদের মধ্য থেকে মনোনীত কোনো সংসদ সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করেন। ফাউন্ডেশনের তহবিলে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান, কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুদান, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোনো বিদেশি সরকার বা সংস্থা বা কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা হতে প্রাপ্ত সাহায্য বা মঞ্জুরী, ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত বই, পত্র-পত্রিকা ও অন্যান্য সম্পত্তি বিক্রয়লব্ধ অর্থ, অন্য কোনো উৎস হতে প্রাপ্ত অর্থ রাখা হয়। এই তহবিল হতেই ফাউন্ডেশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা হয়। ফাউন্ডেশন এই তহবিল সরকার কর্তৃক অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। [জোবাইদা নাসরীন]