বটতলি রেলওয়ে স্টেশন

বটতলি রেলওয়ে স্টেশন  চট্টগ্রাম শহরের মূখ্য রেলওয়ে স্টেশনটি বটতলি নামে খ্যাত। আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের প্রতিনিধি এবং প্রধান প্রকৌশলী এই স্টেশনের একটি দ্বিতল ভবনের নকশা অনুমোদন করেন ১৮৯৬ সালের ৭ নভেম্বর। নকশা মোতাবেক ভবনটির নীচ তলায় বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জায়গা এবং দোতলায় স্টেশন মাস্টারের আবাসস্থলের ব্যবস্থা রাখা হয়। দোতলার মধ্যভাগে স্টেশন মাস্টারের কোয়ার্টারের অবস্থান। এর দু’পাশে উন্মুক্ত চত্বর, এক প্রান্তে বাবুর্চির এবং অপর প্রান্তে চাকর-বাকরদের বাসস্থল। উন্মুক্ত চত্বরটি এখন আর নেই, পরে দ্বিতল সস্প্রসারণের সময় এখানে অতিরিক্ত কক্ষ নির্মাণ করা হয়।

স্টেশন-দালানের ফ্যাসাদ অনেক পরিপাটি স্থাপত্যিক অলঙ্করণে মহিমাময়। জাঁকজমকপূর্ণ গাড়ি-বারান্দার মধ্যখানে সংযুক্ত আছে ধাতব শীর্ষভূষণ ও গম্বুজ শোভিত অর্ধ-অষ্টালক মিনার, যার ভেতর দিয়ে ঘোরানো সিঁড়ি পথে উঠা যায় স্টেশন মাস্টারের বাসভবনে। মিনারের অবলম্বন একটি ধাপযুক্ত সুশোভন ঠেকনা। উচ্চতর শ্রেণির যাত্রীদের অবতরণ স্থল প্রশস্থ গাড়ি-বারান্দার পূর্ব ও পশ্চিম পাশ আমন্ত্রক চতুর্কেন্দ্রিক খিলান এবং মিনারের উভয় দিক খাড়া খিলান সজ্জিত। দালানের উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিম কোনায়ও যুক্ত আছে ধাতব শিরোভূষণ ও গম্বুজ শোভিত এবং গোড়ায় ধাপযুক্ত ঠেকনা দেওয়া গোলাকার দু’টি মিনার। এর ভেতর একটিতে বাবুর্চির এবং অপরটিতে চাকর-বাকরদের বাসায় যাওয়ার আলাদা আলাদা ঘোরানো সিঁড়িপথ। এই প্রাচীন দালানটি পরে একাধিকবার বেঢপভাবে সংস্কার ও প্রসারিত করা হলেও মাত্র কিছুদিন আগে সম্পাদিত এর স্থাপত্যিক সংরক্ষণ কাজ বাংলাদেশে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করে। এখনও ব্যবহারে আছে বটতলি স্টেশনের শতাব্দী প্রাচীন উপনিবেশিক শৈলীর এই দালান।  [শামসুল হোসাইন]