বটগাছ

বটগাছ  Moraceae গোত্রের চিরসবুজ সুবৃহৎ বৃক্ষ, Ficus bengalensis যার ছড়ানো শাখা থেকে ঝুরি মাটিতে নেমে আসে ও ক্রমে কান্ডের আকারে স্তম্ভমূলে রূপান্তরিত হয়। বয়স্ক গাছ বিশালাকৃতি আচ্ছাদন তৈরি করে। ফল ছোট, গোলাকার, পাকলে লাল হয় যাহা পাখিদের খাবার। সারা দেশেই জন্মে। কাঠ ধূসর, মাঝারি রকমের শক্ত। স্তম্ভমূলের কাঠ গুঁড়ির কাঠের তুলনায় বেশি মজবুত এবং তাবুর খুঁটি, পালকির ডান্ডা ও সস্তা আসবাবে ব্যবহার্য। বট হিন্দুদের নিকট পবিত্র বৃক্ষ। এর ভেষজমূল্যও আছে।

বিশ্ববট গাছ

বিশ্ববট (The Great Banyan Tree) ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৯ কিমি পূর্ব দিকে কালীগঞ্জ-আড়পাড়া-খাজুরা সড়কের ত্রিমোহনী সংলগ্ন কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের বেথুলী গ্রামের উত্তর-পশ্চিম কোণে বটগাছটি অবস্থিত। বেথুলীর এই বটগাছটি মল্লিকপুর (সুইতলা) বটগাছ নামেও পরিচিত। বৃহৎ আকারের জন্য ইদানীং কেউ কেউ এটিকে বিশ্ববট নামে পরিচিত করার চেষ্টা করছেন। মূল গাছটি কালক্রমে অনেকগুলি ছোট গাছে বিভক্ত হয়ে গেছে। মোট ৪৫টি উপবৃক্ষ ও ২.৩৩ হেক্টর এলাকা নিয়ে এর বিস্তৃতি। বর্তমানে মূল বটগাছটি মৃত। মাঝখানে কিছু অংশ ফাঁকা এবং চারপাশে শাখা-প্রশাখায় বেষ্টিত। দক্ষিণ-পূর্ব পাশের গাছগুলি জমাটবদ্ধ এবং উত্তর-পশ্চিম পাশে কিছুটা ফাঁকা ছাউনি দিয়ে বেষ্টিত। বর্তমানে চারদিকে দেয়াল দিয়ে এই বিশাল বটতলা সংরক্ষণ করা হয়েছে। বটগাছটির ৩৪৫টি ঝুরি মাটির সাথে যুক্ত এবং ৩৮টি ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। জনশ্রুতি আছে যে, এখানকার এক কুমার বাড়ির কূপের গা বেয়ে গাছটির জন্ম। বটগাছটির বয়স আনুমানিক ২০০ থেকে ২৫০ বছর। উল্লেখ্য, কলকাতা বোটানিক্যাল গার্ডেনের (কলকাতা) বটগাছটির আচ্ছাদন ২.২২ হেক্টর জুড়ে। সেখানেও মূল বৃক্ষ মরে বহু উপবৃক্ষের সৃষ্টি হয়েছে। স্পষ্টত বেথুলী বটগাছটি শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের বটগাছটির পরিধি থেকে কিছুটা বড়। বেথুলীর বিশ্ববট প্রাকৃতিক নিয়মেই বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ এর চারদিকে ছিল কৃষি জমি। পক্ষান্তরে শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের বটগাছটি সুনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে উঠেছে।  [মোঃ জুলফিকার আলী ভূট্টো]