প্রজননক্ষমতা
প্রজননক্ষমতা (Fertility) হলো বয়ঃসন্ধি শুরু হবার পর যৌন মিলনের মাধ্যমে সন্তান উৎপাদনের প্রাকৃতিক ক্ষমতা। এটি পুনরুৎপাদন দক্ষতা নিরুপণের প্রধান নিয়ামক যা কোনো খামারের লাভ-ক্ষতির সাথে সরাসরি জড়িত। পশুদলের প্রজনন ক্ষমতা হলো একটি খামারের প্রজনন ব্যবস্থাপনার ভালো কিংবা মন্দ দিক বিবেচনার একমাত্র নির্দেশক। এটি শুধুমাত্র যে স্ত্রী পশুর শারীরিক অবস্থার সাথেই জড়িত তা নয়, পুরুষের অবদান এর সাথে সমভাবে জড়িত। একটি পশুর প্রজনন হার হলো প্রজনন সক্ষমতা যেটা তার জীবদ্দশায় বাচ্চা দেবার সংখ্যা থেকে বোঝা যায়। স্বাভাবিক প্রজনন ক্ষমতার সাথে জড়িত বিভিন্ন বিষয় হলো স্ত্রী প্রাণী কর্তৃক উৎপাদিত সতেজ ডিম্বাণু, পুং প্রাণী দ্বারা পর্যাপ্ত পরিমাণ শুক্রাণু উৎপাদন, স্ত্রী প্রজননতন্ত্রের মধ্য দিয়ে শুক্রাণু নিষেক স্থানের দিকে সফল পরিবহন, শুক্রাণু ও ডিম্বাণু একিভূতকরণ এবং নিষিক্তকরণ ডিম্বাণুর জরায়ুতে প্রতিস্থাপন।
উপরোল্লিখিত যে কোনো একটি বিষয়ে ব্যত্যয় ঘটলে অনুর্বরতা পরিলক্ষিত হয়। অনুর্বরতা হলো একটি ঘটমান বিষয় যা ক্লিনিক্যাল গর্ভাবস্থা স্থাপনে অক্ষম বা সমস্যার সৃষ্টি করে। গবাদিপশুর প্রজননদক্ষতা হ্রাস বা অনুর্বরতার সাথে জড়িত বিষয়গুলো হলো খাদ্যের পুষ্টিমাণ, জেনোটাইপ, বয়স, হরমোনের অস্বাভাবিকতা, খামার ব্যবস্থাপনা, প্রাণীর স্বাস্থ্যগত অবস্থা, স্ত্রী প্রজননতন্ত্রের রোগ কিংবা গঠনগত অস্বাভাবিকতা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েরই প্রজননদক্ষতা কমতে থাকে। অধিকন্ত, অধিক উৎপাদনশীল গবাদিপশুর প্রজননদক্ষতা কম পরিলক্ষিত হয় যেহেতু উৎপাদন ও পুনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্যাবলীর মধ্যে ঋণাত্বক সম্পর্ক বিদ্যমান। ভালো প্রজনন হার পাওয়া যায় যদি গরু ও মহিষের কামোত্তেজনা শুরুর ১২-১৮ ঘণ্টা, ছাগল ভেড়ার ২৪-৩৬ ঘণ্টা এবং ঘোড়ার ৪৮-৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রজনন করানো হয়। সফল গর্ভধারন নির্ভর করে সঠিক সময়ে প্রজনন এবং প্রজননকর্মীর দক্ষতার উপর। [মোহাম্মদ সামছুল আলম ভূঞা]