পোড়ামা
পোড়ামা নবদ্বীপের এক সুপ্রাচীন দেবীপীঠ। পনের শতক বা তারও পূর্বে জনৈক তান্ত্রিক সাধু নবদ্বীপ সংলগ্ন সিমুলিয়া গ্রামের অধিষ্ঠাত্রী গ্রাম্যদেবী ‘পরমা’কে বর্তমান স্থানে নিয়ে আসেন। এই পরমাই উচ্চারণ বিকৃতির ফলে ‘পোড়ামা’ হয়েছেন বলে মনে করা হয়।
এই স্থানটি এক সময় জঙ্গলাকীর্ণ ছিল। কালক্রমে বিশিষ্ট স্মার্তপন্ডিত রঘুনন্দন ভট্টাচার্য স্থানটি পরিষ্কার করে একটি সংস্কৃত টোল স্থাপন করেন। তখন থেকে সেখানে পড়ুয়াদের নিত্য যাতায়াত শুরু হয়। ‘পড়ুয়াদের মা’ এ অর্থে ‘পোড়ামা’ নামকরণ হয়েছে এরূপ মতও প্রচলিত আছে।
প্রাচীন নবদ্বীপে এই দেবীপীঠেই শাস্ত্রালোচনা, তর্কযুদ্ধ, বিচারসভা, পরীক্ষা গ্রহণ ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন হতো। গ্রাম্যদেবী ‘পরমা’ যে পরাবিদ্যাদায়িনী মাতৃশক্তি এবং মূলত বিদ্যাধিষ্ঠাত্রী সে বিষয়ে বিদ্বৎমহলে স্থির বিশ্বাস অদ্যাপি বর্তমান। নদীয়ার রাজবংশ এই দেবীর পূজার ব্যয়ভার বহন করেন। বর্তমানে দক্ষিণকালিকার ধ্যানে এই দেবী পূজিত হন। মন্দিরের ডান পাশে ভবতারণ ( শিব) ও বামে ভবতারিণী (কালী) মন্দির বিরাজ করছে। [শুভেন্দুকুমার সিদ্ধান্ত]