পলাশ উপজেলা

পলাশ উপজেলা (নরসিংদী জেলা)  আয়তন: ৯৪.৪৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৫৩´ থেকে ২৪°০৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৪´ থেকে ৯০°৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে শিবপুর ও কালীগঞ্জ (গাজীপুর) উপজেলা, দক্ষিণে রূপগঞ্জ ও নরসিংদী সদর উপজেলা, পূর্বে শিবপুর ও নরসিংদী সদর উপজেলা, পশ্চিমে কালীগঞ্জ (গাজীপুর) ও কাপাসিয়া উপজেলা।

জনসংখ্যা ২১২৬১২; পুরুষ ১০৭৫১৮, মহিলা ১০৫০৯৪। মুসলিম ১৮৮৮৪৭, হিন্দু ২৩৬৭৮, খ্রিস্টান ৬৬, বৌদ্ধ ৮ এবং অন্যান্য ১৩।

জলাশয় প্রধান নদী: শীতলক্ষ্যা।

প্রশাসন পলাশ থানা গঠিত হয় ১৯৭৭ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১ (ঘোড়াশাল) ৫৪ ৭৫ ৯৯৬৮০ ১১২৯৩২ ২২৫১ ৬৩.৭ (২০০১) ৫২.৮
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার(%)
১৯.২১ (২০০১) ৫১ ৮৫৯৪৯ ৩০৩৬ (২০০১) ৬৬.৬
পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৯.৮২ (২০০১) ১৩৭৩১ ২১২৫ (২০০১) ৫৬.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গজারিয়া ৪৭ ৩২৮৪ ১২৮২৯ ১৩৩৩০ ৫৩.৪
চরসিন্দুর ১৫ ৩৪০০ ১২৮১৭ ১৩৩৫৪ ৫৬.২
জিনারদী ৭৯ ৬২৮৩ ১৪৮০৩ ১৫৪৪৭ ৫৩.৮
ডাঙ্গা ৩১ ৪০৯৬ ২২৪৪৫ ২১৬৩৮ ৫০.৮

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ পারুলিয়া মসজিদ (১৭১৬), ঘোড়াশাল মিয়াবাড়ী মসজিদ, দেওয়ান শরীফের মাযার, ডাঙ্গা ভোলাবো প্রাচীন কালীবাড়ি ও যজ্ঞেশ্বর সাধুর আশ্রম (১০৯২), ডাঙ্গার কথুনাথের মন্দির, বরাব কানাই লালের মন্দির।

মুক্তিযুদ্ধ উপজেলার চরণগরদী এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে ময়মনসিংহের মনির হোসেন নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

বিস্তারিত দেখুন পলাশ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪০৭, মন্দির ২৭, মাযার ২।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৮.৬%; পুরুষ ৬০.১%, মহিলা ৫৭.২%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চরসিন্দুর হাইস্কুল (১৯১৯), পারুলিয়া হাইস্কুল (১৯৩৩), ঘোড়াশাল হাইস্কুল (১৯৪৫), ডাঙ্গা হাইস্কুল, গয়েশপুর পি.এল হাইস্কুল, পলাশ থানা উচ্চ বিদ্যালয়।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান  লাইব্রেরি ১, ক্লাব ৫৯, সিনেমা হল ২, খেলার মাঠ ৩১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ২৮.২৮%, অকৃষি শ্রমিক ২.৮৬%, শিল্প ৫.১৪%, ব্যবসা ১৬.৮৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১৪%, নির্মাণ ৫.৮০%, চাকরি ২৬.২৬% এবং অন্যান্য ১২.৬৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৩.৩৬%, ভূমিহীন ৪৬.৬৪%। শহরে ৪৭.১২% এবং গ্রামে ৬০.৬৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আখ, পিঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন, মিষ্টি আলু, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচু, কলা, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১৫, গবাদিপশু ৫৫, হাঁস-মুরগি ৮৭, নার্সারি ৭, গবাদিপশু প্রজনন কেন্দ্র ২।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২৪.৩৮ কিমি; আধা-পাকারাস্তা ০.৩১ কিমি; কাঁচারাস্তা ১৩৮.৩১ কিমি; নৌপথ ২৫ কিমি; রেলপথ ১৪ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চিনিকল, পাটকল, কাগজকল, সার কারখানা, সিমেন্ট কারখানা, তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৬, মেলা ৭। ঘোড়াশাল বাজার, ডাঙ্গা হাট, চরসিন্দুর হাট এবং জিনারদী মেলা, ঘোড়াশাল মেলা ও চরসিন্দুর মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য চিনি, চট, কাগজ, কলা, আনারস, পিঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৯২.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৯%, ট্যাপ ৯% এবং অন্যান্য ২%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬৬.১% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩০.৫% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা  হাসপাতাল ৭, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪, মাতৃসদন ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ২৮।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, পপি। [মো. ইফতেখার উদ্দিন ভূঞা]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; পলাশ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।