পয়ঃনিষ্কাশন

পয়ঃনিষ্কাশন (Sewage Disposal)  বিশেষ নর্দমা-প্রণালীর মাধ্যমে মানুষের মলমূত্র এবং কলকারখানা, রান্নাবাড়া, গৃহস্থালি, বিনোদন কর্মকান্ড ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন বর্জ্যপদার্থ অপসারণ। এ ধরনের বর্জ্য প্রধানত তরল, যাতে মিশ্রিত থাকে  কঠিন পদার্থ।

আবর্জনা নিষ্কাশনের জন্য পরিকল্পিত ব্যবস্থা শহরাঞ্চলেই থাকে, কেননা শহর ও নগরে দূষণের মাত্রা এত বেশি ও ব্যাপক যে জনস্বাস্থ্যের জন্য পরিকল্পিত পয়ঃপ্রণালী আবশ্যক হয়ে পড়ে। গ্রামাঞ্চলে সাধারণত ইট বা কংক্রিটের ভূগর্ভস্থ সেপটিক ট্যাঙ্কে আলাদা আলাদা গৃহস্থালির মলমূত্র ফেলা হয়। এসব ট্যাঙ্কের বহির্মুখী নল দিয়ে আবর্জনার তরল অংশ মাটিতে গিয়ে পড়ে এবং সেখানে অণুজীব এগুলি পচিয়ে ফেলে। আবর্জনার কঠিন অংশ ট্যাঙ্কের তলদেশে জমা হয় এবং ক্রমে সেখানকার অণুজীবরা সেগুলিকে পচিয়ে ফেলে।

রাজধানী ঢাকা মহানগরে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ মলমূত্র ও আবর্জনা পুঞ্জীভূত হয়। তবে মোট আবর্জনার পরিমাণের সঠিক কোন হিসাব নেই। ঢাকা নগরীর ময়লা আবর্জনা মূলত শৌচাগারেরই বর্জ্য পানি, কারণ এভাবেই শহরের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা পরিকল্পিত। রান্নাঘর, গোসলখানা ইত্যাদির বর্জ্য পানি সাধারণত পয়ঃনিষ্কাশন প্রণালীতে পড়ে না, পরিবর্তে সাধারণ নর্দমার মাধ্যমে সেগুলি শহরের নিকটবর্তী নিচু এলাকায় ফেলা হয়। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত স্টর্ম-সোয়ারেজ ব্যবস্থাও প্রধান পয়ঃপ্রণালীর সঙ্গে যুক্ত নয়, যদিও পয়ঃপ্রণালীতে ছিদ্র থাকার ফলে বন্যার সময় মাঝেমাঝে স্টর্ম-সোয়ারেজ ও প্রধান পয়ঃপ্রণালির বর্জ্যের মিশ্রণ ঘটে। দেশের অন্যান্য শহরের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাও রাজধানীর অনুরূপ পরিকল্পিত, তবে সেগুলি ততটা বিস্তৃত নয় এবং পরিচালনাও তেমন উন্নত নয়। [জিয়া উদ্দিন আহমেদ]