পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড
পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড ২০১৩ সালের ৩ জুন তারিখে দি ফার্মারস ব্যাংক নামে যাত্রা শুরু করে। তবে মূলধন ও তারল্য সংকট এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির প্রেক্ষাপটে এই চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকটি নাম পরিবর্তন করে পদ্মা ব্যাংক নামে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ হতে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরু করে। রাষ্ট্রীয় খাতের চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংক (সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, ও রূপালী ব্যাংক লিমিটেড), এবং একটি রাষ্ট্র-মালিকানাধীন অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ)-এই ব্যাংকটিতে মূলধন যোগান দেয় এবং তাদের সম্মিলিত মালিকানার অংশ এখন ৬৮ শতাংশ যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অভূতপূর্ব ঘটনা। ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় ঢাকা মহানগরীর গুলশান-১ এলাকায় অবস্থিত। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাংকটির ৫৭টি শাখা এবং ১,২০০ জন কর্মচারী ছিল।
২০১৯ সালে সমগ্র ব্যাংকিং খাতের মধ্যে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের আমানতের হিস্যা ছিল ০.৪ শতাংশ; ঋণ ও অগ্রিমের ক্ষেত্রে এই অনুপাত ছিল ০.৫ শতাংশ। সে বছর ব্যাংকটির আমানত ৮.৮৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৪৮,৫৭৭ মিলিয়ন টাকায়। অন্যদিকে ঋণ ও অগ্রিম ৩.২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৫৫,৩৬৫ মিলিয়ন টাকা। এ সময়ে ঋণ ও আমানতের সুদহারের গড় ব্যবধান ছিল ১.৯৬ শতাংশ। ব্যাংকটি সে বছর কোনো তারল্য সংকটে ভোগেনি। তবে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প এবং কৃষি খাতে ২০১৯ সালে কোনো ঋণ বিতরণ করা হয় নাই। সে বছর ব্যাংকটির মাধ্যমে আসা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ৭৮৮.৭০ মিলিয়ন টাকা। অন্যদিকে সি.এস.আর (কর্পোরেট সোশ্যাল রিসপন্সিবিলিটি) খাতে ব্যয় হয়েছিল ২৮.৮ মিলিয়ন টাকা।
২০১৯ সালের শেষে পদ্মা ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ঋণ ও অগ্রিমের খাতওয়ারি পরিস্থিতি ছিল নিম্নরূপ: (ক) চলতি মূলধন অর্থায়ন ৩২.৪%; (খ) ব্যবসা-বাণিজ্য ৪২.৬%; (গ) শিল্প ১৪.৯%; (ঘ) নির্মাণ ৪.৫%; (ঙ) কৃষি, মৎস্য ও বনায়ন ১.৩%; (চ) পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৯%; (ছ) বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সরবরাহ ০.১%; (জ) অন্যান্য ৩.৩%।
পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড শুরু থেকেই সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে, এবং এর সবগুলো শাখাই অনলাইন ব্যাংকিং-এর আওতাধীন। ব্যাংকটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে আছে: বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রিন ব্যাংকিং চর্চার প্রসার, এবং আমানত, ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাংকটি ভবিষ্যতে ঋণের অন্তত ৫ শতাংশ কৃষকদের মধ্যে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যান্য পরিকল্পনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে প্রান্তিক ও বর্গাচাষী এবং শিল্প-উদ্যোক্তা বিশেষত নতুন ও নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণের কর্মসূচি। [হেলাল উদ্দিন আহমেদ]
উৎস ব্যাংকিং অ্যালম্যানাক ২০১৬, ঢাকা: শিক্ষা বিচিত্রা, ডিসেম্বর ২০১৬; আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিবেদন ২০১৮-১৯। ঢাকা: আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, জুন ২০২০; পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের ওয়েবসাইট।