পটুয়াখালী সদর উপজেলা

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৬:২৫, ৬ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))

পটুয়াখালী সদর উপজেলা (পটুয়াখালী জেলা) আয়তন: ৩৬২.৬২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১৪´ থেকে ২২°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১২´ থেকে ৯০°২৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দুমকি উপজেলা, দক্ষিণে গলাচিপা, আমতলী ও বরগুনা উপজেলা, পূর্বে বাউফল ও গলাচিপা উপজেলা, পশ্চিমে মির্জাগঞ্জ উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩২২৭১৩; পুরুষ ১৬৩৫৩৫, মহিলা ১৫৯১৭৮। মুসলিম ২৯৭৮৪২, হিন্দু ২৪৫৮৫, বৌদ্ধ ১৮৫, খ্রিস্টান ৫৫ এবং অন্যান্য ৪৬।

জলাশয় প্রধান নদী: বুড়িশ্বর, গলাচিপা, রাজাগঞ্জ, পটুয়াখালী।

প্রশাসন ১৮৭১ সালে পটুয়াখালী থানা গঠিত হয় এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১২ ১০১ ১২৪ ৬৭২৪১ ২৫৫৪৭২ ৮৯০ ৭০.৭ ৪৮.৪


পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার(%)
২৭.০৩ ২৯ ৬২৬৬৫ ২৩১৮ ৭২.৪৮
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৬.৬৩ ৪৫৭৬ ৬৯০ ৪৫.৪০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আউলিয়াপুর ১০ ৭৩৫৮ ১১৮৯৮ ১২০৮৮ ৪১.৬৭
ইটবাড়ীয়া ২০ ৬৫২৩ ১২০৫০ ১১৫২৩ ৪৯.১৩
কমলাপুর ৪০ ১১৮৭৮ ১৪৭৪১ ১৪৪৯৮ ৩৭.৪৮
কালিকাপুর ৩৩ ৩৫৭৩ ৭২০৪ ৭১৬৯ ৫৩.৫৩
ছোটবিঘাই ১৩ ৬৮৫৭ ৯৭৯৮ ৯৪১৪ ৪৩.৫১
জৈনকাঠী ২৭ ৬১২৯ ৮৬৫১ ৮৯৫৫ ৪৫.৮১
বড়বিঘাই ৩১ ৭০৪৯ ৯৫১৮ ৯৮৮১ ৪৯.৫৫
বদরপুর ১১ ৫৪৪১ ১১৯৫০ ১১৮৩৫ ৫৮.১৬
মরিচবুনিয়া ৭৪ ৬৮৯২ ৯০২১ ৯৪০১ ৪৭.৫৯
মাদারবুনিয়া ৬৭ ৭৬৫২ ১২১০৫ ১২০৫৭ ৫০.৩২
লাউকাঠী ৬১ ৮০৬৬ ১৪২৬০ ১৪৫৪২ ৫৫.৯৩
লোহালিয়া ৫৪ ৭১৩৪ ৮৮৪০ ৮৬৪৭ e৪৭.৮৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ  শ্রীরামপুর মিয়া বাড়ি মসজিদ (১৭ শতক), সদর বড় মসজিদ (১৮ শতক),  ঝোপখালী শিকদার বাড়ির তিনগম্বুজ মসজিদ (১৮ শতক), লোহালিয়া মিয়া বাড়ি (১৯ শতক), বিঘাই মিয়া বাড়ি (১৯ শতক), রাজেশ্বর রায় চৌধুরী ভবন (১৯ শতক)।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল পাকসেনারা পটুয়াখালী আক্রমণ করে। ৬ ডিসেম্বর পটুয়াখালী পাকসেনা মুক্ত হয়। ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পটুয়াখালী সদরে প্রবেশ করে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ৩ (পটুয়াখালী শহরে পুরাতন জেলখানার অভ্যন্তর, নতুন জেলখানার দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে ও তুলাতলিতে); স্মৃতিস্তম্ভ ১ (পুরাতন টাউন হলের সামনে)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৫৭৮, মন্দির ১১৩, গির্জা ১, বৌদ্ধবিহার ২৮, তির্থস্থান ৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শ্রীরামপুর কালে খাঁ মসজিদ (১৭ শতক),  পটুয়াখালী সদর বড় মসজিদ (১৮ শতক), ঝোপখালী শিকদার বাড়ির তিনগম্বুজ মসজিদ (১৮ শতক), লোহালিয়ার জোড়া মসজিদ (১৯ শতক), পটুয়াখালী শহরস্থ বৌদ্ধবিহার।


শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৩.৩%; পুরুষ ৫৮%, মহিলা ৪৮.৬%। কলেজ ১৫, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ২, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৩, কিন্ডার গার্টেন ৩, মাদ্রাসা ১৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পটুয়াখালী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (১৯৫৭), লতিফ মিউনিসিপ্যাল সেমিনারি (১৯১৬), পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ (১৯৬৮), সরকারি জুবিলী হাইস্কুল (১৮৮৭), পটুুয়াখালী টাউন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৬), শ্রীরামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০০), পটুুয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯৪৬), পটুয়াখালী মহিলা সমিতি স্কুল (১৯৫২), ওয়াজেদাবাদ মোস্তাফাভীয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯১৩)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: রূপান্তর, তেঁতুলিয়া, গণদাবী, সাথী; সাপ্তাহিক: পায়রা, পটুয়াখালী, অভিযাত্রী, পটুয়াখালী প্রশিকা; পাক্ষিক: মেঠো বার্তা; অবলুপ্ত সাপ্তাহিক: পল্লীসেবা (১৯৩৪), গ্রামবাংলা, খেলাফত, প্রতিনিধি, জনতা, অভিযাত্রী, তৃষা; পাক্ষিক আন্ধারমানিক; অবলুপ্ত পাক্ষিক: স্বদেশ দর্পণ, পাক্ষিক সৈকত, প্রিয় কাগজ; অবলুপ্ত  মাসিক: চাবুক; সাময়িকী: পটুয়াখালী সমাচার, এক মুঠো সুরভি, অন্বেষা।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান  লাইব্রেরি ৪, ক্লাব ১০৪, মহিলা সমিতি ১, নাট্যদল ২, সিনেমা হল ৪।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৫.৪৪%, অকৃষি শ্রমিক ৬.১৫%, শিল্প ১.০২%, ব্যবসা ১৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.১৫%, চাকরি ১৩.৫৫%, নির্মাণ ২.৭৬%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৯০% এবং অন্যান্য ১০.৬৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭০.৯৯%, ভুূমিহীন ২৯.০১%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, বিভিন্ন প্রকার ডাল, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তামাক, কাউন, চীনা।

প্রধান ফল-ফলাদিব নারিকেল, তাল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৯, গবাদিপশু ৬, হাঁস-মুরগি ২৮।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২১০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৯৩৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা পাটকল, বরফকল, তেলকল, ছাপাখানা, বস্ত্রকল।

কুটিরশিল্প বাঁশশিল্প, বেতের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫০, মেলা ৪। পটুয়াখালী পুরান বাজার এবং ধরান্দীর দেওয়ান শরীফের মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   শুঁটকি মাছ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড  ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৫.৩০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ   পটাস, ফসফরাস, খনিজ লবণ।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯১.৮৫%, পুকুর ৫.৭০%, ট্যাপ ০.৯৭% এবং অন্যান্য ১.৪৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৬.৮৭% (গ্রামে ১৫.১৯% ও শহরে ৭৩.২৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৮.১১% (গ্রামে ৭৯.২৮% ও শহরে ২৩.৭৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.০২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সদর হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, চক্ষু হাসপাতাল ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র ১৪, বক্ষব্যাধি ক্লিনিক ১, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, পারিবারিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১, ক্লিনিক ৬, কমিউনিটি ক্লিনিক ৩২।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮২২, ১৯৬০ ও ১৯৬১ সালের প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় এবং ১৮৭৬ সালের বন্যায় বহু লোকের প্রাণহানি ঘটে এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও প্রশিকা, ব্র্যাক, কেয়ার, আশা।

[ইফফাত জেরীন]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; পটুয়াখালী সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।