নোয়াখালী জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''নোয়াখালী জেলা''' ([[চট্টগ্রাম বিভাগ|চট্টগ্রাম বিভাগ]])  আয়তন: ৩৬০০.৯৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°০৭' থেকে ২৩°০৮' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৩' থেকে ৯১°২৭' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলা, দক্ষিণে মেঘনার মোহনা ও বঙ্গোপসাগর, পূর্বে ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা, পশ্চিমে লক্ষ্মীপুর ও ভোলা জেলা।  
'''নোয়াখালী জেলা''' ([[চট্টগ্রাম বিভাগ|চট্টগ্রাম বিভাগ]])  আয়তন: ৩৬৮৫.৮৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°০৭' থেকে ২৩°০৮' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৩' থেকে ৯১°২৭' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলা, দক্ষিণে মেঘনার মোহনা ও বঙ্গোপসাগর, পূর্বে ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা, পশ্চিমে লক্ষ্মীপুর ও ভোলা জেলা।  


''জনসংখ্যা''  ২৬৪০২২৭; পুরুষ ১৩১৩৪৭০, মহিলা ১৩২৬৭৫৭। মুসলিম ৫৪৯৭০২, হিন্দু ১৪৮৩৩৯, বৌদ্ধ ১৮৬, খ্রিস্টান ২১ এবং অন্যান্য ১৯৯।
''জনসংখ্যা''  ৩১০৮০৮৩; পুরুষ ১৪৮৫১৬৯, মহিলা ১৬২২৯১৪। মুসলিম ২৯৬৫৯৫০, হিন্দু ১৪০৫৪১, বৌদ্ধ ৫৫৮, খ্রিস্টান ৯৩৪ এবং অন্যান্য ১০০।


''জলাশয়''  মেঘনা নদী, সন্দ্বীপ চ্যানেল, হাতিয়া চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।  
''জলাশয়''  মেঘনা নদী, সন্দ্বীপ চ্যানেল, হাতিয়া চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।  
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  
| শহর  || গ্রাম  
|-   
|-   
| ৩৬০০.৯৯ || ৯ || || ৮৬ || ৯১৪ || ৯৭৭ || ৩৭৬৯০১ || ২২৬৩৩২৬ || ৭১৫ || ৫২.৩২
| ৩৬৮৫.৮৭ || ৯ || || ৯১ || ৮৮২ || ৯৬৭ || ৪৯৬৭০০ || ২৬১১৩৮৩ || ৮৪৩ || ৫১.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| উপজেলা নাম  || আয়তন (বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| উপজেলা নাম  || আয়তন (বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-  
|-  
| কবিরহাট || ১৮৯.৯৪  || ১ || ৭ || ৬৭  || ৬৭  || ১৬৭২৭০  || ৮৮১  || ৫৫.৮৩
| কবিরহাট || ১৮৫.২৫ || ১ || ৭ || ৬৮ || ৬৮ || ১৯৬৯৪৪ || ১০৬৩ || ৪৯.
|-  
|-
| কোম্পানীগঞ্জ || ৩০৫.৩৩  || ১ || ৮ || ৩৫  || ৪৪  || ২১৪৬৫২  || ৭০৩  || ৪৯.৬৪
| কোম্পানীগঞ্জ || ৩৮০.৯৫ || ১ || ৮ || ৩৬ || ৪৫ || ৫০৫৭৯ || ১৭০৪ || ৫১.
|-  
|-
| চাটখিল || ১৩৩.৮৯ || ১ || ৯ || ১১৬  || ১২৯ || ২১৫৩৯১  || ১৬০৯  || ৬৫.৮০
| চাটখিল || ১৩৩.৮৯ || ১ || ৯ || ১০৮ || ১২৯ || ২৩৩২৫৩ || ১৭৪২ || ৬৫.
|-  
|-
| নোয়াখালী সদর || ৫৫২.৪৬  || ১ || ১০  || ১৭৭  || ১৬৩  || ৪২৬৬৪২  || ৭৭২  || ৫৯.৯০
| নোয়াখালী সদর || ৩৩৬.০৬ || ১ || ১৩ || ১৬৬ || ১৭৩ || ৫২৫৯৩৪ || ১৫৬৫ || ৫১.
|-  
|-
| বেগমগঞ্জ || ৪২৬.০৫  || ১ || ১৬ || ১৭৮ || ৩৪৭  || ৫২০১১৪  || ১৮০১  || ৫৬.২২
| বেগমগঞ্জ || ২৩৮.৩৭ || ১ || ১৬ || ১৭৮ || ১৮৪ || ৫৪৯৩০৮ || ২৩০৪ || ৫৯.
|-  
|-
| সেনবাগ || ১৫৫.৮৩  || || ৯ || ৯৯  || ১১১  || ২৭২১৩৩  || ১৭৪৬  || ৫৬.৯৪
| সেনবাগ || ১৫৯.৩৬ || || ৯ || ৯৭ || ১০৫ || ২৮২৮৯৪ || ১৭৭৫ || ৫৬.
|-  
|-
| সুবর্ণচর || ৩২৯.২৬  || - || ৭  || ৪২  || ৫৪  || ১৯২০০৩  || ৫৮৩  || ৩২.৮৩
| সুবর্ণচর || ৫৭৫.৪৭ || - || || ৫২ || ৫৩ || ২৮৯৫১৪ || ৫০৩ || ৩২.
|-  
|-
| সোনাইমুড়ি || ১৭০.৪২  || ১ || ১০ || ১৪৮  || ১৪২  || ২৯০৮৪৬  || ১৭০৭  || ৫৫.৭৭
| সোনাইমুড়ি || ১৬৯.১৪ || ১ || ১০ || ১৩৩ || ১৪৮ || ৩২৭১৯৪ || ১৯৩৪ || ৬১.
|-  
|-
| হাতিয়া || ১৫০৮.২৩  || || ১০  || ৫২  || ৬২ || ৩৪১১৭৬  || ২২৬  || ৩৭.৯৬
| হাতিয়া || ১৫০৭.৩৫ || || ১১ || ৪৪ || ৬২ || ৪৫২৪৬৩ || ৩০০ || ৩৪.
|}
|}


''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:NoakhaliDistrict.jpg|thumb|400px]]
[[Image:NoakhaliDistrict.jpg|thumb|400px]]
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি''  ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল পাকবাহিনী নোয়াখালী জেলা সদর উপজেলায় প্রবেশ করে। ১১ মে পাকবাহিনী হাতিয়া শহর আক্রমণ করে। তারা এ উপজেলার আফাজিয়া বাজারে ৬ জনকে এবং ওছখালি বাজারে ২ জনকে গুলি করে হত্যা করে। ১৫ জুন জেলার সোনাপুর আহমদিয়া মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৮ জুন পাকবাহিনী সদর উপজেলার সোনাপুর এলাকার শ্রীপুর গ্রামে ৭০ জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ২ জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা বেগমগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করে। ১৯ আগস্ট পাকবাহিনী বেগমগঞ্জের গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াহাট বাজারে মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোককে হত্যা করে। ৪ সেপ্টেম্বর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বাঞ্ছারাম রোডের স্লুইসগেটের পূর্বপাশে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরবর্তীতে এ উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি খন্ড লড়াইয়ে সদর বিএলএফ কমান্ডার অহিদুর রহমান অদুদসহ ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৭ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা কবিরহাট উপজেলার রাজাকার জলিলের বাড়িতে হামলা করলে জলিলসহ তার কয়েকজন সহযোগী নিহত হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা সেনবাগ উপজেলার ডোমনাকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থিত পাকবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণ করে। উক্ত লড়াইয়ে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন''  গণকবর ১ (কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ১৪ নং স্লুইসগেট সংলগ্ন এলাকা); স্মৃতিস্তম্ভ ৩ (বেগমগঞ্জের চৌমুহনী, সোনাইমুড়ির সোনাপুর এবং নোয়াখালী জেলা সদরের পিটিআই প্রাঙ্গণ); বধ্যভূমি ১ (কবিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের ডোবা)।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল পাকবাহিনী নোয়াখালী জেলা সদর উপজেলায় প্রবেশ করে। ১১ মে পাকবাহিনী হাতিয়া শহর আক্রমণ করে। তারা এ উপজেলার আফাজিয়া বাজারে ৬ জনকে এবং উছখালি বাজারে ২ জনকে গুলি করে হত্যা করে। ১৫ জুন জেলার সোনাপুর আহমদিয়া মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৮ জুন পাকবাহিনী সদর উপজেলার সোনাপুর এলাকার শ্রীপুর গ্রামে ৭০ জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ২ জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা বেগমগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করে। ১৯ আগস্ট পাকবাহিনী বেগমগঞ্জের গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াহাট বাজারে মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোককে হত্যা করে। ৪ সেপ্টেম্বর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বাঞ্ছারাম রোডের স্লুইসগেটের পূর্বপাশে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরবর্তীতে এ উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি খণ্ড লড়াইয়ে সদর বিএলএফ কমান্ডার অহিদুর রহমান অদুদসহ ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৭ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা কবিরহাট উপজেলার রাজাকার জলিলের বাড়িতে হামলা করলে জলিলসহ তার কয়েকজন সহযোগী নিহত হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা সেনবাগ উপজেলার ডোমনাকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থিত পাকবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণ করে। উক্ত লড়াইয়ে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ১৪নং স্লুইসগেট সংলগ্ন এলাকায় ১টি গণকবর এবং কবিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের ডোবায় ১টি বধ্যভূমি রয়েছে; বেগমগঞ্জের চৌমুহনী, সোনাইমুড়ির সোনাপুর এবং নোয়াখালী জেলা সদরের পিটিআই প্রাঙ্গণে ৩টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ, শহীদ মেজর মেজবাহউদ্দীন ও শহীদ জসীমউদ্দীনের নামে ৩টি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৫১.%; পুরুষ ৫৩.%, মহিলা ৪৯.%। কলেজ ৩৪, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ২, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ১, পুলিশ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, মেডিকেল ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৭৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৬৬, মাদ্রাসা ১৬১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নোয়াখালী সরকারি কলেজ (১৯৬৩), বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৭), ব্রাদার আন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৭), আহমদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৬), বসুরহাট এএইচসি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), হাতিয়া মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), অরুণচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), বামনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪, কোম্পানীগঞ্জ), বজরা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৪), কবিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৮), পৌরকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), নোয়াখালী জেলা স্কুল (১৮৫৩), বামনী আছিরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯১৫), বসুরহাট ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯২৩)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫১.%; পুরুষ ৫১.%, মহিলা ৫১.%। কলেজ ৩৪, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ২, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ১, পুলিশ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, মেডিকেল ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৭৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৬৬, মাদ্রাসা ১৬১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নোয়াখালী সরকারি কলেজ (১৯৬৩), বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৭), ব্রাদার আন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৭), আহমদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৬), বসুরহাট এএইচসি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), হাতিয়া মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), অরুণচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), বামনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪, কোম্পানীগঞ্জ), বজরা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৪), কবিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৮), পৌরকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), নোয়াখালী জেলা স্কুল (১৮৫৩), বামনী আছিরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯১৫), বসুরহাট ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯২৩)।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস''  কৃষি ৪০.৬২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৪৩%, শিল্প ০.৮৪%, ব্যবসা ১৪.৭৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৮৩%, নির্মাণ ১.৪৯%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৯%, চাকরি ১৬.১১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৭.৯৭% এবং অন্যান্য ১০.৫৮%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস''  কৃষি ৪০.৬২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৪৩%, শিল্প ০.৮৪%, ব্যবসা ১৪.৭৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৮৩%, নির্মাণ ১.৪৯%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৯%, চাকরি ১৬.১১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৭.৯৭% এবং অন্যান্য ১০.৫৮%।
৬০ নং লাইন: ৫৯ নং লাইন:
''আরো দেখুন''  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
''আরো দেখুন''  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নোয়াখালী জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; নোয়াখালী জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নোয়াখালী জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; নোয়াখালী জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।


[[en:Noakhali District]]
[[en:Noakhali District]]

০২:০৭, ৩০ মে ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

নোয়াখালী জেলা (চট্টগ্রাম বিভাগ)  আয়তন: ৩৬৮৫.৮৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°০৭' থেকে ২৩°০৮' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৩' থেকে ৯১°২৭' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলা, দক্ষিণে মেঘনার মোহনা ও বঙ্গোপসাগর, পূর্বে ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা, পশ্চিমে লক্ষ্মীপুর ও ভোলা জেলা।

জনসংখ্যা  ৩১০৮০৮৩; পুরুষ ১৪৮৫১৬৯, মহিলা ১৬২২৯১৪। মুসলিম ২৯৬৫৯৫০, হিন্দু ১৪০৫৪১, বৌদ্ধ ৫৫৮, খ্রিস্টান ৯৩৪ এবং অন্যান্য ১০০।

জলাশয়  মেঘনা নদী, সন্দ্বীপ চ্যানেল, হাতিয়া চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন  ১৮২১ সালে নোয়াখালী জেলা ভুলুয়া জেলা নামে পরিচিত ছিল। ১৮৬৮ সালে এ জেলার নোয়াখালী নামকরণ হয়।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
৩৬৮৫.৮৭ ৯১ ৮৮২ ৯৬৭ ৪৯৬৭০০ ২৬১১৩৮৩ ৮৪৩ ৫১.৩
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলা নাম আয়তন (বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
কবিরহাট ১৮৫.২৫ ৬৮ ৬৮ ১৯৬৯৪৪ ১০৬৩ ৪৯.০
কোম্পানীগঞ্জ ৩৮০.৯৫ ৩৬ ৪৫ ৫০৫৭৯ ১৭০৪ ৫১.৩
চাটখিল ১৩৩.৮৯ ১০৮ ১২৯ ২৩৩২৫৩ ১৭৪২ ৬৫.৬
নোয়াখালী সদর ৩৩৬.০৬ ১৩ ১৬৬ ১৭৩ ৫২৫৯৩৪ ১৫৬৫ ৫১.৭
বেগমগঞ্জ ২৩৮.৩৭ ১৬ ১৭৮ ১৮৪ ৫৪৯৩০৮ ২৩০৪ ৫৯.৩
সেনবাগ ১৫৯.৩৬ ৯৭ ১০৫ ২৮২৮৯৪ ১৭৭৫ ৫৬.৭
সুবর্ণচর ৫৭৫.৪৭ - ৫২ ৫৩ ২৮৯৫১৪ ৫০৩ ৩২.৭
সোনাইমুড়ি ১৬৯.১৪ ১০ ১৩৩ ১৪৮ ৩২৭১৯৪ ১৯৩৪ ৬১.০
হাতিয়া ১৫০৭.৩৫ ১১ ৪৪ ৬২ ৪৫২৪৬৩ ৩০০ ৩৪.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল পাকবাহিনী নোয়াখালী জেলা সদর উপজেলায় প্রবেশ করে। ১১ মে পাকবাহিনী হাতিয়া শহর আক্রমণ করে। তারা এ উপজেলার আফাজিয়া বাজারে ৬ জনকে এবং উছখালি বাজারে ২ জনকে গুলি করে হত্যা করে। ১৫ জুন জেলার সোনাপুর আহমদিয়া মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৮ জুন পাকবাহিনী সদর উপজেলার সোনাপুর এলাকার শ্রীপুর গ্রামে ৭০ জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ২ জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা বেগমগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করে। ১৯ আগস্ট পাকবাহিনী বেগমগঞ্জের গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াহাট বাজারে মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোককে হত্যা করে। ৪ সেপ্টেম্বর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বাঞ্ছারাম রোডের স্লুইসগেটের পূর্বপাশে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরবর্তীতে এ উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি খণ্ড লড়াইয়ে সদর বিএলএফ কমান্ডার অহিদুর রহমান অদুদসহ ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৭ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা কবিরহাট উপজেলার রাজাকার জলিলের বাড়িতে হামলা করলে জলিলসহ তার কয়েকজন সহযোগী নিহত হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা সেনবাগ উপজেলার ডোমনাকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থিত পাকবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণ করে। উক্ত লড়াইয়ে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ১৪নং স্লুইসগেট সংলগ্ন এলাকায় ১টি গণকবর এবং কবিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের ডোবায় ১টি বধ্যভূমি রয়েছে; বেগমগঞ্জের চৌমুহনী, সোনাইমুড়ির সোনাপুর এবং নোয়াখালী জেলা সদরের পিটিআই প্রাঙ্গণে ৩টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ, শহীদ মেজর মেজবাহউদ্দীন ও শহীদ জসীমউদ্দীনের নামে ৩টি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫১.৩%; পুরুষ ৫১.৪%, মহিলা ৫১.২%। কলেজ ৩৪, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ২, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ১, পুলিশ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, মেডিকেল ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৭৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৬৬, মাদ্রাসা ১৬১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নোয়াখালী সরকারি কলেজ (১৯৬৩), বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৭), ব্রাদার আন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৭), আহমদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৬), বসুরহাট এএইচসি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), হাতিয়া মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), অরুণচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), বামনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪, কোম্পানীগঞ্জ), বজরা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৪), কবিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৮), পৌরকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), নোয়াখালী জেলা স্কুল (১৮৫৩), বামনী আছিরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯১৫), বসুরহাট ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯২৩)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস  কৃষি ৪০.৬২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৪৩%, শিল্প ০.৮৪%, ব্যবসা ১৪.৭৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৮৩%, নির্মাণ ১.৪৯%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৯%, চাকরি ১৬.১১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৭.৯৭% এবং অন্যান্য ১০.৫৮%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  দৈনিক: জাতীয় নিশান (১৯৮০), নোয়াখালী বার্তা (১৯৯১), চাটখিল বার্তা, জাতীয় বাংলাদেশ,  জাতীয় নূর; সাপ্তাহিক: জাতীয় বাংলাদেশ (১৯৬৯-৭০), অবয়ব (১৯৮০), আজকের উপমা (১৯৯১), আলিফ, দিশারী, নয়াবার্তা, পূর্বশিখা, নোয়াখালী জেলার খবর। অবলুপ্ত: পূর্ব বঙ্গবাসী (১৮৮৪), মাসিক আশা (১৯০১), নোয়াখালী হিতৈষী (১৯২২), ছোলতান (১৯২৪), তানজিন (১৯২৬), দেশের বাণী (১৯২৭), ত্রিপুরা নোয়াখালী লক্ষ্মী (১৩৪২), নোয়াখালী সম্মিলনী, জাতীয় বাংলাদেশ, উপকূল বার্তা।

লোকসংস্কৃতি  লোককাহিনী, ধাঁধাঁ, প্রবাদ-প্রবচন, খনার বচন, পালাগান, কবিগান, যাত্রা।  [জাহানারা আকতার লিপি]

আরো দেখুন  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নোয়াখালী জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; নোয়াখালী জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।