নেত্রকোনা সদর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''নেত্রকোনা সদর উপজেলা''' ([[নেত্রকোনা জেলা|নেত্রকোনা জেলা]])  আয়তন: ৩৪০.৩৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৭´ থেকে ২৪°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৮´ থেকে ৯০°৫০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) ও কলমাকান্দা উপজেলা, দক্ষিণে কেন্দুয়া ও গৌরীপুর উপজেলা, পূর্বে বারহাট্টা ও আটপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে পূর্বধলা উপজেলা।
'''নেত্রকোনা সদর উপজেলা''' ([[নেত্রকোনা জেলা|নেত্রকোনা জেলা]])  আয়তন: ৩৪১.৭১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৭´ থেকে ২৪°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৮´ থেকে ৯০°৫০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) ও কলমাকান্দা উপজেলা, দক্ষিণে কেন্দুয়া ও গৌরীপুর উপজেলা, পূর্বে বারহাট্টা ও আটপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে পূর্বধলা উপজেলা।


''জনসংখ্যা''  ৩২৯৭৩২; পুরুষ ১৬৮৮২২, মহিলা ১৬০৯১০। মুসলিম ২৯৬৮৬০, হিন্দু ৩২৩২০, বৌদ্ধ ১০২, খ্রিস্টান ২১ এবং অন্যান্য ৪২৯।
''জনসংখ্যা''  ৩৭২৭৮৫; পুরুষ ১৮৭০২৬, মহিলা ১৮৫৭৫৯। মুসলিম ৩৩৬৭৫৪, হিন্দু ৩৫৮১৯, বৌদ্ধ ১২, খ্রিস্টান ১০৩ এবং অন্যান্য ৯৭।


''জলাশয়''  কংস নদী, মগরা নদী, তেওরাখালী নদী, লাওরী নদী, ধুপিখালী নদী এবং বোয়ালিয়া বিল, হাতলি বিল ও মেঘা বিল উল্লেখযোগ্য।  
''জলাশয়''  কংস নদী, মগরা নদী, তেওরাখালী নদী, লাওরী নদী, ধুপিখালী নদী এবং বোয়ালিয়া বিল, হাতলি বিল ও মেঘা বিল উল্লেখযোগ্য।  
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ১২ || ২৭৫ || ৩৪৩ || ৫৬৭৮৬ || ২৭২৯৪৬ || ৯৬৯ || ৬৬.|| ৩৯.
| ১ || ১২ || ২৫৫ || ৩৩২ || ৯১৯৩৬ || ২৮০৮৪৯ || ১০৯১ || ৬৭.|| ৩৮.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
|-
|-
| ২১.১১ ||৯ || ৩৩ || ৫৬৭৮৬ || ২৬৯০ || ৬৬.
| ২৯.৩৯ || ৯ || ৫১ || ৯১৯৩৬ || ৩১২৮ || ৬৭.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৪ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-
|-
| আমতলা ১৩ || ৬৫৮৯ || ১০৬৭৭ || ১০৫৮৭  || ৩৫.৭৪
| আমতলা ১৩ || ৬৫৮৯ || ১১৩৮১ || ১১৪৫৯ || ৩৭.
|-
|-
| কাইলাটী ৩১ || ৬৬৫৮  || ১৬১৫৯ || ১৪৮৫৯  || ৫৬.০০
| কাইলাটী ৩১ || ৫৪৮১ || ১১৬৩২ || ১১৪০০ || ৪৪.
|-
|-
| কালিয়ারা গবরাঘাট ৩৯ || ৯৫১৯ || ১৩৪৮৭ || ১৩০১২  || ২৮.৮০
| কালিয়ারা গবরাঘাট ৩৯ || ৯৫১৯ || ১৪৫৮৫ || ১৪৭৬২ || ৩০.
|-
|-
| চল্লিশা ১৫ || ৬৩৩৭  || ১১৫৩৯ || ১১২০৯  || ৪৯.৭০
| চল্লিশা ১৫ || ৬৫৮২ || ১৩০৮৮ || ১৩০৭৬ || ৪৫.
|-
|-
| ঠাকুরাকোণা ৯৪ || ৭৫৪৯ || ১২১৩৪ || ১১৫৬৯  || ৪৬.৭১
| ঠাকুরাকোণা ৯৪ || ৭৫৪৯ || ১২১৪০ || ১২২০৪ || ৪৪.
|-
|-
| দক্ষিণ বিশিউড়া ২৩ || ৫৫৭০ || ৯৩৮২ || ৯১২৯  || ৩২.৯০
| দক্ষিণ বিশিউড়া ২৩ || ৫৫৭০ || ৯৭৯৯ || ৯৮৮২ || ৩৭.
|-
|-
| মদনপুর ৫৪ || ৫৪৪৩  || ৯৭৮১ || ৯৭৭৪  || ৩৬.৩৬
| মদনপুর ৫৪ || ৫৫২৩ || ১০০৭৩ || ১০১৫১ || ৩৯.
|-
|-
| মেদনী ৫৫ || ৬১৮০  || ১২৫৮১ || ১২০৭২  || ৩৬.৩৭
| মেদনী ৫৫ || ৫৮৯৭ || ১২৯৮৫ || ১২৮৬৩ || ৩৭.
|-
|-
| মৌগাতী ৬৩ || ৬৮৩১ || ১০৯৬৬ || ১০৩৪১  || ৩৫.৩৩
| মৌগাতী ৬৩ || ৬৮৩১ || ১১২৫১ || ১১৩৩২ || ২৮.
|-
|-
| রৌহা ৭৯ || ৬৩৮৯  || ১২৩৬৭ || ১১৬৬৫  || ৪০.১১
| রৌহা ৭৯ || ৫৮৭৪ || ১২৩৯৩ || ১২৫১১ || ৩৪.
|-
|-
| লক্ষ্মীগঞ্জ ৪৭ || ৫৪৭১  || ৮৮৩১ || ৮৬৮৬  || ৩৩.৮৫
| লক্ষ্মীগঞ্জ ৪৭ || ৫৪৮৩ || ৮৮৭৮ || ৯০৬১ || ৪১.
|-
|-
| সিংহের বাংলা ৮৭ || ৬৩৭৭  || ১১৩০৩ || ১০৮৩৬  || ৩৭.৯৮
| সিংহের বাংলা ৮৭ || ৬২৭৮ || ১১৯২৩ || ১২০২০ || ৪৩.
|}
|}


''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ''  হযরত শাহ সুলতান কমরুদ্দিন রুমীর (রা.) মাযার (মদনপুর)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ''  হযরত শাহ সুলতান কমরুদ্দিন রুমীর (রা.) মাযার (মদনপুর)।


[[Image:NetrokonaSadar.jpg|thumb|400px]]
[[Image:NetrokonaSadar.jpg|thumb|400px]]
''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি''  ১৯৩৯ সালের ১৫ মার্চ নেত্রকোনা সদরের মেথরপট্টি মাঠে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু এক জনসভায় বক্তৃতা করেন। ১৯৪৫ সালের ৮, ৯ ও ১০ এপ্রিল নেত্রকোনা পাড়ার মাঠে সর্বভারতীয় কৃষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল পাকবাহিনী সদরের  ৪ জনকে ধরে নিয়ে পূর্বধলা সড়কের ত্রিমোহনী ব্রিজে গুলি করে হত্যা করে। ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোণা সদরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ উপজেলার কৃষিফার্মে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীদের লড়াইয়ে পাকসেনারা পরাজিত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
''ঐতিহাসিক ঘটনা'' ১৯৩৯ সালের ১৫ মার্চ নেত্রকোনা সদরের মেথরপট্টি মাঠে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু এক জনসভায় বক্তৃতা করেন। ১৯৪৫ সালের ৮, ৯ ও ১০ এপ্রিল নেত্রকোনা পাড়ার মাঠে সর্বভারতীয় কৃষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।  


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন''  স্মৃতিস্তম্ভ ৩।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল পাকবাহিনী সদরের  ৪ জনকে ধরে নিয়ে পূর্বধলা সড়কের ত্রিমোহনী ব্রিজে গুলি করে হত্যা করে। ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা সদরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ উপজেলার কৃষিফার্মে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীদের লড়াইয়ে পাকসেনারা পরাজিত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উপজেলায় ৩টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৩১৫, মন্দির ৩৫, মাযার ৫।
''বিস্তারিত দেখুন''  নেত্রকোনা সদর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৪৪.%; পুরুষ ৪৮.%, মহিলা ৪১.%। কলেজ ৫, ল’কলেজ ১, হোমিওপ্যাথি কলেজ ১, পিটিআই ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২২০, এজিও স্কুল ১২০, মাদ্রাসা ৩৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নেত্রকোনা সরকারি কলেজ, নেত্রকোনা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৯), চন্দ্রনাথ হাই স্কুল (১৯০৯), আঞ্জুমান হাই স্কুল (১৯১৪), নেত্রকোনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯)।  
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৩০৯, মন্দির ৩২, মাযার ৫।
 
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৬.%; পুরুষ ৪৮.%, মহিলা ৪৩.%। কলেজ ৫, ল’কলেজ ১, হোমিওপ্যাথি কলেজ ১, পিটিআই ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২২০, এজিও স্কুল ১২০, মাদ্রাসা ৩৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নেত্রকোনা সরকারি কলেজ, নেত্রকোনা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৯), চন্দ্রনাথ হাই স্কুল (১৯০৯), আঞ্জুমান হাই স্কুল (১৯১৪), নেত্রকোনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯)।  


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''  দৈনিক: জননেত্র, বাংলার দর্পণ, দেশকণ্ঠস্বর; সাপ্তাহিক: মুক্তির প্রতীক।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''  দৈনিক: জননেত্র, বাংলার দর্পণ, দেশকণ্ঠস্বর; সাপ্তাহিক: মুক্তির প্রতীক।
৮৮ নং লাইন: ৯০ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার''  এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার''  এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব''  পাকারাস্তা ৭০ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৯৭ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব''  পাকারাস্তা ৮৬.৪৪ কিমি, আধা-পাকা রাস্তা ৫.৪৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬১৩.৯২ কিমি; নৌপথ ৬৫ কিমি, রেলপথ ১৯.০২ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন''  পাল্কি, গরুর গাড়ি, মহিষের গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন''  পাল্কি, গরুর গাড়ি, মহিষের গাড়ি।
১০০ নং লাইন: ১০২ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, পাট।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, পাট।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার''  এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৩.৯০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৪.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৯৩.৯৭%, ট্যাপ .০২%, পুকুর ০.৬১% এবং অন্যান্য .১০%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯০.%, ট্যাপ .% এবং অন্যান্য .%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ২৬.৬৩% (গ্রামে ১৭.১% ও শহরে ৭৪.৬৮%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৬.০৫% (গ্রামে ৫১.৪৬% ও শহরে ১৮.৭৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৭.৩২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।  
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৪৯.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৮.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১২.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  হাসপাতাল ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, স্বাস্থ্য ও পরিবার-কল্যাণ কেন্দ্র ১২, ক্লিনিক ২।  
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  হাসপাতাল ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, স্বাস্থ্য ও পরিবার-কল্যাণ কেন্দ্র ১২, ক্লিনিক ২।  
১১০ নং লাইন: ১১২ নং লাইন:
''এনজিও''  ব্র্যাক, কারিতাস, প্রশিকা, আশা, গণসাহায্য সংস্থা।  [সৈয়দ মারুফুজ্জামান]
''এনজিও''  ব্র্যাক, কারিতাস, প্রশিকা, আশা, গণসাহায্য সংস্থা।  [সৈয়দ মারুফুজ্জামান]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নেত্রকোনা সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নেত্রকোনা সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।




[[en:Netrokona Sadar Upazila]]
[[en:Netrokona Sadar Upazila]]

১৫:২৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

নেত্রকোনা সদর উপজেলা (নেত্রকোনা জেলা)  আয়তন: ৩৪১.৭১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৭´ থেকে ২৪°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৮´ থেকে ৯০°৫০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) ও কলমাকান্দা উপজেলা, দক্ষিণে কেন্দুয়া ও গৌরীপুর উপজেলা, পূর্বে বারহাট্টা ও আটপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে পূর্বধলা উপজেলা।

জনসংখ্যা  ৩৭২৭৮৫; পুরুষ ১৮৭০২৬, মহিলা ১৮৫৭৫৯। মুসলিম ৩৩৬৭৫৪, হিন্দু ৩৫৮১৯, বৌদ্ধ ১২, খ্রিস্টান ১০৩ এবং অন্যান্য ৯৭।

জলাশয়  কংস নদী, মগরা নদী, তেওরাখালী নদী, লাওরী নদী, ধুপিখালী নদী এবং বোয়ালিয়া বিল, হাতলি বিল ও মেঘা বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন  নেত্রকোনা থানা গঠিত হয় ১৮৭৪ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১২ ২৫৫ ৩৩২ ৯১৯৩৬ ২৮০৮৪৯ ১০৯১ ৬৭.১ ৩৮.৭
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৯.৩৯ ৫১ ৯১৯৩৬ ৩১২৮ ৬৭.১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আমতলা ১৩ ৬৫৮৯ ১১৩৮১ ১১৪৫৯ ৩৭.৫
কাইলাটী ৩১ ৫৪৮১ ১১৬৩২ ১১৪০০ ৪৪.৯
কালিয়ারা গবরাঘাট ৩৯ ৯৫১৯ ১৪৫৮৫ ১৪৭৬২ ৩০.২
চল্লিশা ১৫ ৬৫৮২ ১৩০৮৮ ১৩০৭৬ ৪৫.৯
ঠাকুরাকোণা ৯৪ ৭৫৪৯ ১২১৪০ ১২২০৪ ৪৪.৮
দক্ষিণ বিশিউড়া ২৩ ৫৫৭০ ৯৭৯৯ ৯৮৮২ ৩৭.৪
মদনপুর ৫৪ ৫৫২৩ ১০০৭৩ ১০১৫১ ৩৯.৩
মেদনী ৫৫ ৫৮৯৭ ১২৯৮৫ ১২৮৬৩ ৩৭.৩
মৌগাতী ৬৩ ৬৮৩১ ১১২৫১ ১১৩৩২ ২৮.৮
রৌহা ৭৯ ৫৮৭৪ ১২৩৯৩ ১২৫১১ ৩৪.৪
লক্ষ্মীগঞ্জ ৪৭ ৫৪৮৩ ৮৮৭৮ ৯০৬১ ৪১.৪
সিংহের বাংলা ৮৭ ৬২৭৮ ১১৯২৩ ১২০২০ ৪৩.৩

সূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ  হযরত শাহ সুলতান কমরুদ্দিন রুমীর (রা.) মাযার (মদনপুর)।

ঐতিহাসিক ঘটনা ১৯৩৯ সালের ১৫ মার্চ নেত্রকোনা সদরের মেথরপট্টি মাঠে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু এক জনসভায় বক্তৃতা করেন। ১৯৪৫ সালের ৮, ৯ ও ১০ এপ্রিল নেত্রকোনা পাড়ার মাঠে সর্বভারতীয় কৃষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল পাকবাহিনী সদরের ৪ জনকে ধরে নিয়ে পূর্বধলা সড়কের ত্রিমোহনী ব্রিজে গুলি করে হত্যা করে। ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা সদরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ উপজেলার কৃষিফার্মে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীদের লড়াইয়ে পাকসেনারা পরাজিত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উপজেলায় ৩টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন নেত্রকোনা সদর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩০৯, মন্দির ৩২, মাযার ৫।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৬.০ %; পুরুষ ৪৮.২ %, মহিলা ৪৩.৭%। কলেজ ৫, ল’কলেজ ১, হোমিওপ্যাথি কলেজ ১, পিটিআই ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২২০, এজিও স্কুল ১২০, মাদ্রাসা ৩৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নেত্রকোনা সরকারি কলেজ, নেত্রকোনা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৯), চন্দ্রনাথ হাই স্কুল (১৯০৯), আঞ্জুমান হাই স্কুল (১৯১৪), নেত্রকোনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  দৈনিক: জননেত্র, বাংলার দর্পণ, দেশকণ্ঠস্বর; সাপ্তাহিক: মুক্তির প্রতীক।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান  লাইব্রেরি ৩, সিনেমা হল ২, খেলার মাঠ ১৫, নাট্যমঞ্চ ১, নাট্যদল ১০, যাত্রাপার্টি ৮, কমিউনিটি সেন্টার ১২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস  কৃষি ৬০.০৩%, অকৃষি শ্রমিক ৪.১৮%, শিল্প ০.৭৮%, ব্যবসা ১৩.৫১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৪৪%, চাকরি ৭.১৮%, নির্মাণ ১.৬২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৯% এবং অন্যান্য ৭.৭৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা  ভূমিমালিক ৫৬.১৯%, ভূমিহীন ৪৩.৮১%। শহরে ৪৫.৮৪% এবং গ্রামে ৫৮.২৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল  ধান, পাট, ভুট্টা।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  ডাল।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, জাম।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার  এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব  পাকারাস্তা ৮৬.৪৪ কিমি, আধা-পাকা রাস্তা ৫.৪৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬১৩.৯২ কিমি; নৌপথ ৬৫ কিমি, রেলপথ ১৯.০২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন  পাল্কি, গরুর গাড়ি, মহিষের গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা  বরফকল, ফ্লাওয়ার মিল, স’মিল, প্রিন্টিং প্রেস, ওয়েল্ডিং কারখানা, বিড়ি কারখানা।

কুটিরশিল্প  স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা  হাটবাজার ৬০, মেলা ৩। ঠাকুরাকোণা হাট, চুচুয়া হাট, হাটখলা বাজার, শিমুলকান্দি বাজার, চল্লিশা বাজার, দক্ষিণ বিশিউড়া বাজার, মদনপুর বাজার, লক্ষ্মীগঞ্জ বাজার, আমতলা বাজার এবং পৌষ মেলা (মদনপুর) ও বাউল মেলা (নেত্রকোনা শহর) উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  ধান, পাট।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৪.২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯০.৫%, ট্যাপ ২.৫% এবং অন্যান্য ৭.০%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৯.৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৮.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১২.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র  হাসপাতাল ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, স্বাস্থ্য ও পরিবার-কল্যাণ কেন্দ্র ১২, ক্লিনিক ২।

এনজিও  ব্র্যাক, কারিতাস, প্রশিকা, আশা, গণসাহায্য সংস্থা।  [সৈয়দ মারুফুজ্জামান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নেত্রকোনা সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।