নাসিরনগর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৬৫ নং লাইন: ৬৫ নং লাইন:
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' জগন্নাথ মন্দির (১৯১৭), হিন্দুমন্দির (ফান্দাউক, মুঘল আমল), হরিপুর জমিদার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, উমা ও মহেশ্বরের আলিঙ্গন মূর্তি (বর্তমানে জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত)।  
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' জগন্নাথ মন্দির (১৯১৭), হিন্দুমন্দির (ফান্দাউক, মুঘল আমল), হরিপুর জমিদার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, উমা ও মহেশ্বরের আলিঙ্গন মূর্তি (বর্তমানে জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত)।  


''মুক্তিযুদ্ধ''  ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর উপজেলার কু-া, বোলাকোট, গোকর্ণ ও নাসিরনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পাকবাহিনীর হামলায় বহু লোক নিহত হয়। তুল্লাপাড়া গ্রামের বটতলায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশনে একজন রাজাকারসহ ১৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। ফুলবাড়ীয়া গ্রামে পাকবাহিনীর সাথে লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
''মুক্তিযুদ্ধ''  ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর উপজেলার কুণ্ডা, বোলাকোট, গোকর্ণ ও নাসিরনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পাকবাহিনীর হামলায় বহু লোক নিহত হয়। তুল্লাপাড়া গ্রামের বটতলায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশনে একজন রাজাকারসহ ১৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। ফুলবাড়ীয়া গ্রামে পাকবাহিনীর সাথে লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।


''বিস্তারিত দেখুন''  নাসিরনগর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।
''বিস্তারিত দেখুন''  নাসিরনগর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

১৭:৩৮, ২৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

নাসিরনগর উপজেলা (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা)  আয়তন: ২৯৪.৩৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৫´ থেকে ২৪°১৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০২´ থেকে ৯১°২০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লাখাই ও অষ্টগ্রাম উপজেলা, দক্ষিণে সরাইল ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর উপজেলা, পূর্বে মাধবপুর উপজেলা, পশ্চিমে বাজিতপুর ও অষ্টগ্রাম উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩০৯০১১; পুরুষ ১৫০৫৭৭, মহিলা ১৫৮৪৩৪। মুসলিম ২৫৮৫৯৩, হিন্দু ৫০৩৫১, বৌদ্ধ ৫, খ্রিস্টান ২৪ এবং অন্যান্য ৩৮।

জলাশয় মেঘনা, তিতাস, কুলকুলিয়া, বালভাদ্রা ও হারাল নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ১৮৬০ সালে নাসিরনগর মহকুমা গঠিত হয় এবং ১৮৭৫ সালে নাসিরনগর মহকুমার ব্রাহ্মণবাড়ীয়া মহকুমা নামকরণ হয়। ১৯১০ সালে নাসিরনগর থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালের ১ আগস্ট থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৩ ৯৮ ১২৮ ১৪৯২৮ ২৯৪০৮৩ ১০৫০ ৪৯.২ ৩৪.২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৮.২২ ১৪৯২৮ ৮১৯ ৪৯.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কুণ্ডা ৮০ ৭২৩৭ ১২৩৭৫ ১৩৪০০ ২৮.৩
গুনিয়ক ৬৫ ২৯০৮ ৬৪৩৫ ৬৭৯৮ ২৯.৩
গোকর্ণ ৫৮ ৯৫৬৬ ১৪৭০৫ ১৬৩১১ ৩৬.৮
গোয়ালনগর ৫১ ৬০১৬ ৮৫৬১ ৮৫৭১ ৩৫.৮
চাতালপাড় ২৯ ৫৮৩৯ ২২১১৭ ২১৯৬৯ ৩৮.৮
চাপরতলা ২১ ৩০৩৮ ৭২৫৪ ৮১৪৮ ৩৪.৯
ধরমণ্ডল ৩৬ ৪২৭০ ১০০২২ ১০৫২৪ ২৯.০
নাসিরনগর ৮৭ ৭১২১ ১২৫১৮ ১৩৬৬৩ ৪৭.০
পূর্ববাগ ৯৪ ২১২৫ ৮৮২৪ ৯৩৬০ ৪০.৭
ফান্দাউক ৪৩ ৪৩২৪ ৮১৫০ ৮৫১৭ ৩৩.২
বোলাকোট ১৭ ৭৬৩৯ ১৪২৫০ ১৩৮৬৪ ২৯.৭
বুড়িশ্বর ১৪ ৮২৪০ ১৫০৪২ ১৬১২১ ২৮.৮
হরিপুর ৭৩ ৪৪১৫ ১০৩২৪ ১১১৮৮ ৩৭.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ জগন্নাথ মন্দির (১৯১৭), হিন্দুমন্দির (ফান্দাউক, মুঘল আমল), হরিপুর জমিদার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, উমা ও মহেশ্বরের আলিঙ্গন মূর্তি (বর্তমানে জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর উপজেলার কুণ্ডা, বোলাকোট, গোকর্ণ ও নাসিরনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পাকবাহিনীর হামলায় বহু লোক নিহত হয়। তুল্লাপাড়া গ্রামের বটতলায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশনে একজন রাজাকারসহ ১৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। ফুলবাড়ীয়া গ্রামে পাকবাহিনীর সাথে লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

বিস্তারিত দেখুন নাসিরনগর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৯৮, মন্দির ৩৯, মাযার ৪।  উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কাহেতুরা মসজিদ, নুরপুর বড়বাড়ি মসজিদ, গুনিয়ক বাজার জামে মসজিদ, খান্দুরা মাযার শরীফ, ফান্দাউক দরগা শরীফ, কচুয়া দরবার শরীফ ও দাঁতমন্ডল আজিজিয়া দরবার শরীফ, ফান্দাউকমন্দির, জগন্নাথমন্দির, গৌরমন্দির, গোপীনাথ জিউরমন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৪.৯%; পুরুষ ৩৫.৯%, মহিলা ৩৪.০%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৫, মাদ্রাসা ৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নাসিরনগর মহাবিদ্যালয় (১৯৮৭), গুনিয়ক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৭), চাতালপাড় ওয়াজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০২), ফান্দাউক পন্ডিত রাম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৫), দাঁতমন্ডল এরফানিয়া আলিম মাদ্রাসা (১৯৫০)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী নাসির-নগর বার্তা; ত্রৈমাসিক: সিড়ি।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ১, কমিউনিটি সেন্টার ১, সিনেমা হল ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭১.৮১%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৪৪%, শিল্প ০.৬০, ব্যবসা ১১.৯৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৩৪%, চাকরি ২.৮২%, নির্মাণ ০.৬৬%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৯, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৯৬% এবং অন্যান্য ৬.০৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৪.৪০%, ভূমিহীন ৩৫.৬০%। শহরে ৫১.৯৮% এবং গ্রামে ৬৫.০৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, সরিষা, গম, পান, ডাল, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন, অড়হর, মুগ, মসুরি।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, জাম, কলা, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার  এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬৩.৪৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৯.২৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৪৩.২২ কিমি; নৌপথ ৭০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, ময়দাকল, বরফকল, স’মিল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৬, মেলা ১৩। নাসিরনগর বাজার, ফান্দাউক বাজার, চাতালপাড় বাজার, হরিণবেড় বাজার এবং বৈশাখী মেলা (কুলিকুন্ডা), কার্তিক মেলা (বোলাকোট), অষ্টমী স্নান মেলা (ফান্দাউক), সিদ্বেশরী মেলা (গোকর্ণ) ও  শুটকি মেলা (কুলিকন্ডা) উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, পাট, পান, শুটকি মাছ, সরিষা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৩.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯০.০%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ৯.৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫০.৮% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৪.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পল্লী স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৭১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে চাপরতলা ও চিতনা গ্রাম দুটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয় এবং ১৯৭৪ ও ১৯৮৮ সালের বন্যায় এ অঞ্চল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, সেভ দ্য চিলড্রেন, প্রশিকা। [মো আবুল কাশেম ভূঁইয়া]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নাসিরনগর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।