নানিয়ারচর উপজেলা

নানিয়ারচর উপজেলা (রাঙ্গামাটি জেলা)  আয়তন ৩৯৩.৬৭ বর্গ কিমি। অবস্থান ২২°৪৩´ থেকে ২২°৫৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০২´ থেকে ৯২°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মহালছড়ি, দক্ষিণে রাঙ্গামাটি সদর এবং কাউখালী উপজেলা, পূর্বে লংগদু উপজেলা, পশ্চিমে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা।

জনসংখ্যা ৪৩৬১৬; পুরুষ ২২৫০৭, মহিলা ২১১০৯। মুসলিম ৬২০২, হিন্দু ৮৯৩, বৌদ্ধ ৩৬৩৮৩, খ্রিস্টান ১২৭ এবং অন্যান্য ১১।

জলাশয় এ উপজেলার প্রায় এক পঞ্চমাংশ জুড়ে কাপ্তাই লেকের অংশবিশেষ অবস্থিত।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৯৭৯ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ২০ ১৫৮ ৬১৯২ ৩৭৪২৪ ১১১ ৬৩.৮ ৪৪.৯
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২২.৫০ ৬১৯২ ২৭৫ ৬৩.৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন(একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার(%)
পুরুষ মহিলা
ঘিলাছড়ি ৩৮ ২০৩৯০ ৪৩৮৭ ৪২২০ ৪৭.১
নানিয়ারচর ৫৭ ২৫৪৯৮ ৬৪১০ ৫৭৭০ ৫১.৫
বুড়িঘাট ১৯ ২০৪৮৬ ৬২৬৩ ৫৯২৫ ৪৮.৩
সাবেখিয়ং ৭৬ ২৯৪৯১ ৫৪৪৭ ৫১৯৪ ৪৩.১

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ এ উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর সংঘর্ষে অনেক লোক হতাহত হয়। ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ লড়াইয়ে মুক্তিবাহিনীর ল্যান্স নায়েক বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ শাহাদৎ বরণ করেন। উপজেলায় বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের নামে ১টি স্মৃতিসৌধ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন নানিয়ারচর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৫, মন্দির ২, প্যাগোডা ২৫, বৌদ্ধ বিহার ৩০, গীর্জা ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৭.৭%; পুরুষ ৫৫.৩%, মহিলা ৩৯.৬%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৫।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১৫, মহিলা সংগঠন ৬।

দর্শনীয় স্থান খূল্যাংপাড়া গ্রামে বৌদ্ধ বিহাররে প্রাচীন বুদ্ধমূর্তি।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৮০.৭৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৪৭%, ব্যবসা ৫.৩০%, চাকরি ৩.৬৬%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৯% এবং অন্যান্য ৭.৪৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭৪.২৩%, ভূমিহীন ২৫.৭৭%। শহরে ৬০.৭৯% এবং গ্রামে ৭৬.৬১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আখ, ভুট্টা, ডাল, তুলা, তামাক, আলু।

বিলুপ্ত ফসলাদি  তিল, তিসি।

শিল্প ও কলকারখানা পোশাক শিল্প।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, তরমুজ, আনারস, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৬, গবাদিপশু ১, হাঁস-মুরগি ১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৫৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৭৮ কিমি; নৌপথ ৮০ কিমি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, পোশাক শিল্প, বাঁশ, বেত ও কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫ মেলা ২। বুড়িঘাট বাজার, ঘিলাছড়ি বাজার, বেতছড়ি বাজার ও নানিয়ারচর হাট এবং বইচক্র মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  কাঠ, বাঁশ, কাঁঠাল।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৬.৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৩১.১%, ট্যাপ ০.৫% এবং অন্যান্য ৬৮.৪%। এ উপজেলায় ৩% অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২০.৮% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭৫.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

প্রাকৃতিক সম্পদ ১৯৮২ সালে বুড়িঘাট এলাকায় গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ৪।  [গৌতম চন্দ্র মোদক]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নানিয়ারচর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।