নবাবগঞ্জ উপজেলা (ঢাকা)

নবাবগঞ্জ উপজেলা (ঢাকা জেলা)  আয়তন: ২৪৪.৮০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৪´ থেকে ২৩°৪৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০১´ থেকে ৯০°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সিঙ্গাইর উপজেলা, দক্ষিণে দোহার উপজেলা, পূর্বে কেরানীগঞ্জ, সিরাজদিখাঁন ও শ্রীনগর উপজেলা, পশ্চিমে হরিরামপুর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩১৮৮১১; পুরুষ ১৪৯২৯৮, মহিলা ১৬৯৫১৩। মুসলিম ২৫২৮২০, হিন্দু ৬১০৮৭, খ্রিস্টান ৪৮৭৭ এবং অন্যান্য ২৭।

জলাশয় ইছামতি ও কালীগঙ্গা নদী; আওনার খাল ও ভাঙাভিটা খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন নবাবগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৮৭৪ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৪ ১৮৮ ৩৪২ ১৬৯১৭ ৩০১৮৯৪ ১৩০২ ৬৪.০ ৫৭.৫
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২.৬৮ ১৬৯১৭ ৬৩১২ ৬৪.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আগলা ১১ ৩৭২৪ ৮১০২ ৯০১২ ৫৯.২
কলাকোপা ৭৪ ১৬৭৩ ১১১৩৩ ১১৬১৩ ৬৫.১
কৈলাইল ৬৭ ৮৬৩০ ১৩০৫১ ১৪১৫৪ ৫১.০
গালিমপুর ৪৭ ২০৪৬ ৬০২৪ ৬৯২০ ৬৫.৫
চুড়াইন ৪০ ৫১৬৫ ১০৮৯৬ ১২৩৭৫ ৫৭.৩
জয়কৃষ্ণপুর ৬১ ৪০৯৭ ৭৪৯৬ ৯১৫৭ ৫২.৭
নয়নশ্রী ৮১ ৫৫৩৭ ১২০৪৯ ১৪৭২০ ৬১.৩
বক্স্নগর ১৩ ২০৮৩ ৯৬৬৮ ১০৭৯১ ৬৩.৬
বড়–য়াখালী ৩৩ ২৬০২ ৭৫৫৭ ৮৭৫৮ ৫৬.১
বররা ২৭ ৪২১১ ১২১৩৮ ১৩৫৭৯ ৫৯.২
বান্দুরা ২০ ৩৬৩৮ ১৪০২৮ ১৬০০১ ৬৩.৯
যন্ত্রাইল ৫৪ ৪৭৯৭ ১০৯৯৬ ১২৭৬৮ ৫৫.৫
শিকারীপাড়া ৮৮ ২৮৩৭ ৮০৫৭ ৯৫৬৭ ৫৪.৮
শোল্লা ৯৪ ৯৪৫৯ ১৮১০৩ ২০০৯৮ ৪৯.৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ব্রজনিকেতন, হাসনাবাদ গির্জা, বক্সনগর গির্জা, বাগমারা মঠ, খেলারাম দাদার জমিদার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের সময় নবাবগঞ্জ ২নং সেক্টরের অধীনে ছিল। উপজেলায় বান্দুরা, গালিমপুর, বাহ্রা-কোমরগঞ্জ, আগলা, নবাবগঞ্জ থানা, সৈয়দপুর, আগলা-আন্দারকোঠা প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়।

বিস্তারিত দেখুন নবাবগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৮৫, মন্দির ১৯৫, গির্জা ৬, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হযরত আফাজ উদ্দীন শাহের (র.) মাযার (গালিমপুর)।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৭.৮%; পুরুষ ৫৭.৭%, মহিলা ৫৭.৯%। কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৯, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১৩, মাদ্রাসা ৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বান্দুরা হলিক্রস হাইস্কুল (১৯১২), চুড়াইন তারিনী বামা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৩)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৪৮, কমিউনিটি সেন্টার ১, সংগীত একাডেমি ১, সিনেমা হল ৪, সাংস্কৃতিক সংগঠন ৩, মহিলা সংগঠন ১, থিয়েটার গ্রুপ ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩১.০১%, অকৃষি শ্রমিক ৩.০৭%, শিল্প ৩.৬৮%, ব্যবসা ১২.৯৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৯৫%, চাকরি ১২.২৬%, নির্মাণ ৩.৮২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১৯.৩৬% এবং অন্যান্য ১১.৭৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪২.৪২%, ভূমিহীন ৫৭.৫৮%। শহরে ২৫.৬২% এবং গ্রামে ৪৩.৩২% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল বোরো ধান, আমন ধান, আলু, পাট, সরিষা, ডাল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ ধান, তামাক।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, পেয়ারা, পেঁপে, কাঁঠাল, নারিকেল, লিচু, কলা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৫০, গবাদিপশু ২৪০, হাঁস-মুরগি ১৬৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৩৪ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১১৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭১৬ কিমি; নদীপথ ৩১ কিমি। কালভার্ট ৩, ব্রিজ ৩৭৬।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, সূচিশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪১, মেলা ৪। বৈরাগী পৌষ মেলা (বন্ধনপাড়া) ও আফাজ উদ্দীন শাহের (র:) মেলা (গালিমপুর) উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পাট, তাঁতের শাড়ি ও লুঙ্গি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৮৭.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ আছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.০%, ট্যাপ ১.৬% এবং অন্যান্য ২.৪%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮৭.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১১.৩% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১০, কমিউনিটি ক্লিনিক ২৬, চিকিৎসা কেন্দ্র ২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪।

এনজিও ওয়ার্ল্ড ভিশন, টিএমএমএস, ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা। [মো. আবু হাসান ফারুক]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নবাবগঞ্জ উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।