নবগঙ্গা নদী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''নবগঙ্গা নদী '''(Nabaganga River)  মাথাভাঙ্গা নদীর একটি শাখা, চুয়াডাঙ্গা শহরের কাছে এর উৎপত্তি। মাথাভাঙ্গা থেকে ‘গঙ্গার নবরূপ’ - এভাবে নবগঙ্গার নামকরণ করা হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। চুয়াডাঙ্গার কাছ থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত হওয়ার পর মাগুরাতে কুমার ও নড়াইলের চিত্রা নদীর জলধারাসহ এটি দক্ষিণদিকে প্রবাহিত হয়ে ভৈরব নদীতে পড়েছে। পূর্বে ইছামতীর শাখানদী ছিল, কিন্তু উৎসমুখ ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে ভৈরব নদীর একটি উপনদীতে পরিণত হয়েছে। নদীটি নাব্য এবং জোয়ারভাটা দ্বারা প্রভাবিত। উৎসমুখ থেকে পূর্বদিকে কিছু পথ যাওয়ার পর একটি বিলের মাঝে নবগঙ্গা পথরুদ্ধ হয়ে যায়। ১৯৩০ সালে এ ভরাট মুখের সংস্কার সাধন করা হয়। কিন্তু এ সংস্কারের ফলেও নবগঙ্গার উৎসমুখের কোনো উন্নতি হয় নি। এ স্থানটি গজনভী ঘাট নামে পরিচিত। চুয়াডাঙ্গা এবং ঝিনাইদহ জেলা অতিক্রম করে মাগুরা জেলার কাছে কুমারের সাথে মিশেছে। এখান থেকে নবগঙ্গা কুমার পানিতে সজ্জীবিত হয়। বস্ত্তত মাগুরার পরবর্তী নবগঙ্গা কুমার নদীরই বর্ধিত সংস্করণ।
'''নবগঙ্গা নদী''' (Nabaganga River)  মাথাভাঙ্গা নদীর একটি শাখা, চুয়াডাঙ্গা শহরের কাছে এর উৎপত্তি। মাথাভাঙ্গা থেকে ‘গঙ্গার নবরূপ’ - এভাবে নবগঙ্গার নামকরণ করা হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। চুয়াডাঙ্গার কাছ থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত হওয়ার পর মাগুরাতে কুমার ও নড়াইলের চিত্রা নদীর জলধারাসহ এটি দক্ষিণদিকে প্রবাহিত হয়ে ভৈরব নদীতে পড়েছে। পূর্বে ইছামতীর শাখানদী ছিল, কিন্তু উৎসমুখ ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে ভৈরব নদীর একটি উপনদীতে পরিণত হয়েছে। নদীটি নাব্য এবং জোয়ারভাটা দ্বারা প্রভাবিত। উৎসমুখ থেকে পূর্বদিকে কিছু পথ যাওয়ার পর একটি বিলের মাঝে নবগঙ্গা পথরুদ্ধ হয়ে যায়। ১৯৩০ সালে এ ভরাট মুখের সংস্কার সাধন করা হয়। কিন্তু এ সংস্কারের ফলেও নবগঙ্গার উৎসমুখের কোনো উন্নতি হয় নি। এ স্থানটি গজনভী ঘাট নামে পরিচিত। চুয়াডাঙ্গা এবং ঝিনাইদহ জেলা অতিক্রম করে মাগুরা জেলার কাছে কুমারের সাথে মিশেছে। এখান থেকে নবগঙ্গা কুমার পানিতে সজ্জীবিত হয়। বস্ত্তত মাগুরার পরবর্তী নবগঙ্গা কুমার নদীরই বর্ধিত সংস্করণ।


ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, গড়াই-মধুমতির মূল স্রোতের অধিকাংশই বরদিয়াতে নবগঙ্গা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য ২৩০ কিমি, তন্মধ্যে চুয়াডাঙ্গার অংশ ২৬ কিমি। নবগঙ্গার সম্পূর্ণ যাত্রাপথই অাঁকাবাঁকা, তবে ভাঙনপ্রবণ নয়। চুয়াডাঙ্গা থেকে মাগুরা পর্যন্ত পথ অনাব্য এবং জলজ উদ্ভিদে পরিপূর্ণ। তবে বর্ষা মৌসুমে দুই তিন মাস নৌ চলাচল সম্ভব। মাগুরার নিম্নাঞ্চল সারা বৎসরই নাব্য। মাগুরা পর্যন্ত এ নদীর গড় প্রস্থ ২০০ মিটার এবং পরবর্তী অংশের গড় প্রস্থ ৩০০ মিটার। মাগুরা-পরবর্তী অংশ নিয়মিত জোয়ারভাটা দ্বারা প্রভাবিত; জোয়ারভাটার গড় পরিসর প্রায় ১ মিটার।
ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, গড়াই-মধুমতির মূল স্রোতের অধিকাংশই বরদিয়াতে নবগঙ্গা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য ২৩০ কিমি, তন্মধ্যে চুয়াডাঙ্গার অংশ ২৬ কিমি। নবগঙ্গার সম্পূর্ণ যাত্রাপথই অাঁকাবাঁকা, তবে ভাঙনপ্রবণ নয়। চুয়াডাঙ্গা থেকে মাগুরা পর্যন্ত পথ অনাব্য এবং জলজ উদ্ভিদে পরিপূর্ণ। তবে বর্ষা মৌসুমে দুই তিন মাস নৌ চলাচল সম্ভব। মাগুরার নিম্নাঞ্চল সারা বৎসরই নাব্য। মাগুরা পর্যন্ত এ নদীর গড় প্রস্থ ২০০ মিটার এবং পরবর্তী অংশের গড় প্রস্থ ৩০০ মিটার। মাগুরা-পরবর্তী অংশ নিয়মিত জোয়ারভাটা দ্বারা প্রভাবিত; জোয়ারভাটার গড় পরিসর প্রায় ১ মিটার।
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
চুয়াডাঙ্গা থেকে গাজীরহাট পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে পাম্পের সাহায্যে এ নদীর পানি সেচকার্যে ব্যবহূত হচ্ছে। মাগুরাতে একটি জলকাঠামো তথা সেতু নির্মাণ করে এর সাহায্যে উজান অংশে সেচকার্য পরিচালনা করা হচ্ছে। কালাচাঁদপুর থেকে গাজীরহাট পর্যন্ত নদীর ডানতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতায় এ জলকাঠামো ও বাঁধটি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা থেকে গাজীরহাট পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে পাম্পের সাহায্যে এ নদীর পানি সেচকার্যে ব্যবহূত হচ্ছে। মাগুরাতে একটি জলকাঠামো তথা সেতু নির্মাণ করে এর সাহায্যে উজান অংশে সেচকার্য পরিচালনা করা হচ্ছে। কালাচাঁদপুর থেকে গাজীরহাট পর্যন্ত নদীর ডানতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতায় এ জলকাঠামো ও বাঁধটি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।


চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, বিনোদপুর, সুত্রাজিতপুর, নওহাটা, শিংগিয়া, নলমি, রায়গ্রাম, লক্ষ্মীপাশা, লোহাভাড়া, বরদিয়া, গাজীরহাট প্রভৃতি নদীর তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, বিনোদপুর, সুত্রাজিতপুর, নওহাটা, শিংগিয়া, নলমি, রায়গ্রাম, লক্ষ্মীপাশা, লোহাভাড়া, বরদিয়া, গাজীরহাট প্রভৃতি নদীর তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থান। [তাহমিনা আহমেদ]
 
[তাহ্মিনা আহ্মেদ]
 
<!-- imported from file: নবগঙ্গা নদী.html-->
 
[[en:Nabaganga River]]
 
[[en:Nabaganga River]]


[[en:Nabaganga River]]
[[en:Nabaganga River]]

০৮:৩৯, ১২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

নবগঙ্গা নদী (Nabaganga River)  মাথাভাঙ্গা নদীর একটি শাখা, চুয়াডাঙ্গা শহরের কাছে এর উৎপত্তি। মাথাভাঙ্গা থেকে ‘গঙ্গার নবরূপ’ - এভাবে নবগঙ্গার নামকরণ করা হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। চুয়াডাঙ্গার কাছ থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত হওয়ার পর মাগুরাতে কুমার ও নড়াইলের চিত্রা নদীর জলধারাসহ এটি দক্ষিণদিকে প্রবাহিত হয়ে ভৈরব নদীতে পড়েছে। পূর্বে ইছামতীর শাখানদী ছিল, কিন্তু উৎসমুখ ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে ভৈরব নদীর একটি উপনদীতে পরিণত হয়েছে। নদীটি নাব্য এবং জোয়ারভাটা দ্বারা প্রভাবিত। উৎসমুখ থেকে পূর্বদিকে কিছু পথ যাওয়ার পর একটি বিলের মাঝে নবগঙ্গা পথরুদ্ধ হয়ে যায়। ১৯৩০ সালে এ ভরাট মুখের সংস্কার সাধন করা হয়। কিন্তু এ সংস্কারের ফলেও নবগঙ্গার উৎসমুখের কোনো উন্নতি হয় নি। এ স্থানটি গজনভী ঘাট নামে পরিচিত। চুয়াডাঙ্গা এবং ঝিনাইদহ জেলা অতিক্রম করে মাগুরা জেলার কাছে কুমারের সাথে মিশেছে। এখান থেকে নবগঙ্গা কুমার পানিতে সজ্জীবিত হয়। বস্ত্তত মাগুরার পরবর্তী নবগঙ্গা কুমার নদীরই বর্ধিত সংস্করণ।

ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, গড়াই-মধুমতির মূল স্রোতের অধিকাংশই বরদিয়াতে নবগঙ্গা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য ২৩০ কিমি, তন্মধ্যে চুয়াডাঙ্গার অংশ ২৬ কিমি। নবগঙ্গার সম্পূর্ণ যাত্রাপথই অাঁকাবাঁকা, তবে ভাঙনপ্রবণ নয়। চুয়াডাঙ্গা থেকে মাগুরা পর্যন্ত পথ অনাব্য এবং জলজ উদ্ভিদে পরিপূর্ণ। তবে বর্ষা মৌসুমে দুই তিন মাস নৌ চলাচল সম্ভব। মাগুরার নিম্নাঞ্চল সারা বৎসরই নাব্য। মাগুরা পর্যন্ত এ নদীর গড় প্রস্থ ২০০ মিটার এবং পরবর্তী অংশের গড় প্রস্থ ৩০০ মিটার। মাগুরা-পরবর্তী অংশ নিয়মিত জোয়ারভাটা দ্বারা প্রভাবিত; জোয়ারভাটার গড় পরিসর প্রায় ১ মিটার।

চুয়াডাঙ্গা থেকে গাজীরহাট পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে পাম্পের সাহায্যে এ নদীর পানি সেচকার্যে ব্যবহূত হচ্ছে। মাগুরাতে একটি জলকাঠামো তথা সেতু নির্মাণ করে এর সাহায্যে উজান অংশে সেচকার্য পরিচালনা করা হচ্ছে। কালাচাঁদপুর থেকে গাজীরহাট পর্যন্ত নদীর ডানতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতায় এ জলকাঠামো ও বাঁধটি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, বিনোদপুর, সুত্রাজিতপুর, নওহাটা, শিংগিয়া, নলমি, রায়গ্রাম, লক্ষ্মীপাশা, লোহাভাড়া, বরদিয়া, গাজীরহাট প্রভৃতি নদীর তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থান। [তাহমিনা আহমেদ]