নড়িয়া উপজেলা
নড়িয়া উপজেলা (শরিয়তপুর জেলা) আয়তন: ২০৩.৫৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৪´ থেকে ২৩°২৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৮´ থেকে ৯০°৩০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে জাজিরা, লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলা, দক্ষিণে শরিয়তপুর সদর ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে ভেদরগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে জাজিরা উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৩১৬৪৪; পুরুষ ১০৯৯৬৭, মহিলা ১২১৬৭৭। মুসলিম ২১৯২১৪, হিন্দু ১২৪১০, খ্রিস্টন ৭ এবং অন্যান্য ১৩।
জলাশয় প্রধান নদী: পদ্মা ও পালং। নড়িয়া খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন নড়িয়া থানা গঠিত হয় ১৯৩০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১৪ | ১৩৫ | ১৮৯ | ২২৭৭৩ | ২০৮৮৭১ | ১১৩৮ | ৬০.৫ | ৫০.৮ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
৯.৬৪ | ৯ | ২৭ | ২২৭৭৩ | ২৩৬২ | ৬০.৫ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
কেদারপুর ৬৩ | ২৪৯১ | ৭৪৪৪ | ৮৪০৮ | ৫৪.২ | ||||
ঘরিসার ৫০ | ৬৫২৯ | ১১৯৫৩ | ১৩৩৫২ | ৪৯.৮ | ||||
চর আত্রা ৩১ | ৫৪৭০ | ৩৮৩১ | ৩৯৩২ | ২৭.২ | ||||
চামটা ২৫ | ২৫৬৬ | ৬২০০ | ৭৩৯৮ | ৫৩.৪ | ||||
জপসা ৫৬ | ২৭১২ | ৪৯৬৬ | ৫৫৩২ | ৪৬.২ | ||||
ডিংগা মানিক ৩৭ | ৩৫৪৩ | ১০২১০ | ১১৬৪৮ | ৬২.৯ | ||||
নাসাসান ৮২ | ২০২২ | ৫৬৪৫ | ৫৪৪৫ | ৫০.৫ | ||||
নোয়াপাড়া ৮৮ | ৮৭৪৭ | ৭৮০৯ | ৭৭৪৩ | ২৩.৪ | ||||
ফতেহ জংগপুর ৪৪ | ২১৩৯ | ৫৬২৩ | ৬৪৮৯ | ৫৬.৯ | ||||
বিঝরী ১৮ | ৩১৭৯ | ৬৩৭৯ | ৭৬২৮ | ৬১.৭ | ||||
ভুমখারা ১২ | ২৭২১ | ৬৮৩১ | ৮০৩৪ | ৫৭.১ | ||||
ভোজেশ্বর ১১ | ২৭০৪ | ৮৬৪৭ | ৯৫৯৩ | ৫৮.৫ | ||||
মুক্তারের চর ৬৯ | ৩৭৩৭ | ৭৩৯০ | ৮১৮৮ | ৪৪.৭ | ||||
রাজনগর ৯৪ | ৩৩৭১ | ৬২২০ | ৬৩৩৩ | ৪৫.৪ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রত্মতাক্তিবক নিদর্শন ফতেজঙ্গজপুর দূর্গ উল্লেখযোগ্য।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলার বহুসংখ্যক তরুণ ভারতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। মুক্তিযোদ্ধারা থানা আক্রমণ করে অ¯ত্র লুট করে। পাকবাহিনী এ এলাকায় ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এই উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ সর্দার যুদ্ধে শহীদ হন। উপজেলায় ১টি স্মৃতিসৌধ স্থাপিত হয়েছে।
বিস্তারিত দেখুন নড়িয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৫৭৫, মন্দির ৩৪, মাাযার ৩, মঠ ১, আশ্রম ২, তীর্থস্থান ২।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫১.৮%; পুরুষ ৫১.৭%, মহিলা ৫১.৮%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নড়িয়া বিহারীলাল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), পঞ্চপল্লী জি আর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), বিঝরী উপসী তারা প্রসন্ন উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৮), কার্তিকপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৯), লোনসিং উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৯), মুলফৎগঞ্জ মাদ্রাসা, আহমদ নগর মাদ্রাসা।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ১৫, সংগীত একাডেমি ১, শিশু একাডেমি ১, শিল্পকলা একাডেমি ১, নাট্যমঞ্চ ১, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ২৭।
দর্শনীয় স্থান ফতেজঙ্গজপুর দূর্গ উল্লেখযোগ্য।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৭.৬৩%, অকৃষি শ্রমিক ২.৪৭%, শিল্প ১.৪৪%, ব্যবসা ২০.২৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.২৫%, চাকরি ৭.৫৯%, নির্মাণ ১.২৩%, ধর্মীয় সেবা ০.২৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৬.৭৩% এবং অন্যান্য ৯.১৪%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৭.০৪%, ভূমিহীন ৪২.৯৬%। শহরে ৩৯.৬৮% এবং গ্রামে ৫৮.৭৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, মরিচ, রসুন, পেঁয়াজ, ধনিয়া।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, তিল, চিনা, আমন ধান।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, জাম, খেজুর (দেশী), কুল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৬, হাঁস-মুরগি ৫০।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৪২.৩৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫.৩৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৯১.৫৬ কিমি; নৌপথ ৬ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।
শিল্প ও কলকারখানা চালকল, বরফকল, বিড়িকারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২২, মেলা ৮। ভোজেশ্বর হাট, ঘরিসার হাট, মুলফৎগঞ্জ হাট ও ওয়াপদা হাট উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পাট, ইলিশমাছ, পেঁয়াজ, রসুন।
বিদ্যুৎ ব্যবহার উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫০.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে ।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৪%, ট্যাপ ০.৭% এবং অন্যান্য ৪.৯%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৭৭.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২০.৫% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র ১৪, দাতব্য চিকিৎসালয় ৪, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৯, কমিউনিটি ক্লিনিক ১১, শিশু ও মাতৃসদন ১।
এনজিও আশা, ব্র্যাক, প্রশিকা। [মতিয়ার রহমান]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নড়িয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।