নওবাহার-ই-মুর্শিদকুলী খানী
নওবাহার-ই-মুর্শিদকুলী খানী পন্ডিত আজাদ আল হুসাইনী কর্তৃক ফারসি ভাষায় রচিত একখানা ইতিহাস গ্রন্থ। ঢাকার নায়েব নাজিম ও সুজাউদ্দীন মুহম্মদ খানের জামাতা মির্জা লুৎফুল্লাহর নামে ১৭২৯ সালে বইটি উৎসর্গীকৃত হয়। বিনিময়ে গ্রন্থকার সাহিত্য কর্মে নিয়োজিত থাকার সুবিধার্থে নিয়মিত অনুদান লাভ করেন। মির্জা লুৎফুল্লাহ ইতিহাসে দ্বিতীয় মুর্শিদকুলী খান নামে সমধিক পরিচিত এবং এ কারণে বইটির অনুরূপ নামকরণ হয়। সুবাহ বাংলায় আলীবর্দী খান এর ক্ষমতা দখলের পর মুর্শিদকুলী খান হায়দ্রাবাদের নিজামের দরবারে আশ্রয় নেন। দৈবাৎ বইটি পুনা-হাউসে স্থান পায়। ১৯৪৯ সালে বোম্বাই সরকার অন্যান্য বই ও পান্ডুলিপির সাথে এটি কিনে নেয়।
নওবাহার-ই-মুর্শিদকুলী খানী একটি ছোট গ্রন্থ। এতে সৎ পরামর্শ, ছোট সত্য কাহিনী এবং লেখকের পৃষ্ঠপোষক দ্বিতীয় মুর্শিদকুলী খানের প্রশংসাদি অন্তর্ভুক্ত আছে। এছাড়া এখানে মীরজুমলার ন্যায়বিচার বিষয়ক কাহিনী, যুবরাজ মুহম্মদ আজমের (আওরঙ্গজেব এর পুত্র) পরোপকারেচ্ছু ও হিতকর কার্যাবলী এবং দ্বিতীয় মুর্শিদকুলী খানের নিজস্ব কৃতিত্বসমূহের বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে ত্রিপুরা বিজয়ের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার জন্য গ্রন্থটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শাহ সুজার আমলে (১৬৩৯-১৬৬০) ত্রিপুরার পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত মির্জাপুর জেলা জয়ের ব্যাপারে এ গ্রন্থে নতুন তথ্যের উল্লেখ আছে (যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না)। আজাদ আল হুসাইনী তাঁর সমসাময়িক কালে ঘটে যাওয়া দ্বিতীয় মুর্শিদকুলী খানের সহকারী মীর হাবিব কর্তৃক (১৭২৯) উদয়পুর দুর্গ দখলের বিবরণ দেন। তাঁর এ বর্ণনা পরবর্তী ঐতিহাসিকগণ সত্য বলে গ্রহণ করেন। [আবদুল করিম]