ধামেশ্বর মহাপ্রভু
ধামেশ্বর মহাপ্রভু নদীয়ায় প্রতিষ্ঠিত চৈতন্যদেবের দারুমূর্তি। লোকশ্রুতি আছে যে, পশ্চিমবঙ্গের কালনায় পূজিত চৈতন্যদেবের মূর্তির আদলে বিষ্ণুপ্রিয়ার নির্দেশে এবং বংশীবদন গোস্বামীর তত্ত্বাবধানে, চৈতন্যদেব যে নিমগাছের তলায় জন্মেছিলেন সেই গাছ কেটে এক দারুমূর্তি নির্মিত হয়; বিষ্ণুপ্রিয়া ওই মূর্তির সেবা করতেন। পরে তাঁর ভাই যাদবাচার্য সেবার দায়িত্ব পালন করেন। কোনো রকম মন্ত্রোচ্চারণ বা প্রচলিত পূজাপদ্ধতি ছাড়াই দাস্যভাবে এ সেবা চলত। যাদবাচার্যের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র মাধবাচার্য এ দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর অবর্তমানে তাঁর দুই পুত্র দশ আনা-ছয় আনা ভাগে সেবাইত হন এবং এ হিসাব অনুযায়ী বংশপরম্পরায় এ মূর্তি সেবিত হয়ে আসছেন। বর্তমানে দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ পুরুষ এঁর সেবাইত এবং প্রায় ১৫০-১৭৫ জন সেবাইত সুনির্দিষ্ট অংশভেদে এ সেবাকার্য নির্বাহ করেন।
বৃন্দাবনের সিদ্ধ চৈতন্যদাস বাবাজী মহাপ্রভুর সুনির্দিষ্ট সেবাপূজা পদ্ধতি নির্ণয় করেন এবং বাড়ির মেয়েদেরও দেবজ্ঞানে পূজার বিধান দেন। বিভিন্ন রাজা ও জমিদার শ্রেণির অর্থানুকূল্যে আনুমানিক ২০০ বছর পূর্বে বর্তমান ধামেশ্বর মহাপ্রভুর মন্দিরটি নির্মিত হয়। দেড়শত বছর পূর্বে কাছাড় থেকে আগত ভুবনেশ্বর সাধু ভক্তদের আর্থিক সহায়তায় বর্তমান সুদৃশ্য রৌপ্য সিংহাসনটি নির্মাণ এবং দোলমঞ্চ ও রামমঞ্চ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমান সেবাইতগণ ‘বিষ্ণুপ্রিয়া সমিতি’ গঠন করে ওই বিগ্রহের সেবা-পূজার কাজ পরিচালনা করছেন। [শুভেন্দুকুমার সিদ্ধান্ত]