দোলযাত্রা

দোলযাত্রা হিন্দুদের একটি ধর্মীয় উৎসব। এটি শুধু ‘দোল’ নামেও পরিচিত। উত্তর ভারতে এর নাম হোলি, কোথাও কোথাও একে হোরি-ও বলা হয়। ফাল্গুন মাসের শুক্লা চতুর্দশীতে ‘বুড়ির ঘর’ বা মেড়া পুড়িয়ে পরের দিন রাধাকৃষ্ণকে পূজা করা হয় এবং তাঁদের মূর্তি দোলায় রেখে আবীর কুঙ্কুমে রাঙানো হয়। পরে পরস্পরকে রং বা আবীর মাখিয়ে সকলে আনন্দ করে। পশ্চিমবঙ্গের অঞ্চল বিশেষে এর পরের দিন রং খেলা হয়। মুর্শিদাবাদসহ উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলায় তিন-চার দিন পরে একজনকে সং বা ‘হোলির রাজা’ সাজিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয়। রাজা যাকে পায় তার কাছ থেকেই খাজনা আদায় করে এবং পরে তা দিয়ে আনন্দ করা হয়।

বাংলাদেশে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এ উৎসব পালিত হয়। নিকট অতীতে সাড়ম্বরে দোলযাত্রা উদযাপিত হতো। এদিন তরুণরা দল বেঁধে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রং খেলতো। বয়ঃকনিষ্ঠরা শ্রদ্ধার সঙ্গে বয়স্কদের রং দিত এবং তাঁরা ছোটদের আশীর্বাদ করতেন। সেই সঙ্গে প্রত্যেক বাড়ি থেকেই সাধ্যমতো ধানচাল বা টাকাপয়সা দেওয়া হতো এবং তা দিয়ে সকলে মিষ্টিমুখ করত। নানাবিধ প্রতিকূলতার কারণে বর্তমানে হোলির অনুষ্ঠান আর আগের মতো সাড়ম্বরে উদযাপিত হয় না।  [সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়]