ত্রিপুরা পাহাড়
ত্রিপুরা পাহাড় (Tripura Hills) চট্টগ্রাম-ত্রিপুরা বলিত বলয়ের মধ্যভাগে ত্রিপুরা পাহাড় অবস্থিত এবং ভারত ভূ-খন্ডের অন্তর্গত। এ পাহাড়ের সমান্তরাল রেখায় উত্তর-দক্ষিণমুখী লম্বালম্বিভাবে পাঁচ থেকে ছয়টি পর্বতমালা একে অপরের থেকে গড়ে প্রায় ২০ কিমি দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করছে। এ পর্বতমালা এবং মধ্যবর্তী উপত্যকাসমূহের উচ্চতা পূর্বদিক বরাবর বৃদ্ধি পেতে থাকে। পূর্বদিক থেকে সূচিত প্রধান প্রধান পর্বতমালাসমূহ হচ্ছে যমপুরী, সাক্কান ক্লাং, লংতরাই, ও আথারামুরা পর্বতমালা। ত্রিপুরা পাহাড়ের উচ্চতা ৬০ মিটার থেকে ১২০ মিটারের মধ্যে এবং আরও পূর্বে ৬০০ মিটারেরও বেশি উচ্চতাবিশিষ্ট। প্রায় ৯৭৫ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বেটলিং শিব (Betling Sib) যমপুরী রেঞ্জে অবস্থিত। এসব পাহাড় প্যালিওসিন থেকে প্লাইসটোসিন যুগের অবক্ষেপ দ্বারা গঠিত।
ভারতের ত্রিপুরা পাহাড় শ্রেণির ৬টি কুশিয়ারা নদীর দক্ষিণে বাংলাদেশের সিলেট জেলায় এসে ঢুকেছে। এগুলি কম উচ্চতা সম্পন্ন। পূর্ব থেকে পশ্চিমে এসব পাহাড় হচ্ছে যথাক্রমে পাথারিয়া রেঞ্জ, হারারগঞ্জ বা লংলা পাহাড়, ভানুগাছ বা রাজকান্দি পাহাড়, বালিসারা পাহাড়, সাতগাঁও পাহাড় এবং রঘুনন্দন পাহাড়। হারারগঞ্জ চূড়া সিলেট অঞ্চলের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা প্রায় ৩৩৬ মিটার। উত্তরাঞ্চলীয় ত্রিপুরা পাহাড়ের উত্তলভঙ্গসমুহ (anticline) ক্রমাগতভাবে উত্তরদিকে শেষ হয়ে ধীরে ধীরে সিলেট অববাহিকার সাম্প্রতিক (Recent) অবক্ষেপের অভ্যন্তরে মিশে গেছে। এ উত্তলভঙ্গসমূহ চ্যুতিবিশিষ্ট এবং এগুলোর অনেকগুলি এখনও সক্রিয়। [এ.কে.এম খোরশেদ আলম]