তারিখ- ই- খান জাহানী ওয়া মাখজান-ই-আফগানী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''তারিখ''''''- .- ''''''খান জাহানী ওয়া মাখজান-ই-আফগানী''' খাজা নিমাতুল্লাহ রচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস গ্রন্থ। তারিখ''-''''-''খান জাহানী ওয়া মাখজান''-''''-''আফগানী ভারতে আফগান শাসকদের ইতিহাস বিধৃত করা হয়েছে। বাহলুল লোদীর সময় থেকে খাজা উসমানের মৃত্যু পর্যন্ত পুরো সময়ের ইতিহাস এখানে বর্ণিত হয়েছে। খাজা হাবিবুল্লাহর পুত্র খাজা নিমাতুল্লাহ তাঁর এ গ্রন্থটি সম্রাট জাহাঙ্গীরের অধিনস্ত রাজ কর্মচারী খান জাহান লোদীকে উৎসর্গ করেছিলেন। লেখক ১৬১২ থেকে ১৬১৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে গ্রন্থটি রচনা করলেও ১৬১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি এতে তাঁর পৃষ্ঠপোষক খান জাহানের জীবন বৃত্তান্তে কিছু নতুন তথ্য সন্নিবেশ করেন। মাখজান''-''''-''আফগানী ১৮২৯ সালের প্রথম দিকে ডর্ন কর্তৃক ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয় (''History of the Afghans'', Bernhard Dorn, London) এবং সুধী সমাজে এটি খুব পরিচিতি লাভ করে।  
'''তারিখ- - খান জাহানী ওয়া মাখজান-ই-আফগানী''' খাজা নিমাতুল্লাহ রচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস গ্রন্থ। তারিখ- ই- খান জাহানী ওয়া মাখজান-ই-আফগানী ভারতে আফগান শাসকদের ইতিহাস বিধৃত করা হয়েছে। বাহলুল লোদীর সময় থেকে খাজা উসমানের মৃত্যু পর্যন্ত পুরো সময়ের ইতিহাস এখানে বর্ণিত হয়েছে। খাজা হাবিবুল্লাহর পুত্র খাজা নিমাতুল্লাহ তাঁর এ গ্রন্থটি সম্রাট জাহাঙ্গীরের অধিনস্ত রাজ কর্মচারী খান জাহান লোদীকে উৎসর্গ করেছিলেন। লেখক ১৬১২ থেকে ১৬১৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে গ্রন্থটি রচনা করলেও ১৬১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি এতে তাঁর পৃষ্ঠপোষক খান জাহানের জীবন বৃত্তান্তে কিছু নতুন তথ্য সন্নিবেশ করেন। মাখজান-ই-আফগানী ১৮২৯ সালের প্রথম দিকে ডর্ন কর্তৃক ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয় (''History of the Afghans'', Bernhard Dorn, London) এবং সুধী সমাজে এটি খুব পরিচিতি লাভ করে।  


লেখক তাঁর গ্রন্থে সমসাময়িক রাজনৈতিক চিত্র বিস্তারিত এবং ধারাবাহিক লিপিবদ্ধ করেছেন। সে সঙ্গে তিনি শাসকের চরিত্র ও তাঁর সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের বর্ণনা সন্নিবেশিত করেছেন। ধারাবাহিক ইতিহাস গ্রন্থ হিসেবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা। খান জাহান লোদীর জীবনের পূর্ববর্তী ভাগের অর্জনসমূহ, আফগানদের বংশলতিকা বা সারণী, এবং সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বের শেষ আট বছরের বর্ণনা হল এ গ্রন্থের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। লেকক নিজে সম্রাট আকবরের মৃত্যু, জাহাঙ্গীরের অভিষেক এবং তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র সাহাজাদা খসরুর যুদ্ধে পরাজয়ের চাক্ষুষ সাক্ষি ছিলেন। লেখকেরে এ সকল বর্ণনা যথেষ্ট বিধিসম্মত উপায়ে বর্ণিত না হলেও এর তথ্য নির্ভরযোগ্য। গ্রন্থের শেষ পর্ব বা খাতিমায় রয়েছে ৬৬ জন সুফির বর্ণনা যাঁরা ছিলেন অধিকাংশই বংশগতভাবে আফগান। মাখজান''-''''-''আফগানী রচিত না হলে এতোজন সুফির পরিচয় অনেকের নিকটই অজানাই থেকে যেত।  
লেখক তাঁর গ্রন্থে সমসাময়িক রাজনৈতিক চিত্র বিস্তারিত এবং ধারাবাহিক লিপিবদ্ধ করেছেন। সে সঙ্গে তিনি শাসকের চরিত্র ও তাঁর সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের বর্ণনা সন্নিবেশিত করেছেন। ধারাবাহিক ইতিহাস গ্রন্থ হিসেবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা। খান জাহান লোদীর জীবনের পূর্ববর্তী ভাগের অর্জনসমূহ, আফগানদের বংশলতিকা বা সারণী, এবং সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বের শেষ আট বছরের বর্ণনা হল এ গ্রন্থের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। লেকক নিজে সম্রাট আকবরের মৃত্যু, জাহাঙ্গীরের অভিষেক এবং তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র সাহাজাদা খসরুর যুদ্ধে পরাজয়ের চাক্ষুষ সাক্ষি ছিলেন। লেখকেরে এ সকল বর্ণনা যথেষ্ট বিধিসম্মত উপায়ে বর্ণিত না হলেও এর তথ্য নির্ভরযোগ্য। গ্রন্থের শেষ পর্ব বা খাতিমায় রয়েছে ৬৬ জন সুফির বর্ণনা যাঁরা ছিলেন অধিকাংশই বংশগতভাবে আফগান। মাখজান-ই-আফগানী রচিত না হলে এতোজন সুফির পরিচয় অনেকের নিকটই অজানাই থেকে যেত।  


এ লেখকের অপর একটি গ্রন্থ হল মাখজান''-''''-''আফগানী। আধুনিক পন্ডিতগণ তারিখ''-''''-''খান জাহানী মাখজান''-''''-''আফগানীর শনাক্তীকরণে দ্বিধাবিভক্ত। হেনরী ইলিয়ট, এ. হালিম প্রমুখের মতে এটি এক ও অভিন্ন গ্রন্থ; এদের মধ্যে শুধু নামকরণে ভিন্নতা পরিদৃষ্ট হয়। অপর দিকে অন্যান্যরা, যেমন এস.এম ইমামুদ্দীনসহ কেউ কেউ মনে করেন, গ্রন্থ দ’ুটি পৃথক। তবে লিখিত হয়েছে একজন লেখক কর্তৃক। বাংলায় আফগান শাসকদের ইতিহাস জানার জন্য গ্রন্থটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উৎস। [আবদুল করিম]
এ লেখকের অপর একটি গ্রন্থ হল ''মাখজান-ই-আফগানী''আধুনিক পন্ডিতগণ ''তারিখ-ই-খান জাহানী'' ও ''মাখজান-ই-আফগানীর'' শনাক্তীকরণে দ্বিধাবিভক্ত। হেনরী ইলিয়ট, এ. হালিম প্রমুখের মতে এটি এক ও অভিন্ন গ্রন্থ; এদের মধ্যে শুধু নামকরণে ভিন্নতা পরিদৃষ্ট হয়। অপর দিকে অন্যান্যরা, যেমন এস.এম ইমামুদ্দীনসহ কেউ কেউ মনে করেন, গ্রন্থ দু'টি পৃথক। তবে লিখিত হয়েছে একজন লেখক কর্তৃক। বাংলায় আফগান শাসকদের ইতিহাস জানার জন্য গ্রন্থটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উৎস। [আবদুল করিম]
 
<!-- imported from file: তারিখ- ই- খান জাহানী ওয়া মাখজান-ই-আফগানী.html-->


[[en:Tarikh-i-Khan Jahani Wa Makhzan-i-Afghani]]
[[en:Tarikh-i-Khan Jahani Wa Makhzan-i-Afghani]]

১০:১৭, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

তারিখ- ই- খান জাহানী ওয়া মাখজান-ই-আফগানী খাজা নিমাতুল্লাহ রচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস গ্রন্থ। তারিখ- ই- খান জাহানী ওয়া মাখজান-ই-আফগানী ভারতে আফগান শাসকদের ইতিহাস বিধৃত করা হয়েছে। বাহলুল লোদীর সময় থেকে খাজা উসমানের মৃত্যু পর্যন্ত পুরো সময়ের ইতিহাস এখানে বর্ণিত হয়েছে। খাজা হাবিবুল্লাহর পুত্র খাজা নিমাতুল্লাহ তাঁর এ গ্রন্থটি সম্রাট জাহাঙ্গীরের অধিনস্ত রাজ কর্মচারী খান জাহান লোদীকে উৎসর্গ করেছিলেন। লেখক ১৬১২ থেকে ১৬১৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে গ্রন্থটি রচনা করলেও ১৬১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি এতে তাঁর পৃষ্ঠপোষক খান জাহানের জীবন বৃত্তান্তে কিছু নতুন তথ্য সন্নিবেশ করেন। মাখজান-ই-আফগানী ১৮২৯ সালের প্রথম দিকে ডর্ন কর্তৃক ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয় (History of the Afghans, Bernhard Dorn, London) এবং সুধী সমাজে এটি খুব পরিচিতি লাভ করে।

লেখক তাঁর গ্রন্থে সমসাময়িক রাজনৈতিক চিত্র বিস্তারিত এবং ধারাবাহিক লিপিবদ্ধ করেছেন। সে সঙ্গে তিনি শাসকের চরিত্র ও তাঁর সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের বর্ণনা সন্নিবেশিত করেছেন। ধারাবাহিক ইতিহাস গ্রন্থ হিসেবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা। খান জাহান লোদীর জীবনের পূর্ববর্তী ভাগের অর্জনসমূহ, আফগানদের বংশলতিকা বা সারণী, এবং সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বের শেষ আট বছরের বর্ণনা হল এ গ্রন্থের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। লেকক নিজে সম্রাট আকবরের মৃত্যু, জাহাঙ্গীরের অভিষেক এবং তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র সাহাজাদা খসরুর যুদ্ধে পরাজয়ের চাক্ষুষ সাক্ষি ছিলেন। লেখকেরে এ সকল বর্ণনা যথেষ্ট বিধিসম্মত উপায়ে বর্ণিত না হলেও এর তথ্য নির্ভরযোগ্য। গ্রন্থের শেষ পর্ব বা খাতিমায় রয়েছে ৬৬ জন সুফির বর্ণনা যাঁরা ছিলেন অধিকাংশই বংশগতভাবে আফগান। মাখজান-ই-আফগানী রচিত না হলে এতোজন সুফির পরিচয় অনেকের নিকটই অজানাই থেকে যেত।

এ লেখকের অপর একটি গ্রন্থ হল মাখজান-ই-আফগানী। আধুনিক পন্ডিতগণ তারিখ-ই-খান জাহানীমাখজান-ই-আফগানীর শনাক্তীকরণে দ্বিধাবিভক্ত। হেনরী ইলিয়ট, এ. হালিম প্রমুখের মতে এটি এক ও অভিন্ন গ্রন্থ; এদের মধ্যে শুধু নামকরণে ভিন্নতা পরিদৃষ্ট হয়। অপর দিকে অন্যান্যরা, যেমন এস.এম ইমামুদ্দীনসহ কেউ কেউ মনে করেন, গ্রন্থ দু'টি পৃথক। তবে লিখিত হয়েছে একজন লেখক কর্তৃক। বাংলায় আফগান শাসকদের ইতিহাস জানার জন্য গ্রন্থটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উৎস। [আবদুল করিম]