তারাসুন্দরী
তারাসুন্দরী (১৮৭৮-১৯৪৮) অভিনেত্রী। ১৮৮৪ সালে বিনোদিনীর সহায়তায় স্টার থিয়েটারে যোগদানের মাধ্যমে তিনি অভিনয় শুরু করেন। প্রথমে তিনি গিরিশচন্দ্র ঘোষের চৈতন্যলীলা নাটকে এক বালক ও সরলা নাটকে গোপাল চরিত্রে অভিনয় করেন। প্রতিভাগুণে তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পান। ১৮৯৪ সালে চন্দ্রশেখর নাটকে শৈবলিনীর ভূমিকায় অভিনয় করে তারাসুন্দরী অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর সম্মান লাভ করেন। অমৃতলাল মিত্র তাঁর নাট্যশিক্ষক, রামতারণ সান্যাল সঙ্গীতশিক্ষক ও কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন নৃত্যশিক্ষক।
১৮৯৭ সালে প্রখ্যাত অভিনেতা ও নাট্যকার অমরেন্দ্রনাথ দত্তের ক্ল্যাসিক থিয়েটারে যোগ দিয়ে তারাসুন্দরী বহু নাটকে অভিনয় করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। ১৯২২ সালে পুত্রের মৃত্যুর পর তিনি থিয়েটার ছেড়ে ভুবনেশ্বর চলে যান এবং সেখানে মঠ প্রতিষ্ঠা ও ধর্মকর্ম করার ব্রত গ্রহণ করেন। কিছুদিন পরে গিরিশচন্দ্রের অনুরোধে তিনি কলকাতায় ফিরে এসে দুর্গেশনন্দিনী নাটকে আয়েষা, হরিশ্চন্দ্রে শৈব্যা, রামানুজে রামানুজ, বলিদানে সরস্বতী এবং রিজিয়া নাটকে রিজিয়া চরিত্রে অভিনয় করে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন।
১৯২৫ সালের দিকে বাংলা থিয়েটারের নবযুগের সূচনায় তারাসুন্দরী শিশিরকুমার ভাদুড়ীর সঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নাটকে অভিনয় করেন। এ সময় জনা নাটকে জনা, আলমগীর নাটকে উদিপুরী এবং মিত্র থিয়েটারে শ্রীদুর্গা (১৯২৬) নাটকে দুর্গার ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করেন। [ওয়াহিদা মল্লিক]