তারাগঞ্জ উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(fix: image tag)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''তারাগঞ্জ উপজেলা''' ([[রংপুর জেলা|রংপুর জেলা]])  আয়তন: ১২৮.৬৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৪৪´ থেকে ২৫°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৭´ থেকে ৮৯°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কিশোরগঞ্জ উপজেলা (নীলফামারী), দক্ষিণে বদরগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে গঙ্গাচড়া ও রংপুর সদর উপজেলা, পশ্চিমে সৈয়দপুর উপজেলা।  
'''তারাগঞ্জ উপজেলা''' ([[রংপুর জেলা|রংপুর জেলা]])  আয়তন: ১২৮.৬৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৪৪´ থেকে ২৫°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৭´ থেকে ৮৯°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কিশোরগঞ্জ উপজেলা (নীলফামারী), দক্ষিণে বদরগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে গঙ্গাচড়া ও রংপুর সদর উপজেলা, পশ্চিমে সৈয়দপুর উপজেলা।  


''জনসংখ্যা'' ১১৯৯২৭; পুরুষ ৬১৯৩৪, মহিলা ৫৭৯৯৩। মুসলিম ১০৪৪১৭, হিন্দু ১৫৪৯১ এবং অন্যান্য ১৯।
''জনসংখ্যা'' ১৪২৫১২; পুরুষ ৭১৮৯৮, মহিলা ৭০৬১৪। মুসলিম ১২৪৫৭৮, হিন্দু ১৭৮৮৩, খ্রিস্টান ১৩  এবং অন্যান্য ৩৮।


''জলাশয়'' নদী: যমুনেশ্বরী, চিকলী, হাতখোপা বিল উল্লেখযোগ্য।  
''জলাশয়'' নদী: যমুনেশ্বরী, চিকলী, হাতখোপা বিল উল্লেখযোগ্য।  


''প্রশাসন'' তারাগঞ্জ ১৯৮০ সালের পূর্ব পর্যন্ত বদরগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৮০ সালের ১ জানুয়ারি বদরগঞ্জ থানার ৪০ টি গ্রাম নিয়ে তারাগঞ্জ থানা গঠন করা হয় এবং ১৯৮৪ সালে এটি  উপজেলায়  রূপান্তর করা হয়।  
''প্রশাসন'' তারাগঞ্জ ১৯৮০ সালের পূর্ব পর্যন্ত বদরগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৮০ সালের ১ জানুয়ারি বদরগঞ্জ থানার ৪০ টি গ্রাম নিয়ে তারাগঞ্জ থানা গঠন করা হয় এবং ১৯৮৪ সালে এটি  উপজেলায়  রূপান্তর করা হয়।  


{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
১৩ নং লাইন: ১২ নং লাইন:
| colspan="9" | উপজেলা
| colspan="9" | উপজেলা
|-
|-
! rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ৫ || ৪০ || ৪১ || ১৩৭৮৪  || ১০৬১৪৩  || ৯৩২  || ৪৯.২৪  || ৩৫.৪৫
| - || ৫ || ৪০ || ৪১ || ৭৯০৬ || ১৩৪৬০৬ || ১১০৮ || ৫৭.|| ৪২.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" | উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১১.৪৬  || ২  || ১৩৭৮৪  || ১২০৩  || ৪৯.২৪
| .৭৮ || || ৭৯০৬ || ১৬৫৪ || ৫৭.
 
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
| colspan="9" | ইউনিয়ন
|-
|-
| ইউনিয়ন
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
 
|-
|-
| ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || আয়তন (একর)  || লোকসংখ্যা || শিক্ষার হার (%)
পুরুষ || মহিলা
 
|-
|-
| </nowiki>পুরুষ || মহিলা  ||  
| আলমপুর ২৫ || ৬৩১৩ || ১২৪৪৫ || ১২০৬০ || ৪৬.০
 
|-
|-
| আলমপুর ১৫  || ৬৩১৩  || ১০৯৬০ || ১০০৫৯  || ৩৯.৮৫
| ইকরচলি ৪৭ || ৫৯৮৮ || ১৪০৩৬ || ১৩৮১১ || ৪৪.
 
|-
|-
| ইকরচলি ৪৭  || ৫৯৮৮  || ১১৬৬২ || ১০৮৮৭  || ৩৩.০৩
| কুর্শা ৭১ || ৫৮৬৫ || ১৫২৫৭ || ১৪৭৬৯ || ৫১.
 
|-
|-
| কুর্শা ৭১  || ৫৮৬৬  || ১২৫১৭ || ১১৮০৯  || ৪৪.৮৭
| সয়ার ৭৯ || ৬৪১১ || ১২৬৪৭ || ১২৬৪৬ || ৪০.
 
|-
|-
| সয়ার ৭৯  || ৬৪১১  || ১১৩০০  || ১০৬৩৫  || ৩৬.৭৮
| হাড়িয়ার কুঠি ৬৩ || ৭২১৫ || ১৭৫১৩ || ১৭৩২৮ || ৩৭.
 
|-
| হাড়িয়ার কুঠি ৬৩ || ৭২১৫ || ১৫৪৯৫ || ১৪৬০৩  || ৩২.০১
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:TaraganjUpazila.jpg|thumb|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' চার গম্বুজবিশিষ্ট তারাগঞ্জ মসজিদ (মোগল আমলে নির্মিত), তিন গম্বুজবিশিষ্ট ঘনিরামপুর মসজিদ (মোগল আমলে নির্মিত), মেনানগর বড়জামে মসজিদ, তিন গম্বুজবিশিষ্ট সয়ার কুঠিপাড়া মসজিদ (১৩৫৮), তিন গম্বুজ সয়ার কাজীপাড়া মসজিদ, বিশ্বম্ভর সাধুর আখড়া, শ্যামগঞ্জের কাচারি, জমিদারবাড়ী ও দেবোত্তর কালীমন্দির, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভবনামৃত সংঘ ও শ্রী শ্রী রাধা মাধব জিউ মন্দির (ইসকন মন্দির নামে পরিচিত), বামন দিঘি (তারাগঞ্জ উপজেলা থেকে ২ কি:মি: পূর্বে ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে)।  
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' চার গম্বুজবিশিষ্ট তারাগঞ্জ মসজিদ (মোগল আমলে নির্মিত), তিন গম্বুজবিশিষ্ট ঘনিরামপুর মসজিদ (মোগল আমলে নির্মিত), মেনানগর বড়জামে মসজিদ, তিন গম্বুজবিশিষ্ট সয়ার কুঠিপাড়া মসজিদ (১৩৫৮), তিন গম্বুজ সয়ার কাজীপাড়া মসজিদ, বিশ্বম্ভর সাধুর আখড়া, শ্যামগঞ্জের কাচারি, জমিদারবাড়ী ও দেবোত্তর কালীমন্দির, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভবনামৃত সংঘ ও শ্রী শ্রী রাধা মাধব জিউ মন্দির (ইসকন মন্দির নামে পরিচিত), বামন দিঘি (তারাগঞ্জ উপজেলা থেকে ২ কি:মি: পূর্বে ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে)।  


[[Image:তারাগঞ্জ উপজেলা_html_88407781.png]]
''ঐতিহাসিক ঘটনা''  ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময় ১৭৭২ সালের ৩০ ডিসেম্বর তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ নামক স্থানে ইংরেজ বাহিনীর সাথে ফকির সন্ন্যাসীদের তুমুল লড়াই হয়। এ লড়াইয়ে ইংরেজ বাহিনী পরাজিত হয় এবং ইংরেজ সেনাপতি টমাস নিহত হন। ‘রংপুর বিদ্রোহ’ নামে খ্যাত কৃষক প্রজা বিদ্রোহে (১৭৮৩) বদরগঞ্জ ইউনিয়নে একটি বড় ঘাঁটি ছিল। নীল বিদ্রোহ (১৮৫৯) এ অঞ্চলের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এছাড়াও তেভাগা আন্দোলন (১৯৪৬-৪৭), হাটতোলা আন্দোলনে (১৯৩৭-৪০) এ অঞ্চলের লোক সক্রিয় অংশগ্রহণ করে।


[[Image:TaraganjUpazila.jpg|thumb|400px]]
''মুক্তিযুদ্ধ''  মুক্তিযুদ্ধের সময় তারাগঞ্জ উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সরাসরি কোনো যুদ্ধ হয় নাই। তবে রাজাকারদের বিরেুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি অপারেশন পরিচালনা করে। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর যমুনেশ্বরী নদীর উপর বরাতি ব্রিজে এক গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং আগস্ট মাসে পাকসেনারা সয়ার ইউনিয়নের দাড়ার পাড় গ্রামের কয়েকজনকে আটক করে এবং পরে হত্যা করে।


''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময় ১৭৭২ সালের ৩০ ডিসেম্বর তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ নামক স্থানে ইংরেজ বাহিনীর সাথে ফকির সন্ন্যাসীদের তুমুল লড়াই হয়। এ লড়াইয়ে ইংরেজ বাহিনী পরাজিত হয় এবং ইংরেজ সেনাপতি টমাস নিহত হন। ‘রংপুর বিদ্রোহ’ নামে খ্যাত কৃষক প্রজা বিদ্রোহে (১৭৮৩) বদরগঞ্জ ইউনিয়নে একটি বড় ঘাঁটি ছিল। নীল বিদ্রোহ (১৮৫৯) এ অঞ্চলের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এছাড়াও তেভাগা আন্দোলন (১৯৪৬-৪৭), হাটতোলা আন্দোলনে (১৯৩৭-৪০) এ অঞ্চলের লোক সক্রিয় অংশ গ্রহন করে। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর যমুনেশ্বরী নদীর উপর বরাতি ব্রিজে এক গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং আগস্ট মাসে পাকসেনারা সয়ার ইউনিয়নের দাড়ার পাড় গ্রামের কয়েকজনকে আটক করে এবং পরে হত্যা করে।
''বিস্তারিত দেখুন'' তারাগঞ্জ উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৫০, মন্দির ২০, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মেনানগর মসজিদ, তারাগঞ্জ মসজিদ, কাজীপাড়া মসজিদ, দেওয়ানপাড়া মসজিদ, তিন গম্বুজবিশিষ্ট ঘনিরামপুর মসজিদ, তিন গম্বুজবিশিষ্ট সয়ার কুঠিপাড়া মসজিদ, দেবোত্তর কালীমন্দির, ইসকন মন্দির।  
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৫০, মন্দির ২০, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মেনানগর মসজিদ, তারাগঞ্জ মসজিদ, কাজীপাড়া মসজিদ, দেওয়ানপাড়া মসজিদ, তিন গম্বুজবিশিষ্ট ঘনিরামপুর মসজিদ, তিন গম্বুজবিশিষ্ট সয়ার কুঠিপাড়া মসজিদ, দেবোত্তর কালীমন্দির, ইসকন মন্দির।  


শিক্ষার হার'','' শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৩৭.০৬%; পুরুষ ৪১.৫৮%, মহিলা ৩২.২৭%। কলেজ ২, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭১, কিন্ডার গার্টেন ২, মাদ্রাসা ২৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: তারাগঞ্জ ও.এ ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), তারাগঞ্জ ও.এ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ (১৯৭৯), তারাগঞ্জ ও.এ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬২), কাজীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৫), কাশিয়াবাড়ী বিএল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭), কুর্শা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৩), কুর্শা ডাঙ্গা রহমানিয়া মাদ্রাসা (১৯১৬), তারাগঞ্জ ও.এ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৭৫)।  
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৪৩.%; পুরুষ ৪৬.%, মহিলা ৪১.%। কলেজ ২, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭১, কিন্ডার গার্টেন ২, মাদ্রাসা ২৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: তারাগঞ্জ ও.এ ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), তারাগঞ্জ ও.এ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ (১৯৭৯), তারাগঞ্জ ও.এ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬২), কাজীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৫), কাশিয়াবাড়ী বিএল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭), কুর্শা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৩), কুর্শা ডাঙ্গা রহমানিয়া মাদ্রাসা (১৯১৬), তারাগঞ্জ ও.এ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৭৫)।  


সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ১৮, সিনেমা হল ১, থিয়েটার গ্রুপ ১, অডিটোরিয়াম ১, খেলার মাঠ ১৫। তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ লাইব্রেরী (২০০৬), তারাগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরী (১৯৯৫), তারাগঞ্জ ইস্কন মন্দির পাঠাগার (১৯৯৫) উল্লেখযোগ্য।
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান''  লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ১৮, সিনেমা হল ১, থিয়েটার গ্রুপ ১, অডিটোরিয়াম ১, খেলার মাঠ ১৫। তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ লাইব্রেরী (২০০৬), তারাগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরী (১৯৯৫), তারাগঞ্জ ইস্কন মন্দির পাঠাগার (১৯৯৫) উল্লেখযোগ্য।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৮০.৩৮%, অকৃষি শ্রমিক ২.১১%, শিল্প ০.৩৭%, ব্যবসা ৭.৯৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১০%, চাকরি ৩.২৮%, নির্মাণ ০.৪৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১২% এবং অন্যান্য ৩.০৭%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৮০.৩৮%, অকৃষি শ্রমিক ২.১১%, শিল্প ০.৩৭%, ব্যবসা ৭.৯৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১০%, চাকরি ৩.২৮%, নির্মাণ ০.৪৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১২% এবং অন্যান্য ৩.০৭%।


''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৫৭.৭৭%, ভূমিহীন ৪২.২৩%। শহরে ৫১.৯৩% এবং গ্রামে ৫৮.৪৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৫৭.৭৭%, ভূমিহীন ৪২.২৩%। শহরে ৫১.৯৩% এবং গ্রামে ৫৮.৪৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, পাট, আলু, আদা, তামাক, রসুন, পিঁয়াজ, গম, হলুদ।
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, পাট, আলু, আদা, তামাক, রসুন, পিঁয়াজ, গম, হলুদ।
৭৮ নং লাইন: ৬৮ নং লাইন:
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' যব, তিল, মিষ্টি আলু, কাউন, সরিষা।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' যব, তিল, মিষ্টি আলু, কাউন, সরিষা।


প্রধান ফল''-''ফলাদি  আম, কাঁঠাল, জাম, কলা, জামরুল, লিচু, পেঁপে।  
''প্রধান ফল-ফলাদি''  আম, কাঁঠাল, জাম, কলা, জামরুল, লিচু, পেঁপে।  


মৎস্য'', ''হাঁস''-''মুরগি ও গবাদি পশুর খামার  মৎস্য ১৫০, মুরগি ১৮, ছাগল ৯, দুগ্ধ খামার ৯।
''মৎস্য, হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর খামার''  মৎস্য ১৫০, মুরগি ১৮, ছাগল ৯, দুগ্ধ খামার ৯।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৬০ কিমি (মহাসড়ক ১০ কিমি), কাঁচারাস্তা ৩০৪.২৬ কিমি।  
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৪৫ কিমি, আধা-পাকা রাস্তা ৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৭২ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।


''শিল্প ও কলকারখানা'' ধানকল, বরফকল, করাতকল, ম্যাচ ফ্যাক্টরি, রেশম শিল্প, ওয়েল্ডিং কারখানা।
''শিল্প ও কলকারখানা'' ধানকল, বরফকল, করাতকল, ম্যাচ ফ্যাক্টরি, রেশম শিল্প, ওয়েল্ডিং কারখানা।


''কুটিরশিল্প'' স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প,বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ।
''কুটিরশিল্প'' স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প,বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ।


''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২৩, মেলা ৮। উল্লেখযোগ্য হাটবাজার ও মেলা: তারাগঞ্জ হাট, একরচালি হাট, বুড়ীর হাট, চিকলি হাট, আসামীরহাট হাট, চৌপথীরহাট হাট, জয়বাংলার হাট এবং তারাগঞ্জ মেলা, বরাতি মেলা, বৈশাখী মেলা, বারুনীর মেলা, চড়কের মেলা।  
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২৩, মেলা ৮। উল্লেখযোগ্য হাটবাজার ও মেলা: তারাগঞ্জ হাট, একরচালি হাট, বুড়ীর হাট, চিকলি হাট, আসামীরহাট হাট, চৌপথীরহাট হাট, জয়বাংলার হাট এবং তারাগঞ্জ মেলা, বরাতি মেলা, বৈশাখী মেলা, বারুনীর মেলা, চড়কের মেলা।  


''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   আদা, তামাক, ধান, চাল, পাট, রসুন, পিঁয়াজ, আলু, হলুদ।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  আদা, তামাক, ধান, চাল, পাট, রসুন, পিঁয়াজ, আলু, হলুদ।
 
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১০.৯৩% (শহরে ১৮.৫৪% এবং গ্রামে ৯.৯৯%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
 
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯১.৭৫%, ট্যাপ ০.১৬%, পুকুর ০.১২% এবং অন্যান্য ৭.৯৭%।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' উপজেলার ৫.৪৫% (শহরে ১৪.৪৮% এবং গ্রামে ৪.৩৪%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৬.৫২% (শহরে ৬৭.০৩% এবং গ্রামে ৬২.১৪%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৮.০৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩১.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। 


খনিজ সম্পদ  কয়লা মাটি বা কালোমাটি ও কাঁচবালি (সিলিকা স্যান্ড)
''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৯৭.৪%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ২.৩%


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, কমিউনিটি হাসপাতাল ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' উপজেলার ৪০.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৯.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২০.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৯৭ সালে ভারতের উত্তর-পূর্বাংশে ভয়াবহ ভূমিকম্প উপর্যুপরি বন্যায় এ অঞ্চলের নদীগুলোর গতি পরিবর্তন ও ভূমিরূপের ব্যাপক পরিবর্তন হয়। তেমনি এক বড় ভূমিকম্পে তারাগঞ্জ বাজারের পশ্চিম পাশে নেংটি ছিড়া নামে একটি  নদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। একইভাবে তারাগঞ্জ উপজেলার পূর্বপ্রান্ত ঘেষে দক্ষিণে বয়ে চলা চিকলি ও যমুনেশ্বরী নদী একসময় খরস্রোতা থাকলেও পরবর্তীতে প্রায় মরা নদীতে পরিণত হয়েছে।
''খনিজ সম্পদ''  কয়লা মাটি বা কালোমাটি কাঁচবালি (সিলিকা স্যান্ড)।


''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, কমিউনিটি হাসপাতাল ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১।


[আব্দুল মালেক]
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৮৯৭ সালে ভারতের উত্তর-পূর্বাংশে ভয়াবহ ভূমিকম্প ও উপর্যুপরি বন্যায় এ অঞ্চলের নদীগুলোর গতি পরিবর্তন ও ভূমিরূপের ব্যাপক পরিবর্তন হয়। তেমনি এক বড় ভূমিকম্পে তারাগঞ্জ বাজারের পশ্চিম পাশে নেংটি ছিড়া নামে একটি  নদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। একইভাবে তারাগঞ্জ উপজেলার পূর্বপ্রান্ত ঘেষে দক্ষিণে বয়ে চলা চিকলি ও যমুনেশ্বরী নদী একসময় খরস্রোতা থাকলেও পরবর্তীতে প্রায় মরা নদীতে পরিণত হয়েছে।


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো;  তারাগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [আব্দুল মালেক]


<!-- imported from file: তারাগঞ্জ উপজেলা.html-->
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো;  তারাগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Taraganj Upazila]]
[[en:Taraganj Upazila]]

০৮:২৬, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

তারাগঞ্জ উপজেলা (রংপুর জেলা)  আয়তন: ১২৮.৬৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৪৪´ থেকে ২৫°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৭´ থেকে ৮৯°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কিশোরগঞ্জ উপজেলা (নীলফামারী), দক্ষিণে বদরগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে গঙ্গাচড়া ও রংপুর সদর উপজেলা, পশ্চিমে সৈয়দপুর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৪২৫১২; পুরুষ ৭১৮৯৮, মহিলা ৭০৬১৪। মুসলিম ১২৪৫৭৮, হিন্দু ১৭৮৮৩, খ্রিস্টান ১৩ এবং অন্যান্য ৩৮।

জলাশয় নদী: যমুনেশ্বরী, চিকলী, হাতখোপা বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন তারাগঞ্জ ১৯৮০ সালের পূর্ব পর্যন্ত বদরগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৮০ সালের ১ জানুয়ারি বদরগঞ্জ থানার ৪০ টি গ্রাম নিয়ে তারাগঞ্জ থানা গঠন করা হয় এবং ১৯৮৪ সালে এটি  উপজেলায়  রূপান্তর করা হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৪০ ৪১ ৭৯০৬ ১৩৪৬০৬ ১১০৮ ৫৭.৩ ৪২.৯
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৪.৭৮ ৭৯০৬ ১৬৫৪ ৫৭.৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আলমপুর ২৫ ৬৩১৩ ১২৪৪৫ ১২০৬০ ৪৬.০
ইকরচলি ৪৭ ৫৯৮৮ ১৪০৩৬ ১৩৮১১ ৪৪.১
কুর্শা ৭১ ৫৮৬৫ ১৫২৫৭ ১৪৭৬৯ ৫১.০
সয়ার ৭৯ ৬৪১১ ১২৬৪৭ ১২৬৪৬ ৪০.৬
হাড়িয়ার কুঠি ৬৩ ৭২১৫ ১৭৫১৩ ১৭৩২৮ ৩৭.৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ চার গম্বুজবিশিষ্ট তারাগঞ্জ মসজিদ (মোগল আমলে নির্মিত), তিন গম্বুজবিশিষ্ট ঘনিরামপুর মসজিদ (মোগল আমলে নির্মিত), মেনানগর বড়জামে মসজিদ, তিন গম্বুজবিশিষ্ট সয়ার কুঠিপাড়া মসজিদ (১৩৫৮), তিন গম্বুজ সয়ার কাজীপাড়া মসজিদ, বিশ্বম্ভর সাধুর আখড়া, শ্যামগঞ্জের কাচারি, জমিদারবাড়ী ও দেবোত্তর কালীমন্দির, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভবনামৃত সংঘ ও শ্রী শ্রী রাধা মাধব জিউ মন্দির (ইসকন মন্দির নামে পরিচিত), বামন দিঘি (তারাগঞ্জ উপজেলা থেকে ২ কি:মি: পূর্বে ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে)।

ঐতিহাসিক ঘটনা ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময় ১৭৭২ সালের ৩০ ডিসেম্বর তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ নামক স্থানে ইংরেজ বাহিনীর সাথে ফকির সন্ন্যাসীদের তুমুল লড়াই হয়। এ লড়াইয়ে ইংরেজ বাহিনী পরাজিত হয় এবং ইংরেজ সেনাপতি টমাস নিহত হন। ‘রংপুর বিদ্রোহ’ নামে খ্যাত কৃষক প্রজা বিদ্রোহে (১৭৮৩) বদরগঞ্জ ইউনিয়নে একটি বড় ঘাঁটি ছিল। নীল বিদ্রোহ (১৮৫৯) এ অঞ্চলের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এছাড়াও তেভাগা আন্দোলন (১৯৪৬-৪৭), হাটতোলা আন্দোলনে (১৯৩৭-৪০) এ অঞ্চলের লোক সক্রিয় অংশগ্রহণ করে।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের সময় তারাগঞ্জ উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সরাসরি কোনো যুদ্ধ হয় নাই। তবে রাজাকারদের বিরেুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি অপারেশন পরিচালনা করে। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর যমুনেশ্বরী নদীর উপর বরাতি ব্রিজে এক গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং আগস্ট মাসে পাকসেনারা সয়ার ইউনিয়নের দাড়ার পাড় গ্রামের কয়েকজনকে আটক করে এবং পরে হত্যা করে।

বিস্তারিত দেখুন তারাগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৫০, মন্দির ২০, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মেনানগর মসজিদ, তারাগঞ্জ মসজিদ, কাজীপাড়া মসজিদ, দেওয়ানপাড়া মসজিদ, তিন গম্বুজবিশিষ্ট ঘনিরামপুর মসজিদ, তিন গম্বুজবিশিষ্ট সয়ার কুঠিপাড়া মসজিদ, দেবোত্তর কালীমন্দির, ইসকন মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৪৩.৮%; পুরুষ ৪৬.৪%, মহিলা ৪১.১%। কলেজ ২, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭১, কিন্ডার গার্টেন ২, মাদ্রাসা ২৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: তারাগঞ্জ ও.এ ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), তারাগঞ্জ ও.এ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ (১৯৭৯), তারাগঞ্জ ও.এ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬২), কাজীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৫), কাশিয়াবাড়ী বিএল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭), কুর্শা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৩), কুর্শা ডাঙ্গা রহমানিয়া মাদ্রাসা (১৯১৬), তারাগঞ্জ ও.এ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৭৫)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ১৮, সিনেমা হল ১, থিয়েটার গ্রুপ ১, অডিটোরিয়াম ১, খেলার মাঠ ১৫। তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ লাইব্রেরী (২০০৬), তারাগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরী (১৯৯৫), তারাগঞ্জ ইস্কন মন্দির পাঠাগার (১৯৯৫) উল্লেখযোগ্য।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৮০.৩৮%, অকৃষি শ্রমিক ২.১১%, শিল্প ০.৩৭%, ব্যবসা ৭.৯৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১০%, চাকরি ৩.২৮%, নির্মাণ ০.৪৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১২% এবং অন্যান্য ৩.০৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৭.৭৭%, ভূমিহীন ৪২.২৩%। শহরে ৫১.৯৩% এবং গ্রামে ৫৮.৪৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আলু, আদা, তামাক, রসুন, পিঁয়াজ, গম, হলুদ।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি যব, তিল, মিষ্টি আলু, কাউন, সরিষা।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, জাম, কলা, জামরুল, লিচু, পেঁপে।

মৎস্য, হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর খামার  মৎস্য ১৫০, মুরগি ১৮, ছাগল ৯, দুগ্ধ খামার ৯।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪৫ কিমি, আধা-পাকা রাস্তা ৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৭২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, বরফকল, করাতকল, ম্যাচ ফ্যাক্টরি, রেশম শিল্প, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প,বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৩, মেলা ৮। উল্লেখযোগ্য হাটবাজার ও মেলা: তারাগঞ্জ হাট, একরচালি হাট, বুড়ীর হাট, চিকলি হাট, আসামীরহাট হাট, চৌপথীরহাট হাট, জয়বাংলার হাট এবং তারাগঞ্জ মেলা, বরাতি মেলা, বৈশাখী মেলা, বারুনীর মেলা, চড়কের মেলা।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  আদা, তামাক, ধান, চাল, পাট, রসুন, পিঁয়াজ, আলু, হলুদ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩১.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৪%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ২.৩% ।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা উপজেলার ৪০.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৯.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২০.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

খনিজ সম্পদ কয়লা মাটি বা কালোমাটি ও কাঁচবালি (সিলিকা স্যান্ড)।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, কমিউনিটি হাসপাতাল ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৯৭ সালে ভারতের উত্তর-পূর্বাংশে ভয়াবহ ভূমিকম্প ও উপর্যুপরি বন্যায় এ অঞ্চলের নদীগুলোর গতি পরিবর্তন ও ভূমিরূপের ব্যাপক পরিবর্তন হয়। তেমনি এক বড় ভূমিকম্পে তারাগঞ্জ বাজারের পশ্চিম পাশে নেংটি ছিড়া নামে একটি  নদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। একইভাবে তারাগঞ্জ উপজেলার পূর্বপ্রান্ত ঘেষে দক্ষিণে বয়ে চলা চিকলি ও যমুনেশ্বরী নদী একসময় খরস্রোতা থাকলেও পরবর্তীতে প্রায় মরা নদীতে পরিণত হয়েছে।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ। [আব্দুল মালেক]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো;  তারাগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।