ডেভিস, স্যামুয়েল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''ডেভিস'''''', ''''''স্যামুয়েল''' (১৭৬০-১৮১৯)  বিখ্যাত [[ফিফ্থ রিপোর্ট|ফিফ্থ রিপোর্ট ১৮১২]]-এর রচয়িতা। তিনি  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার্স কোরের একজন কর্মকর্তা হিসেবে ভারতে আসেন। পরবর্তীকালে তিনি কোম্পানির সিভিল সার্ভিসে আত্তীকৃত হন এবং [[১০১৭৮২|চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত]] এর পর বর্ধমানের জেলা কালেক্টর নিযুক্ত হন। ১৭৯৯ সালে বেনারসের রাজদরবারে তিনি গভর্নর জেনারেলের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। একজন চিত্রকর, জ্যোতির্বেত্তা ও অংকশাস্ত্রবিদ হিসেবে তিনি যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেন। জেলা কালেক্টর থাকাকালে ডেভিস নতুন উপনিবেশিক রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ক্রটিবিচ্যূতি ও মন্দ দিক সম্পর্কে বহু পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট কাউন্সিল সমক্ষে পেশ করেন। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অধীনে [[১০১৯৫৩|জমিদার]] ও প্রজার মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ে তাঁর ধারণা ও মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে প্রণীত হয় ১৭৯৯ সালের রেগুলেশন-৭। এ প্রবিধানে খেলাপি প্রজাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা জমিদারদের দেওয়া হয়। এ রেগুলেশন বাংলার আইনি ইতিহাসে কোম্পানি শাসনের প্রথম কালো আইন নামে পরিচিত। তবে পার্লামেন্টের জন্য অনেকটা তার একক প্রচেষ্টায় প্রণীত ফিফ্থ রিপোর্টই সম্ভবত স্যামুয়েল ডেভিসের স্থায়ী অবদান। এটি ছিল বাংলায় এবং পরে ভারতে উপনিবেশিক শাসনের গোড়াপত্তন, সম্প্রসারণ ও প্রাথমিক কার্যক্রমের বিবরণ সম্বলিত একটি বৃহৎ সরকারি দলিল। ডেভিস তার সাহসিকতার জন্যও পরিচিত ছিলেন। ১৭৯৯ সালের ১৪ জানুয়ারি অযোধ্যার সিংহাসনচ্যূত নওয়াব ওয়াজির আলী বারাণসীতে গৃহবন্দি থাকাকালে সেখানে গণহারে ইংরেজ নিধনে এক বেপরোয়া উদ্যোগ গৃহীত হয়। বাড়ির সামরিক প্রহরীদের হত্যা করে নওয়াবের লোকজন ডেভিসের গৃহ অভিমুখে অগ্রসর হলে তারা ডেভিস কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়। তিনি বন্দুক হাতে পরিবার পরিজনকে রক্ষা করেন এবং সেকরোল ক্যান্টনমেন্ট থেকে সাহায্যকারী সেনাবাহিনী এসে না পৌঁছা পর্যন্ত ভারতীয় শত্রুদের ঠেকিয়ে রাখেন। ডেভিস ১৮০৯ থেকে ১৮১৯ সাল পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন পরিচালক ছিলেন। তিনি ১৮১৯ সালের ১৬ জুন মারা যান।  [সিরাজুল ইসলাম]
'''ডেভিস, স্যামুয়েল''' (১৭৬০-১৮১৯)  বিখ্যাত [[ফিফ্থ রিপোর্ট|ফিফ্থ রিপোর্ট ১৮১২]]-এর রচয়িতা। তিনি  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার্স কোরের একজন কর্মকর্তা হিসেবে ভারতে আসেন। পরবর্তীকালে তিনি কোম্পানির সিভিল সার্ভিসে আত্তীকৃত হন এবং [[চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত]|চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত]] এর পর বর্ধমানের জেলা কালেক্টর নিযুক্ত হন। ১৭৯৯ সালে বেনারসের রাজদরবারে তিনি গভর্নর জেনারেলের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। একজন চিত্রকর, জ্যোতির্বেত্তা ও অংকশাস্ত্রবিদ হিসেবে তিনি যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেন। জেলা কালেক্টর থাকাকালে ডেভিস নতুন উপনিবেশিক রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ক্রটিবিচ্যূতি ও মন্দ দিক সম্পর্কে বহু পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট কাউন্সিল সমক্ষে পেশ করেন। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অধীনে [[জমিদার|জমিদার]] ও প্রজার মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ে তাঁর ধারণা ও মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে প্রণীত হয় ১৭৯৯ সালের রেগুলেশন-৭। এ প্রবিধানে খেলাপি প্রজাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা জমিদারদের দেওয়া হয়। এ রেগুলেশন বাংলার আইনি ইতিহাসে কোম্পানি শাসনের প্রথম কালো আইন নামে পরিচিত। তবে পার্লামেন্টের জন্য অনেকটা তার একক প্রচেষ্টায় প্রণীত ফিফ্থ রিপোর্টই সম্ভবত স্যামুয়েল ডেভিসের স্থায়ী অবদান। এটি ছিল বাংলায় এবং পরে ভারতে উপনিবেশিক শাসনের গোড়াপত্তন, সম্প্রসারণ ও প্রাথমিক কার্যক্রমের বিবরণ সম্বলিত একটি বৃহৎ সরকারি দলিল। ডেভিস তার সাহসিকতার জন্যও পরিচিত ছিলেন। ১৭৯৯ সালের ১৪ জানুয়ারি অযোধ্যার সিংহাসনচ্যূত নওয়াব ওয়াজির আলী বারাণসীতে গৃহবন্দি থাকাকালে সেখানে গণহারে ইংরেজ নিধনে এক বেপরোয়া উদ্যোগ গৃহীত হয়। বাড়ির সামরিক প্রহরীদের হত্যা করে নওয়াবের লোকজন ডেভিসের গৃহ অভিমুখে অগ্রসর হলে তারা ডেভিস কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়। তিনি বন্দুক হাতে পরিবার পরিজনকে রক্ষা করেন এবং সেকরোল ক্যান্টনমেন্ট থেকে সাহায্যকারী সেনাবাহিনী এসে না পৌঁছা পর্যন্ত ভারতীয় শত্রুদের ঠেকিয়ে রাখেন। ডেভিস ১৮০৯ থেকে ১৮১৯ সাল পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন পরিচালক ছিলেন। তিনি ১৮১৯ সালের ১৬ জুন মারা যান।  [সিরাজুল ইসলাম]
 
<!-- imported from file: ডেভিস, স্যামুয়েল.html-->


[[en:Davis, Samuel]]
[[en:Davis, Samuel]]

১০:৩৫, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ডেভিস, স্যামুয়েল (১৭৬০-১৮১৯)  বিখ্যাত ফিফ্থ রিপোর্ট ১৮১২-এর রচয়িতা। তিনি  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার্স কোরের একজন কর্মকর্তা হিসেবে ভারতে আসেন। পরবর্তীকালে তিনি কোম্পানির সিভিল সার্ভিসে আত্তীকৃত হন এবং [[চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত]|চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত]] এর পর বর্ধমানের জেলা কালেক্টর নিযুক্ত হন। ১৭৯৯ সালে বেনারসের রাজদরবারে তিনি গভর্নর জেনারেলের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। একজন চিত্রকর, জ্যোতির্বেত্তা ও অংকশাস্ত্রবিদ হিসেবে তিনি যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেন। জেলা কালেক্টর থাকাকালে ডেভিস নতুন উপনিবেশিক রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ক্রটিবিচ্যূতি ও মন্দ দিক সম্পর্কে বহু পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট কাউন্সিল সমক্ষে পেশ করেন। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অধীনে জমিদার ও প্রজার মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ে তাঁর ধারণা ও মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে প্রণীত হয় ১৭৯৯ সালের রেগুলেশন-৭। এ প্রবিধানে খেলাপি প্রজাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা জমিদারদের দেওয়া হয়। এ রেগুলেশন বাংলার আইনি ইতিহাসে কোম্পানি শাসনের প্রথম কালো আইন নামে পরিচিত। তবে পার্লামেন্টের জন্য অনেকটা তার একক প্রচেষ্টায় প্রণীত ফিফ্থ রিপোর্টই সম্ভবত স্যামুয়েল ডেভিসের স্থায়ী অবদান। এটি ছিল বাংলায় এবং পরে ভারতে উপনিবেশিক শাসনের গোড়াপত্তন, সম্প্রসারণ ও প্রাথমিক কার্যক্রমের বিবরণ সম্বলিত একটি বৃহৎ সরকারি দলিল। ডেভিস তার সাহসিকতার জন্যও পরিচিত ছিলেন। ১৭৯৯ সালের ১৪ জানুয়ারি অযোধ্যার সিংহাসনচ্যূত নওয়াব ওয়াজির আলী বারাণসীতে গৃহবন্দি থাকাকালে সেখানে গণহারে ইংরেজ নিধনে এক বেপরোয়া উদ্যোগ গৃহীত হয়। বাড়ির সামরিক প্রহরীদের হত্যা করে নওয়াবের লোকজন ডেভিসের গৃহ অভিমুখে অগ্রসর হলে তারা ডেভিস কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়। তিনি বন্দুক হাতে পরিবার পরিজনকে রক্ষা করেন এবং সেকরোল ক্যান্টনমেন্ট থেকে সাহায্যকারী সেনাবাহিনী এসে না পৌঁছা পর্যন্ত ভারতীয় শত্রুদের ঠেকিয়ে রাখেন। ডেভিস ১৮০৯ থেকে ১৮১৯ সাল পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন পরিচালক ছিলেন। তিনি ১৮১৯ সালের ১৬ জুন মারা যান।  [সিরাজুল ইসলাম]