ডাফ, রেভারেন্ড আলেকজান্ডার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''ডাফ'''''', ''''''রেভারেন্ড আলেকজান্ডার '''(১৮০৬-১৮৭৮)  প্রেসবাইটেরিয়ান যাজকগোষ্ঠীর অনুসারী স্কটল্যান্ডের নাগরিক। উপনিবেশিক ভারত সরকারের শিক্ষামূলক এবং সামাজিক নীতিমালা বিষয়ে তাঁর ব্যাপক প্রভাব ছিল। খ্রিস্টধর্ম প্রচার সঙ্ঘ ‘কমিটি অব দি জেনারেল অ্যাসেম্বলি অব দি চার্চ অব স্কটল্যান্ড অন ফরেন মিশনস’ আলেকজান্ডার ডাফকে প্রথম মিশনারি হিসেবে বাংলায় প্রেরণ করে।
'''ডাফ', রেভারেন্ড আলেকজান্ডার''' (১৮০৬-১৮৭৮)  প্রেসবাইটেরিয়ান যাজকগোষ্ঠীর অনুসারী স্কটল্যান্ডের নাগরিক। উপনিবেশিক ভারত সরকারের শিক্ষামূলক এবং সামাজিক নীতিমালা বিষয়ে তাঁর ব্যাপক প্রভাব ছিল। খ্রিস্টধর্ম প্রচার সঙ্ঘ ‘কমিটি অব দি জেনারেল অ্যাসেম্বলি অব দি চার্চ অব স্কটল্যান্ড অন ফরেন মিশনস’ আলেকজান্ডার ডাফকে প্রথম মিশনারি হিসেবে বাংলায় প্রেরণ করে।


১৮৩০ সালে আলেকজান্ডার ডাফ  কলকাতায় আসেন। এর অব্যবহিত পরেই তিনি তৎকালীন শিক্ষানীতি সংক্রান্ত বিতর্কে জড়িত হন। সিভিলিয়ানদের মধ্যে যারা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদানের পক্ষে ছিলেন, আলেকজান্ডার ডাফ তাদের সমর্থন করেন। অন্যদিকে প্রাচ্যদেশীয় ভাষায় প্রাচ্যসভ্যতা সম্পর্কে শিক্ষাদানকে যারা সমর্থন করেন তারা ইংরেজি সমর্থকদের নিকট হেরে যান। ১৮৩৫ সালে সরকার ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদান এবং ইউরোপীয় বিজ্ঞান ও সাহিত্য প্রসারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।  
১৮৩০ সালে আলেকজান্ডার ডাফ  কলকাতায় আসেন। এর অব্যবহিত পরেই তিনি তৎকালীন শিক্ষানীতি সংক্রান্ত বিতর্কে জড়িত হন। সিভিলিয়ানদের মধ্যে যারা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদানের পক্ষে ছিলেন, আলেকজান্ডার ডাফ তাদের সমর্থন করেন। অন্যদিকে প্রাচ্যদেশীয় ভাষায় প্রাচ্যসভ্যতা সম্পর্কে শিক্ষাদানকে যারা সমর্থন করেন তারা ইংরেজি সমর্থকদের নিকট হেরে যান। ১৮৩৫ সালে সরকার ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদান এবং ইউরোপীয় বিজ্ঞান ও সাহিত্য প্রসারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।  


আলেকজান্ডার ডাফ ১৮৩০ থেকে ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত বাংলায় অবস্থান করেন, তবে মাঝে মাঝে অন্যত্রও ছিলেন। বাংলায় বসবাসের সময় তিনি মিশনের কাজে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেন এবং অসংখ্য মিশন স্কুল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। তিনি ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে গৃহীত সরকারের বর্বরোচিত পদক্ষেপের প্রচন্ড সমালোচনা এবং নীলচাষীদের উপর নিষ্ঠুর নির্যাতনের জোর বিরোধিতা করেন। ১৮৫৭ সালে [[১০০৮৯১|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] প্রতিষ্ঠা, এর পাঠ্যক্রম প্রণয়ন এবং পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তনে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত সক্রিয়। ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত ডাফ বেথুন সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রচিত ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়ান মিশনস  গ্রন্থে খ্রিস্টধর্ম প্রচার সংক্রান্ত উদ্দীপনা এবং তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার প্রকাশ ঘটেছে। ১৮৪৫ থেকে ১৮৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি বিখ্যাত পত্রিকা [[১০১২১৬|ক্যালকাটা রিভিউ]] এর সম্পাদক ছিলেন। ১৮৭৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আলেকজান্ডার ডাফ মারা যান।  [সিরাজুল ইসলাম]
আলেকজান্ডার ডাফ ১৮৩০ থেকে ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত বাংলায় অবস্থান করেন, তবে মাঝে মাঝে অন্যত্রও ছিলেন। বাংলায় বসবাসের সময় তিনি মিশনের কাজে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেন এবং অসংখ্য মিশন স্কুল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। তিনি ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে গৃহীত সরকারের বর্বরোচিত পদক্ষেপের প্রচন্ড সমালোচনা এবং নীলচাষীদের উপর নিষ্ঠুর নির্যাতনের জোর বিরোধিতা করেন। ১৮৫৭ সালে [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] প্রতিষ্ঠা, এর পাঠ্যক্রম প্রণয়ন এবং পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তনে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত সক্রিয়। ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত ডাফ বেথুন সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রচিত ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়ান মিশনস  গ্রন্থে খ্রিস্টধর্ম প্রচার সংক্রান্ত উদ্দীপনা এবং তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার প্রকাশ ঘটেছে। ১৮৪৫ থেকে ১৮৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি বিখ্যাত পত্রিকা [[ক্যালকাটা রিভিউ|ক্যালকাটা রিভিউ]] এর সম্পাদক ছিলেন। ১৮৭৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আলেকজান্ডার ডাফ মারা যান।  [সিরাজুল ইসলাম]
 
<!-- imported from file: ডাফ, রেভারেন্ড আলেকজান্ডার.html-->


[[en:Duff, Rev. Alexander]]
[[en:Duff, Rev. Alexander]]

০৮:৩৮, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ডাফ', রেভারেন্ড আলেকজান্ডার (১৮০৬-১৮৭৮)  প্রেসবাইটেরিয়ান যাজকগোষ্ঠীর অনুসারী স্কটল্যান্ডের নাগরিক। উপনিবেশিক ভারত সরকারের শিক্ষামূলক এবং সামাজিক নীতিমালা বিষয়ে তাঁর ব্যাপক প্রভাব ছিল। খ্রিস্টধর্ম প্রচার সঙ্ঘ ‘কমিটি অব দি জেনারেল অ্যাসেম্বলি অব দি চার্চ অব স্কটল্যান্ড অন ফরেন মিশনস’ আলেকজান্ডার ডাফকে প্রথম মিশনারি হিসেবে বাংলায় প্রেরণ করে।

১৮৩০ সালে আলেকজান্ডার ডাফ  কলকাতায় আসেন। এর অব্যবহিত পরেই তিনি তৎকালীন শিক্ষানীতি সংক্রান্ত বিতর্কে জড়িত হন। সিভিলিয়ানদের মধ্যে যারা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদানের পক্ষে ছিলেন, আলেকজান্ডার ডাফ তাদের সমর্থন করেন। অন্যদিকে প্রাচ্যদেশীয় ভাষায় প্রাচ্যসভ্যতা সম্পর্কে শিক্ষাদানকে যারা সমর্থন করেন তারা ইংরেজি সমর্থকদের নিকট হেরে যান। ১৮৩৫ সালে সরকার ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদান এবং ইউরোপীয় বিজ্ঞান ও সাহিত্য প্রসারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

আলেকজান্ডার ডাফ ১৮৩০ থেকে ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত বাংলায় অবস্থান করেন, তবে মাঝে মাঝে অন্যত্রও ছিলেন। বাংলায় বসবাসের সময় তিনি মিশনের কাজে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেন এবং অসংখ্য মিশন স্কুল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। তিনি ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে গৃহীত সরকারের বর্বরোচিত পদক্ষেপের প্রচন্ড সমালোচনা এবং নীলচাষীদের উপর নিষ্ঠুর নির্যাতনের জোর বিরোধিতা করেন। ১৮৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, এর পাঠ্যক্রম প্রণয়ন এবং পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তনে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত সক্রিয়। ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত ডাফ বেথুন সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রচিত ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়ান মিশনস  গ্রন্থে খ্রিস্টধর্ম প্রচার সংক্রান্ত উদ্দীপনা এবং তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার প্রকাশ ঘটেছে। ১৮৪৫ থেকে ১৮৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি বিখ্যাত পত্রিকা ক্যালকাটা রিভিউ এর সম্পাদক ছিলেন। ১৮৭৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আলেকজান্ডার ডাফ মারা যান।  [সিরাজুল ইসলাম]