টেরিডোফাইট
টেরিডোফাইট (Pteridophyte) ফার্নজাতীয় উদ্ভিদ। গ্রিক শব্দ ‘টেরিস’ (pteris) অর্থ ফার্ন এবং ‘ফাইটন’ (phyton) অর্থ উদ্ভিদ। এ ধরনের উদ্ভিদ জলজ পরিবেশ ছেড়ে কালক্রমে স্থলভাগে স্থানান্তরিত হতে থাকে এবং স্থানান্তরকালে এদের কিছু সদস্য জলজ ও স্থলজ পরিবেশের অন্তর্বর্তী ক্ষেত্রে রয়ে যায়। এসব উদ্ভিদের বহিরঙ্গের পরিবর্তনের ফলে মূল, কান্ড ও পাতার উৎপত্তি হয়। স্থলচর হিসেবে উদ্বর্তিত এসব উদ্ভিদের বংশবিস্তার ঘটে স্পোর রেণুর মাধ্যমে। গোত্রগতভাবে (phylogenetically) এদের অবস্থান সপুস্পক ও অপুস্পক উদ্ভিদের মধ্যবর্তী পর্যায়ে। টেরিডোফাইটের বেশির ভাগ প্রজাতিতেই পরিবহন কলাগুচ্ছ থাকে। এদের জননাঙ্গ বহুকোষী এবং বন্ধ্যাকোষ দ্বারা পরিবেষ্টিত। এরা মূলত স্থলজ উদ্ভিদ হলেও বংশবিস্তারের ক্ষেত্রে এদের পানির প্রয়োজন হয়।
টেরিডোফাইট মূলত উষ্ণমন্ডল ও উপ-উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে। প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ১৫,৫০০। এর প্রায় ১১,০০০ প্রজাতিই ফার্ন। ভারত উপমহাদেশে প্রায় ৯০০ প্রজাতির টেরিডোফাইট জন্মে। বাংলাদেশের মোট ২৫০ প্রজাতির টেরিডোফাইটের ২৩০টিই ফার্ন এবং এগুলি সাধারণ উদ্ভিদ, পরাশ্রয়ী, শৈল বা জলজ উদ্ভিদ।
টেরিডোফাইটের সিংহভাগই ঔষধি। অর্থনৈতিক দিক থেকেও এরা কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ। এদের মধ্যে কোনো কোনো উদ্ভিদ শাকসবজি হিসেবে ব্যবহূত হয়। শোভাবর্ধনের জন্য এদের অনেক প্রজাতি টবে লাগানো হয়। টেরিডোফাইট ছায়াযুক্ত, স্যাঁতসেঁতে জায়গায়, পুরনো দেয়ালে এবং বড় গাছের কান্ডে জন্মে থাকে। [মোস্তফা কামাল পাশা]