টেম্পল, স্যার রিচার্ড: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''টেম্পল, স্যার রিচার্ড''' (১৮২৬-১৯০২)  উচ্চপদস্থ সিভিলিয়ান ও বাংলার [[লেফটেন্যান্ট গভর্নর|লেফটেন্যান্ট গভর্নর]] (১৮৭৪-১৮৭৭)। তিনি ১৮২৬ সালের ৮ মার্চ জন্ম গ্রহণ করেন এবং রাগবি ও হেইলিবেরি কলেজে শিক্ষা গ্রহণের পর ১৮৪৭ সালে বঙ্গীয় সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। কিন্তু শীঘ্রই তাঁকে মধ্যপ্রদেশে বদলি করা হয় যেখানে তিনি বেশ কয়েকটি উচ্চপদে আসীন ছিলেন, যার মধ্যে ছিল মধ্য প্রদেশের চীফ কমিশনারের পদ ও হায়দ্রাবাদে ব্রিটিশ রাজের প্রতিনিধি। ১৮৬৮ সালে তিনি ভারত সরকারের বিদেশ সচিব এবং ১৮৬৮ থেকে ১৮৭৪ সাল পর্যন্ত গভর্নর জেনারেলের কাউন্সিলে অর্থ-সদস্য ছিলেন। গভর্নর জেনারেল [[নর্থব্রুক, লর্ড|নর্থব্রুক]] ১৮৭৪ সালের এপ্রিল মাসে তাঁকে বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর নিযুক্ত করেন। এ পদে তিনি ১৮৭৭ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন।  
'''টেম্পল, স্যার রিচার্ড''' (১৮২৬-১৯০২)  উচ্চপদস্থ সিভিলিয়ান ও বাংলার [[লেফটেন্যান্ট গভর্নর|লেফটেন্যান্ট গভর্নর]] (১৮৭৪-১৮৭৭)। তিনি ১৮২৬ সালের ৮ মার্চ জন্ম গ্রহণ করেন এবং রাগবি ও হেইলিবেরি কলেজে শিক্ষা গ্রহণের পর ১৮৪৭ সালে বঙ্গীয় সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। কিন্তু শীঘ্রই তাঁকে মধ্যপ্রদেশে বদলি করা হয় যেখানে তিনি বেশ কয়েকটি উচ্চপদে আসীন ছিলেন, যার মধ্যে ছিল মধ্য প্রদেশের চীফ কমিশনারের পদ ও হায়দ্রাবাদে ব্রিটিশ রাজের প্রতিনিধি। ১৮৬৮ সালে তিনি ভারত সরকারের বিদেশ সচিব এবং ১৮৬৮ থেকে ১৮৭৪ সাল পর্যন্ত গভর্নর জেনারেলের কাউন্সিলে অর্থ-সদস্য ছিলেন। গভর্নর জেনারেল [[নর্থব্রুক, লর্ড|নর্থব্রুক]] ১৮৭৪ সালের এপ্রিল মাসে তাঁকে বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর নিযুক্ত করেন। এ পদে তিনি ১৮৭৭ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন।  


[[Image:TempleSirRichard.jpg|thumb|400px|স্যার টেম্পল রিচার্ড]]
সংক্ষিপ্ত শাসনামলে টেম্পলকে অধিকাংশ সময় দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনায় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। দুর্ভিক্ষ ছাড়াও তাঁর প্রশাসনকে ১৮৭৪ সালের ১৫-১৬ অক্টোবরে [[কলকাতা|কলকাতা]]  নগর  ও  বন্দর বিধ্বস্তকারী প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি পূরণের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। দুর্ভিক্ষ ও ঘূর্ণিঝড়ের পরপরই মহামারি আকারে শুরু হয় কালাজ্বর এর প্রকোপ যা এক বিশেষ ধরনের ম্যালোরিয়া। টেম্পল ধারাবাহিক দুর্যোগসমূহকে অত্যন্ত সাফল্যের সাথে মোকাবিলা করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে তাঁর দক্ষতা ভারত সরকারকে ১৮৭৭ সালে দুর্ভিক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য তাঁকে মাদ্রাজ ও বোম্বেতে পাঠাতে প্রণোদিত করে। ১৮৮০ সালের মার্চ মাসে তিনি ইংল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন করেন।  
সংক্ষিপ্ত শাসনামলে টেম্পলকে অধিকাংশ সময় দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনায় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। দুর্ভিক্ষ ছাড়াও তাঁর প্রশাসনকে ১৮৭৪ সালের ১৫-১৬ অক্টোবরে [[কলকাতা|কলকাতা]]  নগর  ও  বন্দর বিধ্বস্তকারী প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি পূরণের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। দুর্ভিক্ষ ও ঘূর্ণিঝড়ের পরপরই মহামারি আকারে শুরু হয় কালাজ্বর এর প্রকোপ যা এক বিশেষ ধরনের ম্যালোরিয়া। টেম্পল ধারাবাহিক দুর্যোগসমূহকে অত্যন্ত সাফল্যের সাথে মোকাবিলা করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে তাঁর দক্ষতা ভারত সরকারকে ১৮৭৭ সালে দুর্ভিক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য তাঁকে মাদ্রাজ ও বোম্বেতে পাঠাতে প্রণোদিত করে। ১৮৮০ সালের মার্চ মাসে তিনি ইংল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন করেন।  


ইংল্যান্ডে ফিরে গিয়ে রিচার্ড টেম্পল রক্ষণশীল দল থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর ভারতের অভিজ্ঞতাকে তিনি মানবিক সমস্যা ও সম্পর্ক বিষয়ে গবেষণা চালাতে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান। তাঁর সাহিত্য কর্মের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত: ইন্ডিয়া ইন ১৮৮০; মেন অ্যান্ড ইভেন্টস্ অব মাই টাইম ইন ইন্ডিয়া, ১৮৮২; ওরিয়েন্টাল এক্সপেরিয়েন্সেস, ১৮৮৩; কসমোপলিটান এসেস, ১৮৮৬; দি স্টোরি অব মাই লাইফ, ১৮৯৬; এ বার্ডস আই ভিউ অব পিকচারস্ক ইন্ডিয়া, ১৮৯৮।
ইংল্যান্ডে ফিরে গিয়ে রিচার্ড টেম্পল রক্ষণশীল দল থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর ভারতের অভিজ্ঞতাকে তিনি মানবিক সমস্যা ও সম্পর্ক বিষয়ে গবেষণা চালাতে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান। তাঁর সাহিত্য কর্মের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত: ইন্ডিয়া ইন ১৮৮০; মেন অ্যান্ড ইভেন্টস্ অব মাই টাইম ইন ইন্ডিয়া, ১৮৮২; ওরিয়েন্টাল এক্সপেরিয়েন্সেস, ১৮৮৩; কসমোপলিটান এসেস, ১৮৮৬; দি স্টোরি অব মাই লাইফ, ১৮৯৬; এ বার্ডস আই ভিউ অব পিকচারস্ক ইন্ডিয়া, ১৮৯৮।
[[Image:RichardempleSir.jpg|thumb|400px|স্যার টেম্পল রিচার্ড


দুর্ভিক্ষ সামাল দিতে তাঁর নিষ্ঠাপূর্ণ কর্তব্যপালন ও বুদ্ধিবৃত্তিক অবদানসমূহের স্বীকৃতি হিসেবে টেম্পলকে বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়। এগুলি হল; সি.এস.আই (১৮৬৬), কে.সি.এস.আই (১৮৬৭), ব্যারন (১৮৭৬), জি.সি.এস.আই (১৮৭৮), এবং অক্সফোর্ডের ডি.সি.এল, ক্যামব্রিজের এল.এল.ডি এবং এফ.আর.এস। ১৮৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে টেম্পল প্রিভি কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে শপথ নেন। ১৯০২ সালের ১৫ মার্চ স্যার টেম্পল রিচার্ড-এর মৃত্যু হয়।  [সিরাজুল ইসলাম]
দুর্ভিক্ষ সামাল দিতে তাঁর নিষ্ঠাপূর্ণ কর্তব্যপালন ও বুদ্ধিবৃত্তিক অবদানসমূহের স্বীকৃতি হিসেবে টেম্পলকে বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়। এগুলি হল; সি.এস.আই (১৮৬৬), কে.সি.এস.আই (১৮৬৭), ব্যারন (১৮৭৬), জি.সি.এস.আই (১৮৭৮), এবং অক্সফোর্ডের ডি.সি.এল, ক্যামব্রিজের এল.এল.ডি এবং এফ.আর.এস। ১৮৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে টেম্পল প্রিভি কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে শপথ নেন। ১৯০২ সালের ১৫ মার্চ স্যার টেম্পল রিচার্ড-এর মৃত্যু হয়।  [সিরাজুল ইসলাম]


[[en:Temple, Sir Richard]]
[[en:Temple, Sir Richard]]

০৬:০৫, ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

টেম্পল, স্যার রিচার্ড (১৮২৬-১৯০২)  উচ্চপদস্থ সিভিলিয়ান ও বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর (১৮৭৪-১৮৭৭)। তিনি ১৮২৬ সালের ৮ মার্চ জন্ম গ্রহণ করেন এবং রাগবি ও হেইলিবেরি কলেজে শিক্ষা গ্রহণের পর ১৮৪৭ সালে বঙ্গীয় সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। কিন্তু শীঘ্রই তাঁকে মধ্যপ্রদেশে বদলি করা হয় যেখানে তিনি বেশ কয়েকটি উচ্চপদে আসীন ছিলেন, যার মধ্যে ছিল মধ্য প্রদেশের চীফ কমিশনারের পদ ও হায়দ্রাবাদে ব্রিটিশ রাজের প্রতিনিধি। ১৮৬৮ সালে তিনি ভারত সরকারের বিদেশ সচিব এবং ১৮৬৮ থেকে ১৮৭৪ সাল পর্যন্ত গভর্নর জেনারেলের কাউন্সিলে অর্থ-সদস্য ছিলেন। গভর্নর জেনারেল নর্থব্রুক ১৮৭৪ সালের এপ্রিল মাসে তাঁকে বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর নিযুক্ত করেন। এ পদে তিনি ১৮৭৭ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন।

স্যার টেম্পল রিচার্ড

সংক্ষিপ্ত শাসনামলে টেম্পলকে অধিকাংশ সময় দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনায় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। দুর্ভিক্ষ ছাড়াও তাঁর প্রশাসনকে ১৮৭৪ সালের ১৫-১৬ অক্টোবরে কলকাতা  নগর  ও  বন্দর বিধ্বস্তকারী প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি পূরণের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। দুর্ভিক্ষ ও ঘূর্ণিঝড়ের পরপরই মহামারি আকারে শুরু হয় কালাজ্বর এর প্রকোপ যা এক বিশেষ ধরনের ম্যালোরিয়া। টেম্পল ধারাবাহিক দুর্যোগসমূহকে অত্যন্ত সাফল্যের সাথে মোকাবিলা করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে তাঁর দক্ষতা ভারত সরকারকে ১৮৭৭ সালে দুর্ভিক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য তাঁকে মাদ্রাজ ও বোম্বেতে পাঠাতে প্রণোদিত করে। ১৮৮০ সালের মার্চ মাসে তিনি ইংল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন করেন।

ইংল্যান্ডে ফিরে গিয়ে রিচার্ড টেম্পল রক্ষণশীল দল থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর ভারতের অভিজ্ঞতাকে তিনি মানবিক সমস্যা ও সম্পর্ক বিষয়ে গবেষণা চালাতে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান। তাঁর সাহিত্য কর্মের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত: ইন্ডিয়া ইন ১৮৮০; মেন অ্যান্ড ইভেন্টস্ অব মাই টাইম ইন ইন্ডিয়া, ১৮৮২; ওরিয়েন্টাল এক্সপেরিয়েন্সেস, ১৮৮৩; কসমোপলিটান এসেস, ১৮৮৬; দি স্টোরি অব মাই লাইফ, ১৮৯৬; এ বার্ডস আই ভিউ অব পিকচারস্ক ইন্ডিয়া, ১৮৯৮।

দুর্ভিক্ষ সামাল দিতে তাঁর নিষ্ঠাপূর্ণ কর্তব্যপালন ও বুদ্ধিবৃত্তিক অবদানসমূহের স্বীকৃতি হিসেবে টেম্পলকে বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়। এগুলি হল; সি.এস.আই (১৮৬৬), কে.সি.এস.আই (১৮৬৭), ব্যারন (১৮৭৬), জি.সি.এস.আই (১৮৭৮), এবং অক্সফোর্ডের ডি.সি.এল, ক্যামব্রিজের এল.এল.ডি এবং এফ.আর.এস। ১৮৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে টেম্পল প্রিভি কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে শপথ নেন। ১৯০২ সালের ১৫ মার্চ স্যার টেম্পল রিচার্ড-এর মৃত্যু হয়। [সিরাজুল ইসলাম]