টুঙ্গিপাড়া উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''টুঙ্গিপাড়া উপজেলা''' ([[গোপালগঞ্জ জেলা|গোপালগঞ্জ জেলা]])  আয়তন: ১২৭.৮৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫০´ থেকে ২৩°০১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৮´ থেকে ৮৯°৫৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গোপালগঞ্জ সদর ও কোটালিপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে চিতলমারী ও নাজিরপুর উপজেলা, পূর্বে কোটালিপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে মোল্লাহাট ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা।
'''টুঙ্গিপাড়া উপজেলা''' ([[গোপালগঞ্জ জেলা|গোপালগঞ্জ জেলা]])  আয়তন: ১২৮.৫৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫০´ থেকে ২৩°০১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৮´ থেকে ৮৯°৫৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গোপালগঞ্জ সদর ও কোটালিপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে চিতলমারী ও নাজিরপুর উপজেলা, পূর্বে কোটালিপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে মোল্লাহাট ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ৯৯৪৬২; পুরুষ ৫২০১৫, মহিলা ৪৭৪৪৭। মুসলিম ৬৭২৫০, হিন্দু ৩২১২৮, বৌদ্ধ ৭৪ এবং অন্যান্য ১০।
''জনসংখ্যা'' ১০০৮৯৩; পুরুষ ৫০৫১৭, মহিলা ৫০৩৭৬। মুসলিম ৭১৩৭০, হিন্দু ২৯৪২৭, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ৮৬ এবং অন্যান্য ৯।


''জলাশয়'' মধুমতি, সাইলদা, দরিয়ারগাঙ ও ঘাগর নদী এবং টুংরি খাল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' মধুমতি, সাইলদা, দরিয়ারগাঙ ও ঘাগর নদী এবং টুংরি খাল উল্লেখযোগ্য।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ৫ || ৪৭  || ৮৭  || ৫৯০৬  || ৯৩৫৫৬  || ৭৮২  || ৫৫.১ || ৫০.৬৯
| ১ || ৫ || ৩৩ || ৬৭ || ৩৮০২০ || ৬২৮৭৩ || ৭৮৫ || ৫৫.১ (২০০১) || ৫৫.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
|-
|-
| ২.১০  || ০৯  || ১৩ || ৫৯০৬  || ২৮১২  || ৫৮.
| ২.৫৭ || || ১৩ || ৮৫৯৬ || ৩৩৪৫ || ৬৩.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩২ নং লাইন: ৩২ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজার সংখ্যা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজার সংখ্যা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
|-
|-
| ৩০.৩৯ || ১০  || ৩০৬৫৮  || ১০০৯ || ৫৪.৫  
| ৩০.৩৯ (২০০১) || || ২৯৪২৪ || ১০০৯ (২০০১) || ৫৭.৫
|}
|}


৪৩ নং লাইন: ৪৩ নং লাইন:
|  পুরুষ  || মহিলা
|  পুরুষ  || মহিলা
|-
|-
| কুশলি ৬৬ || ৪১৪৬  || ৭২৩৪ || ৭০৩৬  || ৪৪.৭২
| কুশলি ৬৬ || ৪০১৮ || ৭৩৭৮ || ৭৫৫৫ || ৪৭.
|-
|-
| গোপালপুর ৩৮ || ৯১৮৯  || ৮৩৬৮ || ৭৬০২  || ৫৭.৪২
| গোপালপুর ৩৮ || ৯১৬৪ || ৭৬৩০ || ৭২৫০ || ৫৯.
|-
|-
| ডুমুরিয়া ২৮ || ৭৮৭৮  || ১০৭৮১ || ৯৯৩৯  || ৫২.২৯
| ডুমুরিয়া ২৮ || ৭৪৫৪ || ১০৪১৭ || ১০২৮১ || ৫৮.
|-
|-
| পাটগাতী ৭৬ || ৭১১৫  || ১৫৭৭৭ || ১৩৮১৬  || ৫৪.৭৯
| পাটগাতী ৭৬ || ৭২৫৬ || ১৩৯৬২ || ১৪১৭০ || ৫৮.
|-
|-
| বর্ণী ১৯ || ৩১১৪  || ৬৭২৪ || ৬২৭৯  || ৪৪.২৩
| বর্ণী ১৯ || ৩২৩৩ || ৬৭৬০ || ৬৮৯৪ || ৫১.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:TungiparaUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
[[Image:TungiparaUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ১৯ মে পাকবাহিনী টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আক্রমণ করে। ওই দিন তারা শেখ মিঠু, আরশাদ আলী, তোরাব আলী, ধলা মিয়া, সর্দার ও লিকুকে হত্যাসহ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ১১ জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা (হেমায়েত বাহিনী) বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে অবস্থানরত রাজাকারদের ঘাটি আক্রমণ করে তাদের পরাজিত ও বিতাড়িত করে।  
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ১৯ মে পাকবাহিনী টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আক্রমণ করে। দিন তারা শেখ মিঠু, আরশাদ আলী, তোরাব আলী, ধলা মিয়া, সর্দার ও লিকুকে হত্যাসহ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ১১ জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা (হেমায়েত বাহিনী) বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে অবস্থানরত রাজাকারদের ঘাটি আক্রমণ করে তাদের পরাজিত ও বিতাড়িত করে। উপজেলায় যেসব স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয় সেসবের মধ্যে জুলাই মাসে পাটগাতিতে সংঘটিত যুদ্ধ অন্যতম। এছাড়া অক্টোবর মাসে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা খুলনা থেকে ঢাকাগামী একটি স্টিমারের উপর অপারেশন চালিয়ে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি দালালকে আটক করে।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ১৩৬, মন্দির ২৪৩, গির্জা ৩, মাযার ১।
''বিস্তারিত দেখুন'' টুঙ্গিপাড়া উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৫২.%; পুরুষ ৫৪.২%, মহিলা ৪৯.%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৫, কেজি স্কুল ৪, মাদ্রাসা ৫, মক্তব ১২৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শেখ মুজিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), ড: ইমদাদুল হক মেমোরিয়াল কলেজ, নিলফা বয়রা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), গিমাডাঙ্গা-টুংগিপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), গিমাডাঙ্গা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৬), গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বাঁশবাড়িয়া ঝনঝনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, গহরডাঙ্গা খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ১৩৬, মন্দির ২৪৩, গির্জা ৩, মাযার ১।
 
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৬.%; পুরুষ ৫৭.২%, মহিলা ৫৬.%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৫, কেজি স্কুল ৪, মাদ্রাসা ৫, মক্তব ১২৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শেখ মুজিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), ড: ইমদাদুল হক মেমোরিয়াল কলেজ, নিলফা বয়রা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), গিমাডাঙ্গা-টুংগিপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), গিমাডাঙ্গা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৬), গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বাঁশবাড়িয়া ঝনঝনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, গহরডাঙ্গা খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান''  লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ২১, সিনেমা হল ১, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২, ক্রীড়া সংগঠন ৫, মহিলা সমিতি ২৯।  
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান''  লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ২১, সিনেমা হল ১, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২, ক্রীড়া সংগঠন ৫, মহিলা সমিতি ২৯।  
৭৮ নং লাইন: ৮০ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' চিংড়ি ঘের ১৫৯৬, গবাদিপশু ১৭, হাঁস-মুরগি ৬৮, হ্যাচারি ২।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' চিংড়ি ঘের ১৫৯৬, গবাদিপশু ১৭, হাঁস-মুরগি ৬৮, হ্যাচারি ২।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৯৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ৯১ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১৪৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৩০ কিমি; নৌপথ ১০ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি।  
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি।  
৯০ নং লাইন: ৯২ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  পাট, তালের গুড়, গম, মিষ্টি আলু, শাকসবজি।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  পাট, তালের গুড়, গম, মিষ্টি আলু, শাকসবজি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার''  এ উপজেলার সবকটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৯.২৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।  
''বিদ্যুৎ ব্যবহার''  এ উপজেলার সবকটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬১.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''প্রাকৃতিক সম্পদ''  এ উপজেলার বর্ণীর বাওড় এলাকায় পিট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে।
''প্রাকৃতিক সম্পদ'' এ উপজেলার বর্ণীর বাওড় এলাকায় পিট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে।


''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৮১.৩৯%,'' ''ট্যাপ .৫৫%, পুকুর ৮.৪৬% এবং অন্যান্য .৬০%। এ উপজেলার ৮১% অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৭৮.%, ট্যাপ ১৫.% এবং অন্যান্য .%। এ উপজেলার ৮১% অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৪৭.৯১% (গ্রামে ৪৫.৬৬% এবং শহরে ৫১.৮১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪০.২৩% (গ্রামে ৪৩.০৩% এবং শহরে ৩৫.৩৪%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১১.৮৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৯২.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং .% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, হাসপাতাল ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, হাসপাতাল ১।
১০২ নং লাইন: ১০৪ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, কারিতাস, আশা, ওয়ার্ল্ড ভিশন, সিসিডিবি।  [পরিতোষ হালদার]  
''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, কারিতাস, আশা, ওয়ার্ল্ড ভিশন, সিসিডিবি।  [পরিতোষ হালদার]  


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Tungipara Upazila]]
[[en:Tungipara Upazila]]

১৭:৩১, ২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা (গোপালগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ১২৮.৫৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫০´ থেকে ২৩°০১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৮´ থেকে ৮৯°৫৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গোপালগঞ্জ সদর ও কোটালিপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে চিতলমারী ও নাজিরপুর উপজেলা, পূর্বে কোটালিপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে মোল্লাহাট ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১০০৮৯৩; পুরুষ ৫০৫১৭, মহিলা ৫০৩৭৬। মুসলিম ৭১৩৭০, হিন্দু ২৯৪২৭, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ৮৬ এবং অন্যান্য ৯।

জলাশয় মধুমতি, সাইলদা, দরিয়ারগাঙ ও ঘাগর নদী এবং টুংরি খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন টুঙ্গিপাড়া থানা গঠিত হয় ১৯৭৪ সালে এবং থানা উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৯৫ সালে। টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৯৭ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৩৩ ৬৭ ৩৮০২০ ৬২৮৭৩ ৭৮৫ ৫৫.১ (২০০১) ৫৫.৩
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২.৫৭ ১৩ ৮৫৯৬ ৩৩৪৫ ৬৩.০
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজার সংখ্যা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩০.৩৯ (২০০১) ২৯৪২৪ ১০০৯ (২০০১) ৫৭.৫
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন(একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কুশলি ৬৬ ৪০১৮ ৭৩৭৮ ৭৫৫৫ ৪৭.৩
গোপালপুর ৩৮ ৯১৬৪ ৭৬৩০ ৭২৫০ ৫৯.৩
ডুমুরিয়া ২৮ ৭৪৫৪ ১০৪১৭ ১০২৮১ ৫৮.৯
পাটগাতী ৭৬ ৭২৫৬ ১৩৯৬২ ১৪১৭০ ৫৮.৭
বর্ণী ১৯ ৩২৩৩ ৬৭৬০ ৬৮৯৪ ৫১.৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৯ মে পাকবাহিনী টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আক্রমণ করে। ঐ দিন তারা শেখ মিঠু, আরশাদ আলী, তোরাব আলী, ধলা মিয়া, সর্দার ও লিকুকে হত্যাসহ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ১১ জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা (হেমায়েত বাহিনী) বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে অবস্থানরত রাজাকারদের ঘাটি আক্রমণ করে তাদের পরাজিত ও বিতাড়িত করে। উপজেলায় যেসব স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয় সেসবের মধ্যে জুলাই মাসে পাটগাতিতে সংঘটিত যুদ্ধ অন্যতম। এছাড়া অক্টোবর মাসে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা খুলনা থেকে ঢাকাগামী একটি স্টিমারের উপর অপারেশন চালিয়ে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি দালালকে আটক করে।

বিস্তারিত দেখুন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৩৬, মন্দির ২৪৩, গির্জা ৩, মাযার ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৬.৬%; পুরুষ ৫৭.২%, মহিলা ৫৬.০%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৫, কেজি স্কুল ৪, মাদ্রাসা ৫, মক্তব ১২৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শেখ মুজিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), ড: ইমদাদুল হক মেমোরিয়াল কলেজ, নিলফা বয়রা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), গিমাডাঙ্গা-টুংগিপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), গিমাডাঙ্গা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৬), গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বাঁশবাড়িয়া ঝনঝনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, গহরডাঙ্গা খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ২১, সিনেমা হল ১, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২, ক্রীড়া সংগঠন ৫, মহিলা সমিতি ২৯।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বঙ্গবন্ধু স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭০.০৮%, অকৃষি শ্রমিক ২.১৯%, ব্যবসা ১১.৩৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৯৯%, চাকরি ৮.৮২%, নির্মাণ ০.৫৮%, ধর্মীয় সেবা ০.৪১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৫% এবং অন্যান্য ৫.২২%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৯.৯৯%, ভূমিহীন ৩০.০১। শহরে ৫৮.২৬% এবং গ্রামে ৭৬.৭৩% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, সরিষা, ডাল, মিষ্টি আলু, চীনাবাদাম, সূর্যমুখী, আখ, গম, পান, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় কৃষি ফসল  তিল, তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল, তাল, পেয়ারা, লেবু, লিচু।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার চিংড়ি ঘের ১৫৯৬, গবাদিপশু ১৭, হাঁস-মুরগি ৬৮, হ্যাচারি ২।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৪৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৩০ কিমি; নৌপথ ১০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা বেকারি, আইস ফ্যাক্টরি, ইটভাটা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প, বেতের কাজ, বাuঁশর কাজ, নকশি কাঁথা, নকশি পাখা, খেজুর পাতার পাটি, বিভিন্ন প্রকার জাল।

হাটবাজার ও মেলা পাটগাতী হাট, টুঙ্গিপাড়া হাট, নিলফা বাজার, বাঁশবাড়িয়া হাট, কুশলি হাট, তারাইল হাট, বাসুরিয়া হাট, গিমাডাঙ্গা হাট, সিংগীপাড়া হাট, ডুমুরিয়া হাট, লেবুতলা হাট, বর্ণীর হাট এবং গওহরডাঙ্গা মেলা, জোয়ারিয়া মেলা, ডুমুরিয়া মেলা ও গোপালপুর মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পাট, তালের গুড়, গম, মিষ্টি আলু, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবকটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬১.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ এ উপজেলার বর্ণীর বাওড় এলাকায় পিট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৭৮.৬%, ট্যাপ ১৫.৪% এবং অন্যান্য ৬.০%। এ উপজেলার ৮১% অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৯২.১% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬.৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, হাসপাতাল ১।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, কারিতাস, আশা, ওয়ার্ল্ড ভিশন, সিসিডিবি।  [পরিতোষ হালদার]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।