ঝালকাঠি সদর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''ঝালকাঠি সদর উপজেলা''' ([[ঝালকাঠি জেলা|ঝালকাঠি জেলা]]) আয়তন: ২০৪.৪৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৩৫´ থেকে ২২°৪৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৬´ থেকে ৯০°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বানারীপাড়া, উজিরপুর এবং বাবুগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে রাজাপুর উপজেলা, পূর্বে বরিশাল সদর ও নলছিটি উপজেলা, পশ্চিমে কাউখালী (পিরোজপুর), স্বরূপকাঠি সদর ও বানারীপাড়া উপজেলা।
'''ঝালকাঠি সদর উপজেলা''' ([[ঝালকাঠি জেলা|ঝালকাঠি জেলা]]) আয়তন: ১৫৯.৪৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৩৫´ থেকে ২২°৪৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৬´ থেকে ৯০°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বানারীপাড়া, উজিরপুর এবং বাবুগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে রাজাপুর উপজেলা, পূর্বে বরিশাল সদর ও নলছিটি উপজেলা, পশ্চিমে কাউখালী (পিরোজপুর), স্বরূপকাঠি সদর ও বানারীপাড়া উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ২০০১১৭; পুরুষ ১০১০৭৫, মহিলা ৯৯০৪২। মুসলিম ১৬৬১৭৬, হিন্দু ৩৩৮৩১, বৌদ্ধ ৫০, খ্রিস্টান ৩০ এবং অন্যান্য ৩০।
''জনসংখ্যা'' ২১৬৩৪৮; পুরুষ ১০৫৪৬৮, মহিলা ১১০৮৮০। মুসলিম ১৮২১৭০, হিন্দু ৩৪১২৩, বৌদ্ধ ২২, খ্রিস্টান ১৪ এবং অন্যান্য ১৯।


''জলাশয়'' গজালিয়া, বিষখালী উল্লেখযোগ্য।  
''জলাশয়'' গজালিয়া, বিষখালী উল্লেখযোগ্য।  
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ১০ || ১৫৮ || ১৯০ || ৪৬৪৬২  || ১৫৩৬৫৫  || ৯৭৯  || ৭২.৭ || ৬১.
| ১ || ১০ || ১৫৮ || ১৯০ || ৫৪৯০৪ || ১৬১৪৪৪ || ১৩৫৭ || ৭২.৭ (২০০১) || ৬৫.
|}
|}


২৫ নং লাইন: ২৫ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
|-
|-
| ১৬.০৭ || ৯ || ৪৭ || ৪৫৪২৮  || ২৮২৭ || ৬১.৪৯
| ১৬.০৭ (২০০১) || ৯ || ৪৭ || ৫৪০২৯ || ২৮২৭ (২০০১) || ৭৭.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৩ নং লাইন: ৩৩ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)  
|-
|-
| ২.২৭ || ১ || ১০৩৪  || ৪৫৬ || ৪৮.৪১
| ২.২৭ (২০০১) || ১ || ৮৭৫ || ৪৫৬ (২০০১) || ৪৮.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৪৩ নং লাইন: ৪৩ নং লাইন:
|  পুরুষ  || মহিলা
|  পুরুষ  || মহিলা
|-
|-
| কীর্তিপাশা ৬৬ || ৪৮১৭  || ৮১০৫ || ৮০৩২  || ৬৫.২৭
| কীর্তিপাশা ৬৬ || ৪৮১৬ || ৮০২৯ || ৮৭৮৬ || ৬৭.
|-
|-
| কেওড়া ৫৭ || ৩৫১৮  || ৫৬৭৪ || ৫৮৬৬  || ৬১.০২
| কেওড়া ৫৭ || ২৫০৭ || ৫৫৯২ || ৬১৫৭ || ৭০.
|-
|-
| গাবখান ধানসিঁড়ি ২৮ || ৪৭১৪  || ৬৪১২ || ৬৭৩৩  || ৬৩.৭৮
| গাবখান ধানসিঁড়ি ২৮ || ৩৭০৫ || ৭০৫০ || ৭৭১১ || ৬৬.
|-
|-
| গভা রামচন্দ্রপুর ৩৮ || ৫২৬০  || ৯০৩৮ || ৯১৭৮  || ৬৩.৩৬
| গভা রামচন্দ্রপুর ৩৮ || ৩৭৩৭ || ৯১১৮ || ৯৮৮৮ || ৬৪.
|-
|-
| নবগ্রাম ৭৬ || ৫২৮৭  || ৮৩৩২ || ৮১৬০  || ৬৪.৩৫
| নবগ্রাম ৭৬ || ৩২৩৩ || ৮৬০৩ || ৯০০৩ || ৬২.
|-
|-
| নথুল্লাবাদ ৬৩ || ৫৮২২  || ৬০৪১ || ৬৪৯৩  || ৬২.৬৫
| নথুল্লাবাদ ৬৩ || ৩৯৮৫ || ৬৪৬৯ || ৭১৫১ || ৭০.
|-
|-
| পোনাবালিয়া ৮৫ || ৪৯০২  || ৮৩৮৪ || ৮০৭৫  || ৪৯.৪৮
| পোনাবালিয়া ৮৫ || ১৪৯৪ || ৭৮৮৮ || ৮৪৭২ || ৫৭.
|-
|-
| বাসন্ডা ১৭ || ৫৫১৭  || ৭০৪৫ || ৬৮০৪  || ৫৬.০২
| বাসণ্ডা ১৭ || ২০৯৯ || ৭৩৪৩ || ৭৭৫৯ || ৬১.
|-
|-
| বিনয়কাঠি ১৯ || ৬৫০১  || ১০১৯৯ || ১০৪৩৩  || ৬৪.৯২
| বিনয়কাঠি ১৯ || ৪১৭৪ || ৯৯৩৪ || ১০৯৬৪ || ৬৭.
|-
|-
| শেখেরহাট ৯৫ || ৬০৬০  || ৭৬৯৮ || ৭৯৮৭  || ৬১.৬৭
| শেখেরহাট ৯৫ || ৩২১১ || ৭৯১৪ || ৮৪৮৮ || ৭০.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:JhalokathiSadarUpazila.jpg|thumb|400px]]
[[Image:JhalokathiSadarUpazila.jpg|thumb|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' ঘোষাল রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ, নুরুল্লাপুর মঠ, হাজরাগাতি গ্রামের শিবমন্দির,  শেখেরহাটে আঞ্জির শাহের মাযার, পৌরসভার পুরাতন ভবন।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' ঘোষাল রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ, নুরুল্লাপুর মঠ, হাজরাগাতি গ্রামের শিবমন্দির,  শেখেরহাটে আঞ্জির শাহের মাযার, পৌরসভার পুরাতন ভবন।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ২৭ এপ্রিল পাকসেনারা ঝালকাঠি সদরে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থানে হত্যাকান্ড, লুটপাট, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ৫ মে সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির সঙ্গে পাকসেনাদের মাদ্রা, ভীমরুল ও পেয়ারা বাগানের লড়াইয়ে রাজাকারসহ ২১ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৩ মে রমানাথপুর শরীফ বাড়ী মসজিদে পাকসেনারা ২৩ জন নামাযরত মুসল্লিকে হত্যা করে। ১৩ নভেম্বর চাচৈর ও প্রেমহরে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের লড়াইয়ে সেকেন্ড লেঃ আজমতসহ ১৮ জন পাকসৈন্য নিহত হয়। ৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি থেকে পাকসেনারা বিতাড়িত হয়।  
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ২৭ এপ্রিল পাকসেনারা ঝালকাঠি সদরে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থানে হত্যাকা-, লুটপাট, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ৫ মে সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির সঙ্গে পাকসেনাদের মাদ্রা, ভীমরুল ও পেয়ারা বাগানের লড়াইয়ে রাজাকারসহ ২১ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৩ মে রমানাথপুর শরীফ বাড়ি মসজিদে পাকসেনারা ২৩ জন নামাযরত মুসল্লিকে হত্যা করে। ১৩ নভেম্বর চাচৈর ও প্রেমহরে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের লড়াইয়ে সেকেন্ড লে. আজমত সহ ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। ৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি থেকে পাকসেনারা বিতাড়িত হয়। উপজেলার ৪টি স্থানে (সুগন্ধা তীর, পালবাড়ি ঘাট, গোডাউন ঘাট ও খেজুরা খালপাড়) বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে, সিটি পার্কে ১টি ভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন''  ভাস্কর্য ১ (সিটি পার্ক); বধ্যভূমি ৪ (সুগন্ধা তীর, পালবাড়ি ঘাট, গোডাউন ঘাট ও খেজুরা খালপাড়)।
''বিস্তারিত দেখুন''  ঝালকাঠি সদর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৪৭০, মন্দির ১২৭, মাযার ১।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৪৭০, মন্দির ১২৭, মাযার ১।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৬৪.%; পুরুষ ৬৬.%, মহিলা ৬২.%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ঝালকাঠি সরকারি কলেজ (১৯৬৪), ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজ, শেরে বাংলা  এ. কে. ফজলুল হক কলেজ, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭২), কীর্তিপাশা প্রসন্ন কুমার মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৩), বৌকাঠি বিন্দুবাসিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৮), ঝালকাঠি সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯১৯), নথুল্লাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯২৩), তারুলি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৭), পৌর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০২), বাহরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫), সারেংগল নেছারিয়া হোনাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭৪)।  
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৬৮.%; পুরুষ ৬৯.%, মহিলা ৬৭.%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ঝালকাঠি সরকারি কলেজ (১৯৬৪), ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজ, শেরে বাংলা  এ. কে. ফজলুল হক কলেজ, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭২), কীর্তিপাশা প্রসন্ন কুমার মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৩), বৌকাঠি বিন্দুবাসিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৮), ঝালকাঠি সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯১৯), নথুল্লাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯২৩), তারুলি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৭), পৌর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০২), বাহরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫), সারেংগল নেছারিয়া হোনাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭৪)।  


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''  দৈনিক শতকণ্ঠ (অবলুপ্ত)। উল্লেখযোগ্য অবলুপ্ত সাময়িকী: শতবর্ষ স্মরণিকা (১৯৭৫), মোহনা (১৯৭৬), চাঁদের হাসি (১৯৭৮), কালান্তর (১৯৭৮), অন্বেষা (১৯৭৮), বাংলার বার্তা (১৯৮৩), বিল্পবী বাংলা (১৯৮৩), পাড়ি (১৯৮৬) সূর্যালোক (১৯৯২), অজানা খবর (১৯৯৫), আজকের শব্দকোষ, (১৯৯৫), নামতা (১৯৯৬), অর্ক (১৯৯৬), প্রতিভা, (১৯৯৬), আগ্রহ (১৯৯৬), সৃষ্টি (১৯৯৬), সাঁকো (১৯৯৭), কামিনী (১৯৯৮), সাপ্তাহিক রোববারের চিঠি (১৯৭২)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''  দৈনিক শতকণ্ঠ (অবলুপ্ত)। উল্লেখযোগ্য অবলুপ্ত সাময়িকী: শতবর্ষ স্মরণিকা (১৯৭৫), মোহনা (১৯৭৬), চাঁদের হাসি (১৯৭৮), কালান্তর (১৯৭৮), অন্বেষা (১৯৭৮), বাংলার বার্তা (১৯৮৩), বিল্পবী বাংলা (১৯৮৩), পাড়ি (১৯৮৬) সূর্যালোক (১৯৯২), অজানা খবর (১৯৯৫), আজকের শব্দকোষ, (১৯৯৫), নামতা (১৯৯৬), অর্ক (১৯৯৬), প্রতিভা, (১৯৯৬), আগ্রহ (১৯৯৬), সৃষ্টি (১৯৯৬), সাঁকো (১৯৯৭), কামিনী (১৯৯৮), সাপ্তাহিক রোববারের চিঠি (১৯৭২)।
৯২ নং লাইন: ৯২ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার''  মৎস্য ১১, গবাদিপশু ১৭, হাঁস-মুরগি ১৩, হ্যাচারি ১।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার''  মৎস্য ১১, গবাদিপশু ১৭, হাঁস-মুরগি ১৩, হ্যাচারি ১।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব''  পাকারাস্তা ২০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৯৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৫৯ কিমি; নদীপথ ৮ নটিক্যাল মাইল।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব''  পাকারাস্তা ৭৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭১৫ কিমি; নদীপথ ২১ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি।  
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি।  
১০৪ নং লাইন: ১০৪ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, লবণ।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, লবণ।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার''  এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৭.২২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার''  এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৬.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৯২.৯৩%, পুকুর ৩.১৩%, ট্যাপ .৩৫% এবং অন্যান্য ১.৫৯%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৯৭.%, ট্যাপ ১.২% এবং অন্যান্য ১.%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ৬৩.৩২% (গ্রামে ৫৪.৮০% ও শহরে ৯৩.৬৮%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩২.৫৫% (গ্রামে ৪০.৩২% ও শহরে ৪.৮৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .১৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ৮৯.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং .% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  হাসপাতাল ২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  হাসপাতাল ২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১।
১১৬ নং লাইন: ১১৬ নং লাইন:
''এনজিও''  ব্র্র্যাক, প্রশিকা, আশা, কারিতাস।  [মোঃ মিজানুর রহমান]
''এনজিও''  ব্র্র্যাক, প্রশিকা, আশা, কারিতাস।  [মোঃ মিজানুর রহমান]


'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো;  ঝালকাঠি সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো;  ঝালকাঠি সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Jhalokati Sadar Upazila]]
[[en:Jhalokati Sadar Upazila]]

১১:৩১, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ঝালকাঠি সদর উপজেলা (ঝালকাঠি জেলা) আয়তন: ১৫৯.৪৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৩৫´ থেকে ২২°৪৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৬´ থেকে ৯০°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বানারীপাড়া, উজিরপুর এবং বাবুগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে রাজাপুর উপজেলা, পূর্বে বরিশাল সদর ও নলছিটি উপজেলা, পশ্চিমে কাউখালী (পিরোজপুর), স্বরূপকাঠি সদর ও বানারীপাড়া উপজেলা।

জনসংখ্যা ২১৬৩৪৮; পুরুষ ১০৫৪৬৮, মহিলা ১১০৮৮০। মুসলিম ১৮২১৭০, হিন্দু ৩৪১২৩, বৌদ্ধ ২২, খ্রিস্টান ১৪ এবং অন্যান্য ১৯।

জলাশয় গজালিয়া, বিষখালী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৯১৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৭৫ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১০ ১৫৮ ১৯০ ৫৪৯০৪ ১৬১৪৪৪ ১৩৫৭ ৭২.৭ (২০০১) ৬৫.৯
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৬.০৭ (২০০১) ৪৭ ৫৪০২৯ ২৮২৭ (২০০১) ৭৭.৯
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২.২৭ (২০০১) ৮৭৫ ৪৫৬ (২০০১) ৪৮.৯
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কীর্তিপাশা ৬৬ ৪৮১৬ ৮০২৯ ৮৭৮৬ ৬৭.০
কেওড়া ৫৭ ২৫০৭ ৫৫৯২ ৬১৫৭ ৭০.২
গাবখান ধানসিঁড়ি ২৮ ৩৭০৫ ৭০৫০ ৭৭১১ ৬৬.১
গভা রামচন্দ্রপুর ৩৮ ৩৭৩৭ ৯১১৮ ৯৮৮৮ ৬৪.৬
নবগ্রাম ৭৬ ৩২৩৩ ৮৬০৩ ৯০০৩ ৬২.৬
নথুল্লাবাদ ৬৩ ৩৯৮৫ ৬৪৬৯ ৭১৫১ ৭০.৪
পোনাবালিয়া ৮৫ ১৪৯৪ ৭৮৮৮ ৮৪৭২ ৫৭.৯
বাসণ্ডা ১৭ ২০৯৯ ৭৩৪৩ ৭৭৫৯ ৬১.৯
বিনয়কাঠি ১৯ ৪১৭৪ ৯৯৩৪ ১০৯৬৪ ৬৭.৯
শেখেরহাট ৯৫ ৩২১১ ৭৯১৪ ৮৪৮৮ ৭০.৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ঘোষাল রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ, নুরুল্লাপুর মঠ, হাজরাগাতি গ্রামের শিবমন্দির,  শেখেরহাটে আঞ্জির শাহের মাযার, পৌরসভার পুরাতন ভবন।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২৭ এপ্রিল পাকসেনারা ঝালকাঠি সদরে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থানে হত্যাকা-, লুটপাট, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ৫ মে সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির সঙ্গে পাকসেনাদের মাদ্রা, ভীমরুল ও পেয়ারা বাগানের লড়াইয়ে রাজাকারসহ ২১ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৩ মে রমানাথপুর শরীফ বাড়ি মসজিদে পাকসেনারা ২৩ জন নামাযরত মুসল্লিকে হত্যা করে। ১৩ নভেম্বর চাচৈর ও প্রেমহরে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের লড়াইয়ে সেকেন্ড লে. আজমত সহ ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। ৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি থেকে পাকসেনারা বিতাড়িত হয়। উপজেলার ৪টি স্থানে (সুগন্ধা তীর, পালবাড়ি ঘাট, গোডাউন ঘাট ও খেজুরা খালপাড়) বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে, সিটি পার্কে ১টি ভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন ঝালকাঠি সদর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৭০, মন্দির ১২৭, মাযার ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬৮.৮%; পুরুষ ৬৯.৯%, মহিলা ৬৭.৮%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ঝালকাঠি সরকারি কলেজ (১৯৬৪), ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজ, শেরে বাংলা  এ. কে. ফজলুল হক কলেজ, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭২), কীর্তিপাশা প্রসন্ন কুমার মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৩), বৌকাঠি বিন্দুবাসিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৮), ঝালকাঠি সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯১৯), নথুল্লাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯২৩), তারুলি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৭), পৌর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০২), বাহরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫), সারেংগল নেছারিয়া হোনাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭৪)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  দৈনিক শতকণ্ঠ (অবলুপ্ত)। উল্লেখযোগ্য অবলুপ্ত সাময়িকী: শতবর্ষ স্মরণিকা (১৯৭৫), মোহনা (১৯৭৬), চাঁদের হাসি (১৯৭৮), কালান্তর (১৯৭৮), অন্বেষা (১৯৭৮), বাংলার বার্তা (১৯৮৩), বিল্পবী বাংলা (১৯৮৩), পাড়ি (১৯৮৬) সূর্যালোক (১৯৯২), অজানা খবর (১৯৯৫), আজকের শব্দকোষ, (১৯৯৫), নামতা (১৯৯৬), অর্ক (১৯৯৬), প্রতিভা, (১৯৯৬), আগ্রহ (১৯৯৬), সৃষ্টি (১৯৯৬), সাঁকো (১৯৯৭), কামিনী (১৯৯৮), সাপ্তাহিক রোববারের চিঠি (১৯৭২)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১৫, ক্লাব ১৯, সিনেমা হল ১, নাট্যদল ৪, খেলার মাঠ ২৪।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩৮.৮৪%, অকৃষি শ্রমিক ৬.৩০%, শিল্প ০.৯৮%, ব্যবসা ১৮.৪০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৩৪%, চাকরি ১৬.৮৮%, নির্মাণ ২.৭৫%, ধর্মীয় সেবা ০.২৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৬৪% এবং অন্যান্য ১০.৫৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৩.১০%, ভূমিহীন ৩৬.৯০%। শহরে ৩৮.২০% এবং গ্রামে ৭০.১০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, ডাল, সুপারি, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি পাট, তিল, তিসি, সরিষা।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কলা, পেঁপে, জাম ও নারিকেল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১১, গবাদিপশু ১৭, হাঁস-মুরগি ১৩, হ্যাচারি ১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭১৫ কিমি; নদীপথ ২১ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা লবণ মিল, ফ্লাওয়ার মিল, স’মিল, রাইস মিল, বিস্কুট ফ্যাক্টরি, আইস ফ্যাক্টরি, বিড়ি কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, বুননশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২১, মেলা ৭। বৌকাঠি হাট, ঝালকাঠি হাট, গাবখান হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  ধান, লবণ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৬.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৫%, ট্যাপ ১.২% এবং অন্যান্য ১.৩%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮৯.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৮.৯% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৭৮৬ ও ১৯৮৮ সালের বন্যা, ১৮২২, ১৯০৯, ১৯৬০ ও ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে এ উপজেলার বহু মানুষ প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এছাড়া ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষেও এখানে বহু লোক প্রাণ হারায়।

এনজিও ব্র্র্যাক, প্রশিকা, আশা, কারিতাস। [মোঃ মিজানুর রহমান]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো;  ঝালকাঠি সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।