জীবননগর উপজেলা

জীবননগর উপজেলা (চুয়াডাঙ্গা জেলা)  আয়তন: ১৯৯.২৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২২´ থেকে ২৩°৩১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪৫´ থেকে ৮৮°৫৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা, পূর্বে কোটচাঁদপুর উপজেলা, দক্ষিণে মহেশপুর উপজেলা এবং দামুরহুদা উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।

জনসংখ্যা ১৭৯৫৮১, পুরুষ ৮৯৮৩৯, মহিলা ৮৯৭৪২। মুসলিম ১৭৫০৮৪, হিন্দু ৪৪৫৭, খ্রিস্টান ৫, বৌদ্ধ ১ এবং অন্যান্য ৩৪।

জলাশয় প্রধান নদী: ভৈরব; নতুনপাড়া বিল, জয়দিয়া বিল, রুয়ার বিল ও সুতিয়া বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন জীবননগর থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৬২ ৮৩ ৩৮১৫২ ১৪১৪২৯ ৯০১ ৪৭.৭৫ (২০০১) ৪৩.৯
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার(%)
১২.৪০ (২০০১) ২৬ ২৫৫১৮ ১৯৪৬ (২০০১) ৫৭.৪
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৫.৭৫ (২০০১) ১২৬৩৪ ১৯৪৬ (২০০১) ৪৮.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আন্দুলবাড়িয়া ১৯ ৮৯১৪ ১৩৬২২ ১৩৭৭৫ ৪৩.২
উথলী ৭৬ ১৩৬০৫ ২৪৪২৮ ২৪৫৭৯ ৪৬.৭
বাঁকা ৩৮ ১৫৯৭০ ২৪১৮২ ২৪২০৯ ৪৭.২
সীমান্ত ৯২৬৩ ১৪৮৩৭ ১৪৪৩১ ৩৬.৩

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ তিনগম্বুজ মসজিদ (ধোপাখালী)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে জীবননগর ও দর্শনার মধ্যবর্তী শিয়ালমারীতে মুক্তিবাহিনীর মাইন বিস্ফোরণে ১০ জন পাকসেনা নিহত হয়। এছাড়া ধোপাখালি সীমান্তে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখ লড়াইয়ে পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং দুজন আহত হন। উপজেলার অন্যান্য যেসব স্থানে শত্রুসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয় সেগুলির মধ্যে হরিনগর, কুসুমপুর, মাধুখালী, বানপুর, পাথিলা-দত্তনগর প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। উপজেলায় ১টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।

বিস্তারিত দেখুন জীবননগর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৩১, মন্দির ১১, মাযার ৮। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: ধোপাখালি মসজিদ, খাজা পারেশ শাহের মাযার, কড়চা ডাঙ্গা মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৬.১%; পুরুষ ৪৬.৮%, মহিলা ৪৫.৫%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬২, কিন্ডার গার্টেন ৪, এনজিও স্কুল ৮৪, মাদ্রাসা ১৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জীবননগর কলেজ (১৯৮৪), জীবননগর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৭)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, ক্লাব ১৮, নাট্যদল ৭, সিনেমা হল ৭।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৯.৮৩%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫৩%, শিল্প ০.৭৪%, ব্যবসা ১৩.৬৫%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৩.৪৩%, চাকরি ৩.৪৮%, নির্মাণ ১.২১%, ধর্মীয় সেবা ০.৪৯%, রেন্ট আন্ড রেমিটেন্স ০.২৭% এবং অন্যান্য ৪.৭০%।

প্রধান কৃষি ফসল আখ, ধান, পাট, গম, মুগ, মসুরি, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, সরিষা, তামাক, তিসি, ছোলা।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, পেঁপে, কলা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৩, গবাদিপশু ৪, মুরগি ১৭।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৬৮.৬২ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৯৫ কিমি; রেলপথ ১০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চিনিকল, ময়দাকল, ধানকল, চিড়াকল, স’মিল, বরফকল।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, সূচিশিল্প, কাঁসা ও পিতল শিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৯, মেলা ২ (রাবুণী ও গঙ্গাপূজা মেলা)।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৪.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৭%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ২.১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা উপজেলার ৪৭.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৫.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৮% পরিবারের কোনো স্যানিটেশন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, ওয়েভ ফাউন্ডেশন, ঊষা।  [ইমন সিদ্দিক]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; জীবননগর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।