জিনোটক্সিক কার্সিনোজেন
জিনোটক্সিক কার্সিনোজেন (Genotoxic Carcinogen) এক প্রকার পদার্থ যা সরাসরি ডিএনএ-তে প্রভাব ফেলে ক্যান্সার সৃষ্টি করে; যেমন: রাসায়নিক কার্সিনোজেন, সিগারেটের ধোঁয়ার Benzo[a]pyrane; ভৌত কার্সিনোজেন, ইউ.ভি. বিকিরণ; এবং জৈব কার্সিনোজেন, EBV/HPV।
ক্যান্সার বিকাশ একটি বহুধাপ বিশিষ্ট প্রক্রিয়া। ইনিশিয়েটর নিজেরা বা তাদের অভ্যন্তরীণ মেটাবোলাইট, যেমন Benzo[a]pyrane, ডিএনএ-তে অপরিবর্তনীয় মিউটেশন ঘটায় যা সাধারণ কোষের ক্যান্সার কোষে রূপান্তরিত হওয়ার জন্য দায়ী। ইনিশিয়েটর, কার্সিনোজেনেসিস প্রক্রিয়ার শুরু করে এবং প্রোমোটর যেমন: DDT, β-naphthoflavon, polybrominated biphenyls ইত্যাদি মিউট্যান্ট কোষের বিস্তার ঘটায়, কিন্তু যদি কোষগুলো ইনিশিয়েটরের সংস্পর্শে না আসে তবে প্রোমোটার সাধারণত অকার্যকর অবস্থায় থাকে। Benzoyl peroxide, অন্যান্য peroxide, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহসমূহ ক্যান্সার বিকাশে অপরিবর্তনীয় ধাপ যা ক্যান্সারকে অপ্রতিরোধ্য করে তোলে। ক্যান্সার বিস্তার মূলত ক্যারিওটাইপিক পরিবর্তনের সাথে যুক্ত এবং কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, আক্রমণাত্মকতা, মেটাস্ট্যাসিস, কোষের জৈব রসায়ন ও অঙ্গসংস্থান বিদ্যা ইত্যাদির পরিবর্তনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। কার্যত, সমস্ত ক্যান্সার কোষই অ্যানিউপ্লয়েড অর্থাৎ ভুল সংখ্যক ক্রোমোজোম দ্বারা গঠিত।
জেনোটক্সিক কার্সিনোজেন বলতে সম্ভাব্য মিউটাজেনিক রাসায়নিকসমুহকে বোঝায়। এগুলো যদি নিঃশ্বাসে গৃহীত হয় বা ত্বকে প্রবেশ করে, অতি অল্প পরিমাণেও এরা ডিএনএ-তে সরাসরি অসংশোধনীয় পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম । যে রাসায়নিকগুলো সরাসরি ডিএনএ-তে কাজ করে না কিন্তু কোষের বিস্তারে জড়িত প্রোটিনের সাথে মিথস্ক্রিয়া দ্বারা স্বাভাবিক কোষের বিস্তারে হস্তক্ষেপ করে তারা নন-জেনোটক্সিক কার্সিনোজেন। কিছু রাসায়নিক জেনোটক্সিক কার্সিনোজেন সরাসরি কাজ সম্পাদনে সক্ষম যেমন: অ্যালকাইলেটিং ও অ্যাসিলেটিং এজেন্টসমূহ (β-প্রোপিওল্যাকটোন, ডাইমিথাইল সালফেট) এবং কিছু প্রো-কারসিনোজেন পরোক্ষভাবে কাজ সম্পাদন করে যেমন: পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন (সিগারেটের ধোঁয়ায় Benz(a)anthracene, Benz(a)pyrene, জৈব রঞ্জক)। মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে (কিছু নন-কার্সিনোজেনিক সত্তার বিপাকের মাধ্যমে) বা বহিরাগতভাবে জেনোটক্সিক এজেন্টের সংস্পর্শে আসতে পারে যেমন: ফর্মালডিহাইড, অ্যালকাইলেটিং এজেন্ট, β₁, benzo[a]pyran ইত্যাদি। কিছু ধাতব যৌগ, যেমন: আর্সেনিকের নির্দিষ্ট অক্সাইড পরোক্ষভাবে জেনোটক্সিক পদার্থ হিসাবে কাজ করে।
রাসায়নিক কার্সিনোজেনসমূহ (১) পয়েন্ট মিউটেশনের মাধ্যমে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে- একটি একক নিউক্লিওটাইড বেসকে অন্য নিউক্লিওটাইড দিয়ে প্রতিস্থাপন করা (৩) ক্রোমোসোমাল বিপর্যয় দ্বারা- স্বাভাবিক গঠন বা ক্রোমোজোমের সংখ্যার কোনো পরিবর্তন (৪) অ্যানিউপ্লয়েডি দ্বারা- ক্রোমোজোম সংখ্যা (২৩) সাধারণ হ্যাপ্লয়েডের গুণিতক নয় (৫) পলিপ্লয়েডি- ক্রোমোজোমের সংখ্যা হ্যাপ্লয়েড সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি। [মামুন রশিদ চৌধুরী]