জঙ্গনামা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৪ নং লাইন: ৪ নং লাইন:
কারবালা-কেন্দ্রিক কাব্যের অপর নাম মর্সিয়া সাহিত্য। আরবি ‘মর্সিয়া’ শব্দের অর্থ শোক। শোকবিষয়ক রচনাকে মর্সিয়া সাহিত্য বা শোককাব্য বলা হয়। অতএব জঙ্গনামা ও মর্সিয়া সাহিত্যের মধ্যে বিষয়গত মিল থাকলেও আঙ্গিক ও রসগত পার্থক্য আছে। জঙ্গনামা ও মর্সিয়া সাহিত্য প্রথমত আরবে, পরে পারস্যে বিকাশ লাভ করে এবং মধ্যযুগে মুসলিম শাসনামলে এ সাহিত্যধারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাংলায় এ কাব্যধারা মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত প্রচলিত ছিল।
কারবালা-কেন্দ্রিক কাব্যের অপর নাম মর্সিয়া সাহিত্য। আরবি ‘মর্সিয়া’ শব্দের অর্থ শোক। শোকবিষয়ক রচনাকে মর্সিয়া সাহিত্য বা শোককাব্য বলা হয়। অতএব জঙ্গনামা ও মর্সিয়া সাহিত্যের মধ্যে বিষয়গত মিল থাকলেও আঙ্গিক ও রসগত পার্থক্য আছে। জঙ্গনামা ও মর্সিয়া সাহিত্য প্রথমত আরবে, পরে পারস্যে বিকাশ লাভ করে এবং মধ্যযুগে মুসলিম শাসনামলে এ সাহিত্যধারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাংলায় এ কাব্যধারা মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত প্রচলিত ছিল।


জঙ্গনামা শ্রেণীর কাব্যধারার উল্লেখযোগ্য কবি ও কাব্যের নাম হলো:  [[শেখ ফয়জুল্লাহ|শেখ ফয়জুল্লাহ]] (ষাল’শ শতক, জয়নবের চৌতিশা),  [[দৌলত উজির বাহরাম খান|দৌলত উজির বাহরাম খান]] (ষোল’শ শতক, জঙ্গনামা), মুহম্মদ খান (সতের’শ শতক, মকতুল হোসেন), শেরবাজ (আঠার’শ শতক, কাশিমের লড়াই ও ফাতিমার সুরতনামা), হেয়াত মামুদ (আঠার’শ শতক, জারি-জঙ্গনামা), জাফর (আঠার’শ শতক, শহীদ-ই-কারবালা ও সখিনার বিলাপ), হামিদ (আঠার’শ শতক, সংগ্রাম হুসেন), ফকির গরিবুল্লাহ (আঠার’শ শতক, জঙ্গনামা  ও সোনাভান), মুহম্মদ হামিদুল্লাহ খান (উনিশ’শ শতকের প্রথমার্ধ, গুলজার-ই-সাহাদৎ), ওয়াহিদ আলী (উনিশ’শ শতকের প্রথমার্ধ, বড় জঙ্গনামা), জনাব আলী (উনিশ’শ শতক, শহিদ-ই-কারবালা), মুহম্মদ মুনসি (উনিশ’শ শতক, শহিদ-ই-কারবালা), মুহম্মদ ইসহাকউদ্দীন (বিশ শতকের প্রথমার্ধ, দাস্তান শহিদ-ই-কারবালা), কাজী আমীনুল হক (বিশ শতকের প্রথমার্ধ, জঙ্গে কারবালা) ইত্যাদি। এসব কাব্য বাংলার মুসলিম সংস্কৃতিকে একটা স্বতন্ত্র পরিচয় দান করেছে।
জঙ্গনামা শ্রেণীর কাব্যধারার উল্লেখযোগ্য কবি ও কাব্যের নাম হলো:  [[শেখ ফয়জুল্লাহ|শেখ ফয়জুল্লাহ]] (ষাল’শ শতক, জয়নবের চৌতিশা),  [[দৌলত উজির বাহরাম খান|দৌলত উজির বাহরাম খান]] (ষোল’শ শতক, জঙ্গনামা), মুহম্মদ খান (সতের’শ শতক, মকতুল হোসেন), শেরবাজ (আঠার’শ শতক, কাশিমের লড়াই ও ফাতিমার সুরতনামা), হেয়াত মামুদ (আঠার’শ শতক, জারি-জঙ্গনামা), জাফর (আঠার’শ শতক, শহীদ-ই-কারবালা ও সখিনার বিলাপ), হামিদ (আঠার’শ শতক, সংগ্রাম হুসেন), ফকির গরিবুল্লাহ (আঠার’শ শতক, জঙ্গনামা  ও সোনাভান), মুহম্মদ হামিদুল্লাহ খান (উনিশ’শ শতকের প্রথমার্ধ, গুলজার-ই-সাহাদৎ), ওয়াহিদ আলী (উনিশ’শ শতকের প্রথমার্ধ, বড় জঙ্গনামা), জনাব আলী (উনিশ’শ শতক, শহিদ-ই-কারবালা), মুহম্মদ মুনসি (উনিশ’শ শতক, শহিদ-ই-কারবালা), মুহম্মদ ইসহাকউদ্দীন (বিশ শতকের প্রথমার্ধ, দাস্তান শহিদ-ই-কারবালা), কাজী আমীনুল হক (বিশ শতকের প্রথমার্ধ, জঙ্গে কারবালা) ইত্যাদি। এসব কাব্য বাংলার মুসলিম সংস্কৃতিকে একটা স্বতন্ত্র পরিচয় দান করেছে। [খন্দকার মুজাম্মিল হক]
 
[খন্দকার মুজাম্মিল হক]


[[en:Janganama]]
[[en:Janganama]]

০৬:০৭, ৩০ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

জঙ্গনামা  মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে মুসলিম ঐতিহ্যভিত্তিক যুদ্ধবিষয়ক কাব্য। ফারসি ‘জঙ্গ’ শব্দের অর্থ যুদ্ধ, আর ‘জঙ্গনামা’ শব্দের অর্থ তদ্বিষয়ক গ্রন্থ বা রচনা। বিশেষত  হযরত মুহম্মাদ (স.) ও তাঁর স্বজনদের যুদ্ধই এ শ্রেণীর কাব্যের মূল বিষয়। যেসব যুদ্ধের ঘটনা ও পরিণাম অত্যন্ত করুণ ও মর্মান্তিক, সাধারণত সেসব যুদ্ধের কথাই মানুষকে বেশি আলোড়িত করে। তাই আরবি-ফারসি সাহিত্যে যেমন, বাংলা সাহিত্যেও তেমনি ‘জঙ্গনামা’ বলতে বিশেষভাবে কারবালার যুদ্ধ ও তার বিষাদময় ঘটনাবলি সংক্রান্ত রচনাকেই বোঝায়।

কারবালা-কেন্দ্রিক কাব্যের অপর নাম মর্সিয়া সাহিত্য। আরবি ‘মর্সিয়া’ শব্দের অর্থ শোক। শোকবিষয়ক রচনাকে মর্সিয়া সাহিত্য বা শোককাব্য বলা হয়। অতএব জঙ্গনামা ও মর্সিয়া সাহিত্যের মধ্যে বিষয়গত মিল থাকলেও আঙ্গিক ও রসগত পার্থক্য আছে। জঙ্গনামা ও মর্সিয়া সাহিত্য প্রথমত আরবে, পরে পারস্যে বিকাশ লাভ করে এবং মধ্যযুগে মুসলিম শাসনামলে এ সাহিত্যধারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাংলায় এ কাব্যধারা মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত প্রচলিত ছিল।

জঙ্গনামা শ্রেণীর কাব্যধারার উল্লেখযোগ্য কবি ও কাব্যের নাম হলো:  শেখ ফয়জুল্লাহ (ষাল’শ শতক, জয়নবের চৌতিশা),  দৌলত উজির বাহরাম খান (ষোল’শ শতক, জঙ্গনামা), মুহম্মদ খান (সতের’শ শতক, মকতুল হোসেন), শেরবাজ (আঠার’শ শতক, কাশিমের লড়াই ও ফাতিমার সুরতনামা), হেয়াত মামুদ (আঠার’শ শতক, জারি-জঙ্গনামা), জাফর (আঠার’শ শতক, শহীদ-ই-কারবালা ও সখিনার বিলাপ), হামিদ (আঠার’শ শতক, সংগ্রাম হুসেন), ফকির গরিবুল্লাহ (আঠার’শ শতক, জঙ্গনামা  ও সোনাভান), মুহম্মদ হামিদুল্লাহ খান (উনিশ’শ শতকের প্রথমার্ধ, গুলজার-ই-সাহাদৎ), ওয়াহিদ আলী (উনিশ’শ শতকের প্রথমার্ধ, বড় জঙ্গনামা), জনাব আলী (উনিশ’শ শতক, শহিদ-ই-কারবালা), মুহম্মদ মুনসি (উনিশ’শ শতক, শহিদ-ই-কারবালা), মুহম্মদ ইসহাকউদ্দীন (বিশ শতকের প্রথমার্ধ, দাস্তান শহিদ-ই-কারবালা), কাজী আমীনুল হক (বিশ শতকের প্রথমার্ধ, জঙ্গে কারবালা) ইত্যাদি। এসব কাব্য বাংলার মুসলিম সংস্কৃতিকে একটা স্বতন্ত্র পরিচয় দান করেছে। [খন্দকার মুজাম্মিল হক]