চৌধুরী, আবদুল হক: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৪ নং লাইন: ৪ নং লাইন:
প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চশিক্ষা না থাকলেও আবদুল হক বাংলাদেশের আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চায় যে অবদান রাখেন তা রীতিমতো বিস্ময়কর। রাউজান হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রীশচন্দ্র চৌধুরীর প্রেরণায় তিনি প্রথম আঞ্চলিক ইতিহাস সম্পর্কে উৎসাহিত হন। এ বিষয়ে তিনি চট্টগ্রামের অপর কৃতী সন্তান আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের নিকট থেকেও অনুপ্রেরণা লাভ করেন। তারপর স্বীয় অঞ্চলের নশরত শাহের কোতোয়ালির ধ্বংসাবশেষ, ঈসা খাঁর দিঘি, আরাকানি দুর্গকোট এবং প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বিভিন্ন পুরাকীর্তি তাঁকে এ সম্পর্কে আরও কৌতূহলী করে তোলে। তিনি একসময় চট্টগ্রাম,  [[সিলেট জেলা|সিলেট]], আরাকান ও ত্রিপুরার সামাজিক ও নৃতাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন এবং তার ভিত্তিতে উক্ত অঞ্চলের ইতিহাস রচনায় ব্রতী হন। একাদিক্রমে তিনি এগারোখানা গ্রন্থ এবং বহু প্রবন্ধ রচনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হচ্ছে: চট্টগ্রামের ইতিহাস প্রসঙ্গ (১৯৭৬), চট্টগ্রামের চরিতাভিধান (১৯৭৯), সিলেটের ইতিহাস প্রসঙ্গ (১৯৮১), চট্টগ্রামের সমাজ ও সংস্কৃতির রূপরেখা (১৯৮৮), চট্টগ্রাম-আরাকান (১৯৮৯), প্রাচীন আরাকান রোহাইংগা হিন্দু ও বড়ুয়া বৌদ্ধ আদিবাসী (১৯৯৪) ইত্যাদি। তাঁর এ ইতিহাস চর্চার কারণে তিনি স্থানীয়ভাবে ‘চট্টলতত্ত্ববিদ’ নামে খ্যাত হন।
প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চশিক্ষা না থাকলেও আবদুল হক বাংলাদেশের আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চায় যে অবদান রাখেন তা রীতিমতো বিস্ময়কর। রাউজান হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রীশচন্দ্র চৌধুরীর প্রেরণায় তিনি প্রথম আঞ্চলিক ইতিহাস সম্পর্কে উৎসাহিত হন। এ বিষয়ে তিনি চট্টগ্রামের অপর কৃতী সন্তান আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের নিকট থেকেও অনুপ্রেরণা লাভ করেন। তারপর স্বীয় অঞ্চলের নশরত শাহের কোতোয়ালির ধ্বংসাবশেষ, ঈসা খাঁর দিঘি, আরাকানি দুর্গকোট এবং প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বিভিন্ন পুরাকীর্তি তাঁকে এ সম্পর্কে আরও কৌতূহলী করে তোলে। তিনি একসময় চট্টগ্রাম,  [[সিলেট জেলা|সিলেট]], আরাকান ও ত্রিপুরার সামাজিক ও নৃতাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন এবং তার ভিত্তিতে উক্ত অঞ্চলের ইতিহাস রচনায় ব্রতী হন। একাদিক্রমে তিনি এগারোখানা গ্রন্থ এবং বহু প্রবন্ধ রচনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হচ্ছে: চট্টগ্রামের ইতিহাস প্রসঙ্গ (১৯৭৬), চট্টগ্রামের চরিতাভিধান (১৯৭৯), সিলেটের ইতিহাস প্রসঙ্গ (১৯৮১), চট্টগ্রামের সমাজ ও সংস্কৃতির রূপরেখা (১৯৮৮), চট্টগ্রাম-আরাকান (১৯৮৯), প্রাচীন আরাকান রোহাইংগা হিন্দু ও বড়ুয়া বৌদ্ধ আদিবাসী (১৯৯৪) ইত্যাদি। তাঁর এ ইতিহাস চর্চার কারণে তিনি স্থানীয়ভাবে ‘চট্টলতত্ত্ববিদ’ নামে খ্যাত হন।


আবদুল হক ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন সক্রিয় কর্মী। ১৯৭১ সালে রাউজান অঞ্চলে  [[মুক্তিযুদ্ধ|মুক্তিযুদ্ধ]] সংগঠনে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। আমৃত্যু তিনি চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য ছিলেন। গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি নতুন সিংহ স্মৃতিপদক (১৯৮৪) এবং লেখিকা সংঘ পদকে (১৯৮৭) ভূষিত হন। ১৯৯৪ সালের ২৬ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়।
আবদুল হক ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন সক্রিয় কর্মী। ১৯৭১ সালে রাউজান অঞ্চলে  [[মুক্তিযুদ্ধ|মুক্তিযুদ্ধ]] সংগঠনে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। আমৃত্যু তিনি চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য ছিলেন। গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি নতুন সিংহ স্মৃতিপদক (১৯৮৪) এবং লেখিকা সংঘ পদকে (১৯৮৭) ভূষিত হন। ১৯৯৪ সালের ২৬ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। [মুহম্মদ মজিরউদ্দীন মিয়া]
 
[মুহম্মদ মজিরউদ্দীন মিয়া]


[[en:Choudhury, Abdul Haq]]
[[en:Choudhury, Abdul Haq]]

০৬:১৯, ২৩ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

চৌধুরী, আবদুল হক (১৯২২-১৯৯৪)  আঞ্চলিক ইতিহাস লেখক। ১৯২২ সালের ২৪ আগস্ট  চট্টগ্রাম জেলার  রাউজান উপজেলার নওয়াজিশপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। পিতা শরফুদ্দীন চৌধুরী ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। রাউজান হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়ন করে আবদুল হক পিতার প্রতিষ্ঠিত নওয়াজিশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন (১৯৪২-৪৩)। পরে চাকরি ছেড়ে তিনি ব্যবসা শুরু করেন এবং একইসঙ্গে বিদ্যাচর্চাও চালিয়ে যান।

প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চশিক্ষা না থাকলেও আবদুল হক বাংলাদেশের আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চায় যে অবদান রাখেন তা রীতিমতো বিস্ময়কর। রাউজান হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রীশচন্দ্র চৌধুরীর প্রেরণায় তিনি প্রথম আঞ্চলিক ইতিহাস সম্পর্কে উৎসাহিত হন। এ বিষয়ে তিনি চট্টগ্রামের অপর কৃতী সন্তান আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের নিকট থেকেও অনুপ্রেরণা লাভ করেন। তারপর স্বীয় অঞ্চলের নশরত শাহের কোতোয়ালির ধ্বংসাবশেষ, ঈসা খাঁর দিঘি, আরাকানি দুর্গকোট এবং প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বিভিন্ন পুরাকীর্তি তাঁকে এ সম্পর্কে আরও কৌতূহলী করে তোলে। তিনি একসময় চট্টগ্রাম,  সিলেট, আরাকান ও ত্রিপুরার সামাজিক ও নৃতাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন এবং তার ভিত্তিতে উক্ত অঞ্চলের ইতিহাস রচনায় ব্রতী হন। একাদিক্রমে তিনি এগারোখানা গ্রন্থ এবং বহু প্রবন্ধ রচনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হচ্ছে: চট্টগ্রামের ইতিহাস প্রসঙ্গ (১৯৭৬), চট্টগ্রামের চরিতাভিধান (১৯৭৯), সিলেটের ইতিহাস প্রসঙ্গ (১৯৮১), চট্টগ্রামের সমাজ ও সংস্কৃতির রূপরেখা (১৯৮৮), চট্টগ্রাম-আরাকান (১৯৮৯), প্রাচীন আরাকান রোহাইংগা হিন্দু ও বড়ুয়া বৌদ্ধ আদিবাসী (১৯৯৪) ইত্যাদি। তাঁর এ ইতিহাস চর্চার কারণে তিনি স্থানীয়ভাবে ‘চট্টলতত্ত্ববিদ’ নামে খ্যাত হন।

আবদুল হক ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন সক্রিয় কর্মী। ১৯৭১ সালে রাউজান অঞ্চলে  মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। আমৃত্যু তিনি চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য ছিলেন। গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি নতুন সিংহ স্মৃতিপদক (১৯৮৪) এবং লেখিকা সংঘ পদকে (১৯৮৭) ভূষিত হন। ১৯৯৪ সালের ২৬ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। [মুহম্মদ মজিরউদ্দীন মিয়া]