চট্টগ্রাম-ত্রিপুরা বলিত বলয়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
বলিত বলয়ে উদ্ভেদিত (outcropping) অবক্ষেপের বয়স প্রবীণ-মায়োসিন (প্রায় ২ কোটি ৪০ লক্ষ বছর আগে) থেকে সাম্প্রতিক কালের মধ্যে। মায়োসিন অবক্ষেপ একটি দ্রুত অবনমিত, অস্থিত অববাহিকায় সামুদ্রিক ও ব্যাপকভাবে বদ্বীপীয় অবস্থায় উপলেপিত হয়। কিন্তু প্লায়ো-প্লাইসটোসিন যুগে (৫০ লক্ষ বছর থেকে ১ লক্ষ বছর আগে) এ অবক্ষেপ উপলেপের পরিবেশ উপজলীয় থেকে উপবায়বীয়, প্রবাহজ (fluviatile) থেকে হ্রদজ শর্ত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো। এ গাঠনিক প্রদেশের অল্প জীবাশ্মবিশিষ্ট নিওজিন (২ কোটি ৪০ লক্ষ বছর থেকে ২০ লক্ষ বছর আগে) স্তরক্রম কর্দম শিলার পরিবর্তন, পলিশিলা ও  [[বেলেপাথর|বেলেপাথর]] দ্বারা গঠিত যা অবক্ষেপকালীন অস্থিত অবস্থার ইঙ্গিতবাহী। ভারতীয় প্লেটের পূর্বমুখী অধোগমনের প্রত্যুত্তরে, এ অঞ্চলের মলাস অবক্ষেপ দ্রাঘিত দ্বি-ভঙ্গাক্ষনত (doubly plunging) অপ্রতিসম ভাঁজের ধারাবাহিকতায় বলিত হয়ে সোপানবৎ বিন্যস্ত হয়েছিল।
বলিত বলয়ে উদ্ভেদিত (outcropping) অবক্ষেপের বয়স প্রবীণ-মায়োসিন (প্রায় ২ কোটি ৪০ লক্ষ বছর আগে) থেকে সাম্প্রতিক কালের মধ্যে। মায়োসিন অবক্ষেপ একটি দ্রুত অবনমিত, অস্থিত অববাহিকায় সামুদ্রিক ও ব্যাপকভাবে বদ্বীপীয় অবস্থায় উপলেপিত হয়। কিন্তু প্লায়ো-প্লাইসটোসিন যুগে (৫০ লক্ষ বছর থেকে ১ লক্ষ বছর আগে) এ অবক্ষেপ উপলেপের পরিবেশ উপজলীয় থেকে উপবায়বীয়, প্রবাহজ (fluviatile) থেকে হ্রদজ শর্ত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো। এ গাঠনিক প্রদেশের অল্প জীবাশ্মবিশিষ্ট নিওজিন (২ কোটি ৪০ লক্ষ বছর থেকে ২০ লক্ষ বছর আগে) স্তরক্রম কর্দম শিলার পরিবর্তন, পলিশিলা ও  [[বেলেপাথর|বেলেপাথর]] দ্বারা গঠিত যা অবক্ষেপকালীন অস্থিত অবস্থার ইঙ্গিতবাহী। ভারতীয় প্লেটের পূর্বমুখী অধোগমনের প্রত্যুত্তরে, এ অঞ্চলের মলাস অবক্ষেপ দ্রাঘিত দ্বি-ভঙ্গাক্ষনত (doubly plunging) অপ্রতিসম ভাঁজের ধারাবাহিকতায় বলিত হয়ে সোপানবৎ বিন্যস্ত হয়েছিল।


বলয়সমূহের সংরেখন (alignment) পার্বত্য চট্টগ্রামে উত্তর উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বগামী প্রবণ আর গাঠনিক প্রবণতা ত্রিপুরায় উত্তর-দক্ষিণ ও সুরমা অববাহিকার পূর্ব অংশে উত্তর উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বমুখী। তবে পশ্চিমে সামান্য উত্তলতা ত্রিপুরা ও মিজোরামের অংশ বিশেষে ঊর্ধ্বভঙ্গীয় গঠনের বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরে। বলিত বলয় এখনও ভূতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের একটি প্রধান লক্ষ্যস্থল। ১২টি স্থলভাগের  [[গ্যাসক্ষেত্র|গ্যাসক্ষেত্র]] ও একটি উপকূলীয় গ্যাসক্ষেত্র সম্বলিত প্রমাণিত মায়োসিন গ্যাস প্রদেশ এখানে অবস্থিত। যদিও এ অঞ্চলভুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক তেমন কোনো খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া যায় নি, তথাপি এ অঞ্চলে তেল থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা এখনও রয়েছে।
বলয়সমূহের সংরেখন (alignment) পার্বত্য চট্টগ্রামে উত্তর উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বগামী প্রবণ আর গাঠনিক প্রবণতা ত্রিপুরায় উত্তর-দক্ষিণ ও সুরমা অববাহিকার পূর্ব অংশে উত্তর উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বমুখী। তবে পশ্চিমে সামান্য উত্তলতা ত্রিপুরা ও মিজোরামের অংশ বিশেষে ঊর্ধ্বভঙ্গীয় গঠনের বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরে। বলিত বলয় এখনও ভূতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের একটি প্রধান লক্ষ্যস্থল। ১২টি স্থলভাগের  [[গ্যাসক্ষেত্র|গ্যাসক্ষেত্র]] ও একটি উপকূলীয় গ্যাসক্ষেত্র সম্বলিত প্রমাণিত মায়োসিন গ্যাস প্রদেশ এখানে অবস্থিত। যদিও এ অঞ্চলভুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক তেমন কোনো খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া যায় নি, তথাপি এ অঞ্চলে তেল থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। [সিফাতুল কাদের চৌধুরী]
 
[সিফাতুল কাদের চৌধুরী]


[[en:Chittagong-Tripura Folded Belt]]
[[en:Chittagong-Tripura Folded Belt]]

০৫:৩৫, ৮ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

চট্টগ্রাম-ত্রিপুরা বলিত বলয় (Chittagong-Tripura Folded Belt)  ইন্দো-বার্মা পর্বতসারির পশ্চিম প্রান্ত বরাবর সর্বকনিষ্ঠ গাঠনিক প্রদেশ। মধ্য রৈখিক ও উপ-মধ্যরৈখিক প্রবণসহ সমান্তরাল, অর্ধবৃত্তাকৃতি, সম্প্রসারিত ভাঁজবিশিষ্ট এ অঞ্চল দক্ষিণে আরাকান উপকূলীয় অঞ্চল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম, ত্রিপুরার পাহাড় ও সুরমা অববাহিকার পূর্বপ্রান্ত ধরে উত্তরে  শিলং ম্যাসিফ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে আঞ্চলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বৃহৎ গাঠনিক উপাদান- ডাউকি চ্যুতি ও হাফলং চ্যুতি দ্বারা বিভাজিত হয়েছে। উত্তর-পূর্বদিকে বলয়টি কোহিমা সিনক্লাইনোরিয়াম ধরে এগিয়ে গেছে এবং আপার-আসামের শুপেন বলয়ের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

ইন্দো-বার্মা রেঞ্জের ইয়োসিন ফ্লিশ স্তরক্রম এ ভূ-গাঠনিক প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় সীমা গঠন করেছে। ঊর্ধ্বভঙ্গসমূহের প্রধানত গাঠনিক প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে অনেক ভূতত্ত্ববিদ এ বলয়ের পূর্ব পার্শ্বকে মিজো বলিত বলয় এবং পশ্চিম পার্শ্বকে চট্টগ্রাম-ত্রিপুরা বলিত বলয়ে বিভাজিত করার পক্ষে। দুটি বলয়ই উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বগামী কালাদান চ্যুতি দ্বারা বিচ্ছিন্ন। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পশ্চিম ঢাল থেকে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমমুখে সন্দ্বীপের পশ্চিম তীর পর্যন্ত অঙ্কিত রেখা বঙ্গোপসাগরে চট্টগ্রাম-ত্রিপুরা বলিত বলয়ের আনুমানিক পশ্চিম সীমান্ত নির্দেশ করে। তীর বরাবর এ রেখা দাউদকান্দি পর্যন্ত এগিয়ে, ঊর্ধ্বপানে  মেঘনা নদীকে অনুসরণ করে উত্তর-পূর্বে আশুগঞ্জ এলাকায় বাঁক নিয়ে অবশেষে সিলেটের উত্তর-পূর্বে শিলং ম্যাসিফের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়েছে।

বলিত বলয়ে উদ্ভেদিত (outcropping) অবক্ষেপের বয়স প্রবীণ-মায়োসিন (প্রায় ২ কোটি ৪০ লক্ষ বছর আগে) থেকে সাম্প্রতিক কালের মধ্যে। মায়োসিন অবক্ষেপ একটি দ্রুত অবনমিত, অস্থিত অববাহিকায় সামুদ্রিক ও ব্যাপকভাবে বদ্বীপীয় অবস্থায় উপলেপিত হয়। কিন্তু প্লায়ো-প্লাইসটোসিন যুগে (৫০ লক্ষ বছর থেকে ১ লক্ষ বছর আগে) এ অবক্ষেপ উপলেপের পরিবেশ উপজলীয় থেকে উপবায়বীয়, প্রবাহজ (fluviatile) থেকে হ্রদজ শর্ত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো। এ গাঠনিক প্রদেশের অল্প জীবাশ্মবিশিষ্ট নিওজিন (২ কোটি ৪০ লক্ষ বছর থেকে ২০ লক্ষ বছর আগে) স্তরক্রম কর্দম শিলার পরিবর্তন, পলিশিলা ও  বেলেপাথর দ্বারা গঠিত যা অবক্ষেপকালীন অস্থিত অবস্থার ইঙ্গিতবাহী। ভারতীয় প্লেটের পূর্বমুখী অধোগমনের প্রত্যুত্তরে, এ অঞ্চলের মলাস অবক্ষেপ দ্রাঘিত দ্বি-ভঙ্গাক্ষনত (doubly plunging) অপ্রতিসম ভাঁজের ধারাবাহিকতায় বলিত হয়ে সোপানবৎ বিন্যস্ত হয়েছিল।

বলয়সমূহের সংরেখন (alignment) পার্বত্য চট্টগ্রামে উত্তর উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বগামী প্রবণ আর গাঠনিক প্রবণতা ত্রিপুরায় উত্তর-দক্ষিণ ও সুরমা অববাহিকার পূর্ব অংশে উত্তর উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বমুখী। তবে পশ্চিমে সামান্য উত্তলতা ত্রিপুরা ও মিজোরামের অংশ বিশেষে ঊর্ধ্বভঙ্গীয় গঠনের বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরে। বলিত বলয় এখনও ভূতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের একটি প্রধান লক্ষ্যস্থল। ১২টি স্থলভাগের  গ্যাসক্ষেত্র ও একটি উপকূলীয় গ্যাসক্ষেত্র সম্বলিত প্রমাণিত মায়োসিন গ্যাস প্রদেশ এখানে অবস্থিত। যদিও এ অঞ্চলভুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক তেমন কোনো খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া যায় নি, তথাপি এ অঞ্চলে তেল থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। [সিফাতুল কাদের চৌধুরী]