চকোরিয়া উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৭৭ নং লাইন: ৭৭ নং লাইন:
''মুক্তিযুদ্ধ''  মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনী উপজেলার ১৩জন গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে এবং বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেয়। উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভ (শহীদ আবদুল হামিদ) রয়েছে।
''মুক্তিযুদ্ধ''  মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনী উপজেলার ১৩জন গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে এবং বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেয়। উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভ (শহীদ আবদুল হামিদ) রয়েছে।


''বিস্তারিত দেখুন''  চকরিয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৩।
''বিস্তারিত দেখুন''  চকরিয়া উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৩।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৪৫৫, মন্দির ৫২, প্যাগোডা ১৬, গির্জা ৩।  
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৪৫৫, মন্দির ৫২, প্যাগোডা ১৬, গির্জা ৩।  

০৫:৫৭, ২৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

চকোরিয়া উপজেলা (কক্সবাজার জেলা)  আয়তন: ৫০৩.৮৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৩৪´ থেকে ২১°৫৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৪´ থেকে ৯২°৫৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লোহাগাড়া, বাঁশখালী এবং লামা উপজেলা, দক্ষিণে কক্সবাজার সদর এবং রামু উপজেলা, পূর্বে লামা এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা, পশ্চিমে মহেশখালী ও পেকুয়া উপজেলা।

জনসংখ্যা ৪৭৪৪৬৫; পুরুষ ২৩৯১৯৮, মহিলা ২৩৫২৬৭। মুসলিম ৪৪২৭৯৯, হিন্দু ২৬১৪২, বৌদ্ধ ৪২০৭, খ্রিস্টান ১২৬৫ এবং অন্যান্য ৫২। এ উপজেলায় মগ, মারমা, মুরং ও চাকমা প্রভৃতি জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: মাতামুহুরী ও বড় মাতামুহুরী এবং মহেশখালী চ্যানেল ও কাইয়ার বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন চকোরিয়া থানা গঠিত হয় ১৭৯৩ সালে এবং উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৮ ৪৮ ২১২ ৭২৬৬৯ ৪০১৭৯৬ ৯৪২ ৬১.৩ ৪৫.১
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৫.৭৬ ২৩ ৭২৬৬৯ ৪৬১১ ৬১.৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কাইয়ার বিল ৬১ ১৯৭০ ৯৬৮৮ ৯৭৭১ ৪৩.৩
কাখারা ৫৫ ১০৫৮৫ ১১৪২৭ ১১৪০২ ৪৫.৮
কোনাখালী ৬৯ ২৭৮১ ৮৪৭৯ ৯৪৪০ ৩৩.৯
খুন্তাখালী ৬৭ ১৯২৪৯ ১৭২১২ ১৬৮৭৬ ৪৫.৭
চিরিঙ্গা ২৭ ৭৮২৯ ৭৯৫৫ ৭৭৯০ ৪৩.০
ডুলাহাজরা ৩৩ ১০৫০১ ২১৬৪২ ২১২৬২ ৪৯.৫
ঢেমুশিয়া ৩১ ২৪৬২ ৬০৬৭ ৬২৯৯ ৩৮.৬
পশ্চিম বড় ভেওলা ৯৪ ৬০১৭ ৪৪১৩ ৪৩৯২ ৫১.৩
পূর্ব বড় ভেওলা ৩৯ ২১৪৩ ১৪৬২২ ১৩৬২৬ ৪৯.৫
ফাইসাখালী ৪৪ ৪৪০৫ ১২৫৮৮ ১২৫৪৯ ৪৪.৭
বড়ইতলী ১৬ ৬৫০১ ১৮২৬৮ ১৭৩১৭ ৫১.৬
বদরখালী ১০ ৪৩৮০ ১৫৬৭৭ ১৫২৮৭ ৪০.২
বমোবিলছড়ি ১২ ৩৫০৫ ৪৩৩৬ ৪২৩৫ ৫০.৯
ভেওলা মানিক চর ২২ ৬৩২১ ৯৯৪৭ ১০০০৪ ৩৭.২
লাক্ষ্যার চর ৭২ ১২২৪ ৪০২৯ ৪০৪০ ৫৭.০
সুরাজপুর /মানিকপুর ৫৫ ৩৭৩৮ ৫৮১২ ৫৮২৬ ৪৬.৩
সাহার বিল ৮০ ১০২৪৯ ১০১২৫ ৯৭৫৫ ৫১.৬
হারবাং ৫০ ১৭০৯৯ ১৯৫৮৩ ২০০৫৫ ৪৪.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শাহ উমরের মাযার, মানিকপুরে ফজল কিউকের সাত গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ (১৮৭৩)।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনী উপজেলার ১৩জন গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে এবং বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেয়। উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভ (শহীদ আবদুল হামিদ) রয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন চকরিয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৩।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৫৫, মন্দির ৫২, প্যাগোডা ১৬, গির্জা ৩।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৭.৬%; পুরুষ ৪৭.৯%, মহিলা ৪৭.৪%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫৩, স্যাটেলাইট স্কুল ১৯, মাদ্রাসা ৯৮৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চকোরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), চকোরিয়া বহুমুখী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, মানিকপুর বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮২৮), হারবাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮৪), পেকুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৮), সাহারবিল আনওয়ারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯১৮)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক চকোরী, পাক্ষিক মেহেদী।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৫২, সাহিত্য পরিষদ ৩, মহিলা সংগঠন ২২, নাট্যদল ২, খেলার মাঠ ৫০।

দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র  ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক, চকোরিয়া সুন্দরবন, ডুলাহাজরা হরিণ প্রজনন কেন্দ্র, বীর কমলার দিঘি।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৩.০৯%, অকৃষি শ্রমিক ৭.৮০%, শিল্প ০.৭৫%, ব্যবসা ১৫.০১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৯৪%, চাকরি ৬.৭০%, নির্মাণ ১.১০%, ধর্মীয় সেবা ০.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.১৩% এবং অন্যান্য ১১.২৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৩৪.৩০% এবং ভূমিহীন ৬৫.৭০%। শহরে ২৫.৯৫% এবং গ্রামে ৩৫.১৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, সরিষা, মিষ্টি আলু, মরিচ, ভুট্টা, আখ, গম, চীনাবাদাম, পান, তামাক, ফুলকপি, টমেটো, বাঁধাকপি, বেগুন, ঢেড়শ, বরবটি, ফেলন।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি মসুর, ছোলা, কাউন, তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে, আনারস, পেয়ারা, লেবু, তরমুজ।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪০.৬৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২০৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৩২.০২ কিমি; নৌপথ ৬০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা আটাকল, ধানকল, করাতকল, বরফকল, লবণ কারখানা, ছাপাখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, ওয়েল্ডিং কারখানা, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩৯, মেলা ১। রাজাখালী আলেক শাহ বাজার, পেকুয়া হাট, বদরখালী হাট, খুন্তাখালী হাট, মগবাজার এবং চকোরিয়ার ঘোড়দৌড় মেলা।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য চিংড়ি, লবণ, তামাক, চীনাবাদাম, সরিষা, ময়দা, তরমুজ, কাঠ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৭.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয় জলের উৎস নলকূপ ৯০.৮%, ট্যাপ ১.৪% এবং অন্যান্য ৭.৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৬.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৭.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র  উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৬, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, হাসপাতাল ২।

প্রাকৃতিক দূর্যোগ  ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে এ উপজেলার প্রায় ১৬৭০৫ জন লোক মারা যায়।

এনজিও ব্র্র্যাক, কেয়ার, কারিতাস, প্রশিকা,আশা, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট।  [জাকের উল্লাহ চকোরী]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; চকোরিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।