গ্রামোফোন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''গ্রামোফোন'''  আধুনিক রেকর্ড প্লেয়ার, স্টেরিও ও সিডির পূর্বরূপ। টমাস এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১) ১৮৭৭ সালে শব্দযন্ত্র আবিষ্কার করেন এবং তার নাম দেন ফোনোগ্রাফ। ১৮৮৭ সালে এমিল বার্লিনার গ্রামোফোন আবিষ্কার করেন, যা এডিসনের ফোনোগ্রাফেরই উন্নত ব্রিটিশ সংস্করণ। পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে অনেক গ্রামোফোন কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়।
'''গ্রামোফোন'''  আধুনিক রেকর্ড প্লেয়ার, স্টেরিও ও সিডির পূর্বরূপ। টমাস এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১) ১৮৭৭ সালে শব্দযন্ত্র আবিষ্কার করেন এবং তার নাম দেন ফোনোগ্রাফ। ১৮৮৭ সালে এমিল বার্লিনার গ্রামোফোন আবিষ্কার করেন, যা এডিসনের ফোনোগ্রাফেরই উন্নত ব্রিটিশ সংস্করণ। পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে অনেক গ্রামোফোন কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়।


[[Image:Gramophone.jpg|thumb|400px|right|গ্রামোফোন]]
বাংলাকে গ্রামোফোন জগতের সঙ্গে পরিচিত করান এফ.ডব্লিউ গেইসবার্গ। তিনি ছিলেন গ্রামোফোন কোম্পানির প্রথম রেকর্ডিং ইঞ্জিনিয়ার। ১৯০০-১৯০৭ সালের মধ্যে তিনি বহুবার কলকাতা ও ভারতের অন্যান্য স্থান সফর করেন এবং ভারতে এ শব্দধারণ প্রক্রিয়া চালু করার উদ্দেশ্যে গৃহীত তাঁর উদ্যোগে অংশগ্রহণের জন্য স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ১৯০২ সালে গেইসবার্গ প্রথম একজন ভারতীয় শিল্পীর রেকর্ড তৈরি করেন এবং তিনি হচ্ছেন কলকাতার বাঙালি গওহর জান। সাত ও দশ ইঞ্চি ব্যাসের একটি রেকর্ডে তাঁর গানগুলি ধারণ করা হয়। এ রেকর্ডই তাঁকে অল্পদিনের মধ্যে খ্যাতি এনে দেয়। কলকাতার সব সংবাদপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় তাঁর ছবি ছাপা হয় এবং এভাবেই ভারত অতিশীঘ্র গ্রামোফোন রেকর্ডের এক বিশাল বাজারে পরিণত হয়। বিশ শতকের প্রথম দশকে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি জনপ্রিয় গ্রামোফোন কোম্পানি হচ্ছে: হিজ মাস্টার’স ভয়েজ (ব্রিটিশ), কলাম্বিয়া (আমেরিকান) এবং পঠে (ফ্রেন্স)।
বাংলাকে গ্রামোফোন জগতের সঙ্গে পরিচিত করান এফ.ডব্লিউ গেইসবার্গ। তিনি ছিলেন গ্রামোফোন কোম্পানির প্রথম রেকর্ডিং ইঞ্জিনিয়ার। ১৯০০-১৯০৭ সালের মধ্যে তিনি বহুবার কলকাতা ও ভারতের অন্যান্য স্থান সফর করেন এবং ভারতে এ শব্দধারণ প্রক্রিয়া চালু করার উদ্দেশ্যে গৃহীত তাঁর উদ্যোগে অংশগ্রহণের জন্য স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ১৯০২ সালে গেইসবার্গ প্রথম একজন ভারতীয় শিল্পীর রেকর্ড তৈরি করেন এবং তিনি হচ্ছেন কলকাতার বাঙালি গওহর জান। সাত ও দশ ইঞ্চি ব্যাসের একটি রেকর্ডে তাঁর গানগুলি ধারণ করা হয়। এ রেকর্ডই তাঁকে অল্পদিনের মধ্যে খ্যাতি এনে দেয়। কলকাতার সব সংবাদপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় তাঁর ছবি ছাপা হয় এবং এভাবেই ভারত অতিশীঘ্র গ্রামোফোন রেকর্ডের এক বিশাল বাজারে পরিণত হয়। বিশ শতকের প্রথম দশকে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি জনপ্রিয় গ্রামোফোন কোম্পানি হচ্ছে: হিজ মাস্টার’স ভয়েজ (ব্রিটিশ), কলাম্বিয়া (আমেরিকান) এবং পঠে (ফ্রেন্স)।
[[Image:Gramophone.jpg|thumb|400px|right|গ্রামোফোন]]


গ্রামোফোন রেকর্ড তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রথম ভারতীয় উদ্যোক্তা  [[বসু, হেমেন্দ্রমোহন|হেমেন্দ্রমোহন বসু]]১৯০০ সালে এডিসনকৃত একটি ফোনোগ্রাফ রেকর্ডিং মেশিন সংগ্রহ করেন। পঠে কোম্পানির সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল। হেমেন্দ্র হিজ মাস্টার’স ভয়েজ থেকে যন্ত্রপাতি ভাড়া করে স্থানীয় মনীষীদের কণ্ঠস্বর রেকর্ড করতে থাকেন। পরে তিনি নিজেই কলকাতায় একটি রেকর্ডিং সংস্থা স্থাপন করেন। এই রেকডিং সংস্থা বাংলা, হিন্দি ও উর্দুতে অনেক অনুষ্ঠান ধারণ করে।
গ্রামোফোন রেকর্ড তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রথম ভারতীয় উদ্যোক্তা  [[বসু, হেমেন্দ্রমোহন|হেমেন্দ্রমোহন বসু]]১৯০০ সালে এডিসনকৃত একটি ফোনোগ্রাফ রেকর্ডিং মেশিন সংগ্রহ করেন। পঠে কোম্পানির সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল। হেমেন্দ্র হিজ মাস্টার’স ভয়েজ থেকে যন্ত্রপাতি ভাড়া করে স্থানীয় মনীষীদের কণ্ঠস্বর রেকর্ড করতে থাকেন। পরে তিনি নিজেই কলকাতায় একটি রেকর্ডিং সংস্থা স্থাপন করেন। এই রেকডিং সংস্থা বাংলা, হিন্দি ও উর্দুতে অনেক অনুষ্ঠান ধারণ করে।

০৯:২৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

গ্রামোফোন  আধুনিক রেকর্ড প্লেয়ার, স্টেরিও ও সিডির পূর্বরূপ। টমাস এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১) ১৮৭৭ সালে শব্দযন্ত্র আবিষ্কার করেন এবং তার নাম দেন ফোনোগ্রাফ। ১৮৮৭ সালে এমিল বার্লিনার গ্রামোফোন আবিষ্কার করেন, যা এডিসনের ফোনোগ্রাফেরই উন্নত ব্রিটিশ সংস্করণ। পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে অনেক গ্রামোফোন কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়।

গ্রামোফোন

বাংলাকে গ্রামোফোন জগতের সঙ্গে পরিচিত করান এফ.ডব্লিউ গেইসবার্গ। তিনি ছিলেন গ্রামোফোন কোম্পানির প্রথম রেকর্ডিং ইঞ্জিনিয়ার। ১৯০০-১৯০৭ সালের মধ্যে তিনি বহুবার কলকাতা ও ভারতের অন্যান্য স্থান সফর করেন এবং ভারতে এ শব্দধারণ প্রক্রিয়া চালু করার উদ্দেশ্যে গৃহীত তাঁর উদ্যোগে অংশগ্রহণের জন্য স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ১৯০২ সালে গেইসবার্গ প্রথম একজন ভারতীয় শিল্পীর রেকর্ড তৈরি করেন এবং তিনি হচ্ছেন কলকাতার বাঙালি গওহর জান। সাত ও দশ ইঞ্চি ব্যাসের একটি রেকর্ডে তাঁর গানগুলি ধারণ করা হয়। এ রেকর্ডই তাঁকে অল্পদিনের মধ্যে খ্যাতি এনে দেয়। কলকাতার সব সংবাদপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় তাঁর ছবি ছাপা হয় এবং এভাবেই ভারত অতিশীঘ্র গ্রামোফোন রেকর্ডের এক বিশাল বাজারে পরিণত হয়। বিশ শতকের প্রথম দশকে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি জনপ্রিয় গ্রামোফোন কোম্পানি হচ্ছে: হিজ মাস্টার’স ভয়েজ (ব্রিটিশ), কলাম্বিয়া (আমেরিকান) এবং পঠে (ফ্রেন্স)।

গ্রামোফোন রেকর্ড তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রথম ভারতীয় উদ্যোক্তা  হেমেন্দ্রমোহন বসু১৯০০ সালে এডিসনকৃত একটি ফোনোগ্রাফ রেকর্ডিং মেশিন সংগ্রহ করেন। পঠে কোম্পানির সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল। হেমেন্দ্র হিজ মাস্টার’স ভয়েজ থেকে যন্ত্রপাতি ভাড়া করে স্থানীয় মনীষীদের কণ্ঠস্বর রেকর্ড করতে থাকেন। পরে তিনি নিজেই কলকাতায় একটি রেকর্ডিং সংস্থা স্থাপন করেন। এই রেকডিং সংস্থা বাংলা, হিন্দি ও উর্দুতে অনেক অনুষ্ঠান ধারণ করে।

গ্রামোফোন তৈরি ও বাণিজ্যিকীকরণের ক্ষেত্রে প্রথম উদ্যোক্তা ছিলেন এম.এল শ্ব (মানিকলাল সাহা)। এর আগে তিনি ছিলেন একজন  হারমোনিয়াম নির্মাতা। শ্ব ছিলেন লন্ডনের নিকল ফেরেস লি.-এর নিকল রেকর্ডস ও নিকলফোনের প্রথম ও প্রধান এজেন্ট। শেষ পর্যন্ত তিনি বিখ্যাত ইন্ডিয়ান রেকর্ড ম্যানিউফ্যাকচারিং কোম্পানি লি. প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ শতকের বিশের দশক থেকে গ্রামোফোন ও গ্রামোফোন রেকর্ডস বাঙালি পরিবারের একটি মর্যাদাপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয় এবং এ প্রবণতা পঞ্চাশের দশক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল, যখন স্টেরিও গ্রামোফোনের স্থান দখল করছিল।  [সিরাজুল ইসলাম]