গাজী মিয়াঁর বস্তানী
গাজী মিয়াঁর বস্তানী মীর মশাররফ হোসেন রচিত আত্মজৈবনিক উপন্যাস। এর প্রথম অংশ ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়; দ্বিতীয় অংশ পুস্তকাকারে স্বতন্ত্রভাবে প্রকাশিত হয়নি, তবে মীর রচিত আত্মজীবনী আমার জীবনী-তে এর কিয়দংশ মুদ্রিত হয়। গ্রন্থের প্রচ্ছদপটে গ্রন্থকার হিসেবে মীর মশাররফ হোসেনের নাম মুদ্রিত হয়নি; স্বত্বাধিকারী হিসেবে তাঁর ছদ্মনাম ‘উদাসীন পথিক’ মুদ্রিত হয়েছে।
সোনাবিবি ও মনিবিবি নামে দুই বিধবা মহিলা জমিদারের দ্বন্দ্ব উপন্যাসের মূল ঘটনা। উপন্যাসের নায়ক-নায়িকা ও স্থানের নামকরণ অভিনব, যেমন অরাজকপুর, যমদ্বার, নচ্ছারপুর, পয়জারন্নেসা, সবলোট চৌধুরী, ভেড়াকান্ত, জয়ঢাক ইত্যাদি। ভেড়াকান্ত চরিত্রে লেখকের নিজের ছায়াপাত আছে বলে গ্রন্থখানিকে আত্মজৈবনিক রচনা বলে অভিহিত করা হয়। এটি সেকালের একটি সামাজিক দর্পণস্বরূপ। মুসলমান জমিদারদের জীবনধারা, সমাজে নারীর স্থান, হিন্দু-মুসলিম পারস্পরিক সম্পর্ক, দেশের শাসনব্যবস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দুর্নীতির কথা ব্যঙ্গাত্মক ভাষায় এতে বর্ণনা করা হয়েছে। উপন্যাসটির চরিত্রের নামকরণে সংস্কৃত রূপকধর্মী নাটক বা প্রহসনের প্রভাব রয়েছে। [মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল]