খান, ওস্তাদ মীর কাশেম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:MirkashemKhanUstad%20.jpg|thumb|400px|right|মীর কাশেম খান]]
'''খান, ওস্তাদ মীর কাশেম''' (১৯২৮-১৯৮৪)  সেতারশিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক। ১৯২৮ সালের ১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের এক সঙ্গীত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা নায়েব আলী খাঁও ছিলেন সঙ্গীতজ্ঞ।
'''খান, ওস্তাদ মীর কাশেম''' (১৯২৮-১৯৮৪)  সেতারশিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক। ১৯২৮ সালের ১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের এক সঙ্গীত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা নায়েব আলী খাঁও ছিলেন সঙ্গীতজ্ঞ।


শৈশবকালেই পারিবারিক সঙ্গীতধারার প্রতি মীর কাশেমের অনুরাগ জন্মে। সাত বছর বয়সে তিনি পিতার নিকট কণ্ঠসঙ্গীত ও তালযন্ত্রে তালিম নেন এবং পরে সেতার শিখতে শুরু করেন। পিতার নিকট দীর্ঘদিন শিক্ষাগ্রহণের পর তিনি মাইহারে পিতৃব্য ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নিকট চার বছর  [[সঙ্গীত|সঙ্গীত]] সাধনা করেন। সঙ্গীতশিক্ষা শেষ করে তিনি কলকাতার এক ব্যালে ট্রুপে কিছুদিন কাজ করেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সঙ্গীত জলসায় ও সম্মেলনে সেতার বাজিয়ে তিনি প্রশংসা অর্জন করেন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে ‘নিজস্ব শিল্পী’ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৬ সালে বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী বুলবুল চৌধুরীর নৃত্যদলের সদস্য হিসেবে তিনি সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইরাক, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, পশ্চিম জার্মানি, ইটালি ও মিশর সফর করেন। ১৯৬৭ সালে সফর করেন চীন, ১৯৬৮ সালে ইরান ও  আফগানিস্তান, ১৯৭২ সালে ভারত, ১৯৭৭ সালে যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, সুইডেন ও ডেনমার্ক এবং ১৯৭৮ সালে হংকং ও থাইল্যান্ড। এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেতার বাজিয়ে তিনি সুনাম অর্জন করেন।
শৈশবকালেই পারিবারিক সঙ্গীতধারার প্রতি মীর কাশেমের অনুরাগ জন্মে। সাত বছর বয়সে তিনি পিতার নিকট কণ্ঠসঙ্গীত ও তালযন্ত্রে তালিম নেন এবং পরে সেতার শিখতে শুরু করেন। পিতার নিকট দীর্ঘদিন শিক্ষাগ্রহণের পর তিনি মাইহারে পিতৃব্য ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নিকট চার বছর  [[সঙ্গীত|সঙ্গীত]] সাধনা করেন। সঙ্গীতশিক্ষা শেষ করে তিনি কলকাতার এক ব্যালে ট্রুপে কিছুদিন কাজ করেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সঙ্গীত জলসায় ও সম্মেলনে সেতার বাজিয়ে তিনি প্রশংসা অর্জন করেন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে ‘নিজস্ব শিল্পী’ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৬ সালে বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী বুলবুল চৌধুরীর নৃত্যদলের সদস্য হিসেবে তিনি সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইরাক, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, পশ্চিম জার্মানি, ইটালি ও মিশর সফর করেন। ১৯৬৭ সালে সফর করেন চীন, ১৯৬৮ সালে ইরান ও  আফগানিস্তান, ১৯৭২ সালে ভারত, ১৯৭৭ সালে যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, সুইডেন ও ডেনমার্ক এবং ১৯৭৮ সালে হংকং ও থাইল্যান্ড। এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেতার বাজিয়ে তিনি সুনাম অর্জন করেন।
[[Image:MirkashemKhanUstad%20.jpg|thumb|400px|right|মীর কাশেম খান]]


মীর কাশেমের সঙ্গীতপ্রতিভা কেবল সেতারবাদনেই সীমিত ছিল না; তিনি সঙ্গীতে সুরারোপ করতেন এবং সঙ্গীত পরিচালনাও করতেন। সামান্য ক্ষতি, আনারকলি, বিচার, কাঞ্চনমালা প্রভৃতি নৃত্যনাট্যে সঙ্গীত পরিচালনা করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর সুরারোপিত অসংখ্য গান রেডিও ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে।
মীর কাশেমের সঙ্গীতপ্রতিভা কেবল সেতারবাদনেই সীমিত ছিল না; তিনি সঙ্গীতে সুরারোপ করতেন এবং সঙ্গীত পরিচালনাও করতেন। সামান্য ক্ষতি, আনারকলি, বিচার, কাঞ্চনমালা প্রভৃতি নৃত্যনাট্যে সঙ্গীত পরিচালনা করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর সুরারোপিত অসংখ্য গান রেডিও ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে।


মীর কাশেম ঢাকার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান জাগো আর্ট সেন্টারের সঙ্গীত পরিচালক ও সঙ্গীত প্রশিক্ষক ছিলেন। ১৯৭৬ সালে শ্রেষ্ঠ সেতারশিল্পী হিসেবে তিনি জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার লাভ করেন। তাছাড়া সঙ্গীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী কর্তৃক স্বর্ণপদকে এবং ১৯৮৪ সালে ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হন।
মীর কাশেম ঢাকার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান জাগো আর্ট সেন্টারের সঙ্গীত পরিচালক ও সঙ্গীত প্রশিক্ষক ছিলেন। ১৯৭৬ সালে শ্রেষ্ঠ সেতারশিল্পী হিসেবে তিনি জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার লাভ করেন। তাছাড়া সঙ্গীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী কর্তৃক স্বর্ণপদকে এবং ১৯৮৪ সালে ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হন। [মোবারক হোসেন খান]
 
[মোবারক হোসেন খান]


[[en:Khan, Ustad Mir Kashem]]
[[en:Khan, Ustad Mir Kashem]]

০৬:২৩, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মীর কাশেম খান

খান, ওস্তাদ মীর কাশেম (১৯২৮-১৯৮৪)  সেতারশিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক। ১৯২৮ সালের ১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের এক সঙ্গীত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা নায়েব আলী খাঁও ছিলেন সঙ্গীতজ্ঞ।

শৈশবকালেই পারিবারিক সঙ্গীতধারার প্রতি মীর কাশেমের অনুরাগ জন্মে। সাত বছর বয়সে তিনি পিতার নিকট কণ্ঠসঙ্গীত ও তালযন্ত্রে তালিম নেন এবং পরে সেতার শিখতে শুরু করেন। পিতার নিকট দীর্ঘদিন শিক্ষাগ্রহণের পর তিনি মাইহারে পিতৃব্য ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নিকট চার বছর  সঙ্গীত সাধনা করেন। সঙ্গীতশিক্ষা শেষ করে তিনি কলকাতার এক ব্যালে ট্রুপে কিছুদিন কাজ করেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সঙ্গীত জলসায় ও সম্মেলনে সেতার বাজিয়ে তিনি প্রশংসা অর্জন করেন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে ‘নিজস্ব শিল্পী’ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৬ সালে বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী বুলবুল চৌধুরীর নৃত্যদলের সদস্য হিসেবে তিনি সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইরাক, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, পশ্চিম জার্মানি, ইটালি ও মিশর সফর করেন। ১৯৬৭ সালে সফর করেন চীন, ১৯৬৮ সালে ইরান ও  আফগানিস্তান, ১৯৭২ সালে ভারত, ১৯৭৭ সালে যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, সুইডেন ও ডেনমার্ক এবং ১৯৭৮ সালে হংকং ও থাইল্যান্ড। এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেতার বাজিয়ে তিনি সুনাম অর্জন করেন।

মীর কাশেমের সঙ্গীতপ্রতিভা কেবল সেতারবাদনেই সীমিত ছিল না; তিনি সঙ্গীতে সুরারোপ করতেন এবং সঙ্গীত পরিচালনাও করতেন। সামান্য ক্ষতি, আনারকলি, বিচার, কাঞ্চনমালা প্রভৃতি নৃত্যনাট্যে সঙ্গীত পরিচালনা করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর সুরারোপিত অসংখ্য গান রেডিও ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে।

মীর কাশেম ঢাকার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান জাগো আর্ট সেন্টারের সঙ্গীত পরিচালক ও সঙ্গীত প্রশিক্ষক ছিলেন। ১৯৭৬ সালে শ্রেষ্ঠ সেতারশিল্পী হিসেবে তিনি জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার লাভ করেন। তাছাড়া সঙ্গীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী কর্তৃক স্বর্ণপদকে এবং ১৯৮৪ সালে ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হন। [মোবারক হোসেন খান]