খান, ওস্তাদ ফুলঝুরি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:KhanUstadPhuljhuri.jpg|thumb|400px|right|ফুলঝুরি খান]]
'''খান, ওস্তাদ ফুলঝুরি''' (১৯২০-১৯৮২)  যন্ত্রশিল্পী। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর গ্রামে তাঁর জন্ম। প্রখ্যাত সঙ্গীতসাধক আফতাবউদ্দিন খাঁর দৌহিত্র ফুলঝুরি খানের প্রকৃত নাম ইয়ার রসুল খান। বাল্যকাল থেকেই তিনি সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন। মাতামহ আফতাবউদ্দিন খাঁর নিকট তাঁর প্রথম তবলায়  [[হাতেখড়ি|হাতেখড়ি]] হয়। পরে ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ ও সঙ্গীতাচার্য আলাউদ্দিন খাঁর নিকট তিনি সঙ্গীতে তালিম নেন। আলাউদ্দিন খাঁর নিকট তিনি দীর্ঘকাল তবলা ও এসরাজে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ফুলঝুরি খানের সঙ্গীতজীবন গঠনে মাতামহসহ এই তিনজনের অবদান সবচেয়ে বেশি।
'''খান, ওস্তাদ ফুলঝুরি''' (১৯২০-১৯৮২)  যন্ত্রশিল্পী। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর গ্রামে তাঁর জন্ম। প্রখ্যাত সঙ্গীতসাধক আফতাবউদ্দিন খাঁর দৌহিত্র ফুলঝুরি খানের প্রকৃত নাম ইয়ার রসুল খান। বাল্যকাল থেকেই তিনি সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন। মাতামহ আফতাবউদ্দিন খাঁর নিকট তাঁর প্রথম তবলায়  [[হাতেখড়ি|হাতেখড়ি]] হয়। পরে ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ ও সঙ্গীতাচার্য আলাউদ্দিন খাঁর নিকট তিনি সঙ্গীতে তালিম নেন। আলাউদ্দিন খাঁর নিকট তিনি দীর্ঘকাল তবলা ও এসরাজে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ফুলঝুরি খানের সঙ্গীতজীবন গঠনে মাতামহসহ এই তিনজনের অবদান সবচেয়ে বেশি।


৫ নং লাইন: ৬ নং লাইন:


ফুলঝুরি খান তবলার পাশাপাশি এসরাজ বাদনেও কৃতবিদ্য ছিলেন। তাঁর এসরাজবাদন অনেক জ্ঞানিগুণী ব্যক্তিকে মুগ্ধ করেছে।  [[এসরাজ|এসরাজ]], তারসানাই ও  [[তবলা|তবলা]] বাদনে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।  [[সেতার|সেতার]],  পাখোয়াজ ইত্যাদি যন্ত্রবাদনেও তিনি পারদর্শী ছিলেন। তিনি আলাউদ্দিন খাঁর ‘মাইহার স্ট্রিং ব্যান্ড’ দলের সদস্য ছিলেন। প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্করের নৃত্যদলের সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তিনি দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনে তিনি যন্ত্রসঙ্গীতের শিক্ষক ছিলেন। চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাট্যে তাঁর এসরাজবাদন শুনে রবীন্দ্রনাথ অভিভূত হন। পরে ফুলঝুরি খান শিলং চলে যান। সেখানে তিনি একটি সঙ্গীত বিদ্যালয় স্থাপন করে শিষ্যদের সঙ্গীত শিক্ষা দেন। ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং ঢাকা বেতারকেন্দ্রে ‘নিজস্ব শিল্পী’ হিসেবে যোগদান করেন। বেতারে তিনি তারসানাই বাজাতেন।
ফুলঝুরি খান তবলার পাশাপাশি এসরাজ বাদনেও কৃতবিদ্য ছিলেন। তাঁর এসরাজবাদন অনেক জ্ঞানিগুণী ব্যক্তিকে মুগ্ধ করেছে।  [[এসরাজ|এসরাজ]], তারসানাই ও  [[তবলা|তবলা]] বাদনে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।  [[সেতার|সেতার]],  পাখোয়াজ ইত্যাদি যন্ত্রবাদনেও তিনি পারদর্শী ছিলেন। তিনি আলাউদ্দিন খাঁর ‘মাইহার স্ট্রিং ব্যান্ড’ দলের সদস্য ছিলেন। প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্করের নৃত্যদলের সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তিনি দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনে তিনি যন্ত্রসঙ্গীতের শিক্ষক ছিলেন। চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাট্যে তাঁর এসরাজবাদন শুনে রবীন্দ্রনাথ অভিভূত হন। পরে ফুলঝুরি খান শিলং চলে যান। সেখানে তিনি একটি সঙ্গীত বিদ্যালয় স্থাপন করে শিষ্যদের সঙ্গীত শিক্ষা দেন। ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং ঢাকা বেতারকেন্দ্রে ‘নিজস্ব শিল্পী’ হিসেবে যোগদান করেন। বেতারে তিনি তারসানাই বাজাতেন।
[[Image:KhanUstadPhuljhuri.jpg|thumb|400px|right|ফুলঝুরি খান]]
সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য ফুলঝুরি খান ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার’-এ ভূষিত হন। ১৯৮২ সালে ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।


[মোবারক হোসেন খান]
সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য ফুলঝুরি খান ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার’-এ ভূষিত হন। ১৯৮২ সালে ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।  [মোবারক হোসেন খান]


[[en:Khan, Ustad Phuljhuri]]
[[en:Khan, Ustad Phuljhuri]]

০৬:২১, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ফুলঝুরি খান

খান, ওস্তাদ ফুলঝুরি (১৯২০-১৯৮২)  যন্ত্রশিল্পী। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর গ্রামে তাঁর জন্ম। প্রখ্যাত সঙ্গীতসাধক আফতাবউদ্দিন খাঁর দৌহিত্র ফুলঝুরি খানের প্রকৃত নাম ইয়ার রসুল খান। বাল্যকাল থেকেই তিনি সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন। মাতামহ আফতাবউদ্দিন খাঁর নিকট তাঁর প্রথম তবলায়  হাতেখড়ি হয়। পরে ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ ও সঙ্গীতাচার্য আলাউদ্দিন খাঁর নিকট তিনি সঙ্গীতে তালিম নেন। আলাউদ্দিন খাঁর নিকট তিনি দীর্ঘকাল তবলা ও এসরাজে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ফুলঝুরি খানের সঙ্গীতজীবন গঠনে মাতামহসহ এই তিনজনের অবদান সবচেয়ে বেশি।

মাইহারের মহারাজা রাজদরবারের এক জলসায় আলাউদ্দিন খাঁর সরোদ বাদনের সঙ্গে ইয়ার রসুলের তবলাবাদন শুনে অত্যন্ত খুশি হন এবং তাঁকে ‘ফুলঝুরি’ উপাধি দেন। মাইহারের মহারাজার ভাষায় ‘ফুলঝুরি’ শব্দের অর্থ ইয়ার রসুলের হাত থেকে যেন তবলা থেকে তারাবাজির স্ফুলিঙ্গ ঝরায়। এরপর থেকেই তিনি ‘ফুলঝুরি খান’ নামে পরিচিত হন।

ফুলঝুরি খান তবলার পাশাপাশি এসরাজ বাদনেও কৃতবিদ্য ছিলেন। তাঁর এসরাজবাদন অনেক জ্ঞানিগুণী ব্যক্তিকে মুগ্ধ করেছে।  এসরাজ, তারসানাই ও  তবলা বাদনে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।  সেতার,  পাখোয়াজ ইত্যাদি যন্ত্রবাদনেও তিনি পারদর্শী ছিলেন। তিনি আলাউদ্দিন খাঁর ‘মাইহার স্ট্রিং ব্যান্ড’ দলের সদস্য ছিলেন। প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্করের নৃত্যদলের সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তিনি দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনে তিনি যন্ত্রসঙ্গীতের শিক্ষক ছিলেন। চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাট্যে তাঁর এসরাজবাদন শুনে রবীন্দ্রনাথ অভিভূত হন। পরে ফুলঝুরি খান শিলং চলে যান। সেখানে তিনি একটি সঙ্গীত বিদ্যালয় স্থাপন করে শিষ্যদের সঙ্গীত শিক্ষা দেন। ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং ঢাকা বেতারকেন্দ্রে ‘নিজস্ব শিল্পী’ হিসেবে যোগদান করেন। বেতারে তিনি তারসানাই বাজাতেন।

সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য ফুলঝুরি খান ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার’-এ ভূষিত হন। ১৯৮২ সালে ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। [মোবারক হোসেন খান]