কোষ

কোষ (Cell) হলো সমস্ত জীবন্ত বস্তুুর কাঠামোগত এবং কার্যকরী ক্ষুদ্রতম একক। কিছু একক কোষ একটি পূর্ণাঙ্গ জীব হিসেবে কাজ করতে পারে, যেমন একটি ব্যাকটেরিয়াা বা ঈস্ট। অন্যরা অনেকগুলো কোষ মিলিতভাবে একটি বহুকোষী জীব যেমন উদ্ভিদ ও প্রাণী গঠন করে। পৃথক একক হিসাবে একটি কোষ তার নিজস্ব পুষ্টি-উপাদান বিপাকীয় ক্রিয়ার ম্ধ্যামে ভাঙতে পারে, গড়তে পারে, নিজস্ব শক্তি তৈরি করতে পারে এবং পরবর্তী প্রজন্ম সৃষ্টির লক্ষ্যে নিজের অনুরূপ আরেকটি কপি তৈরি করতে পারে। একটি কোষের তিনটি প্রধান অংশ রয়েছে: কোষঝিল্লি বা প্লাজমা মেমব্রেন, নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম। কোষঝিল্লি কোষকে ঘিরে একটি বহিরাবরণ তৈরি করে, যা কোষের ভিতরে এবং বাইরে পদার্থের স্থানান্তর বা আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে। নিউক্লিয়াস হলো কোষের অভ্যন্তরে একটি কাঠামো যা নিউক্লিওলাস এবং কোষের বেশির ভাগ ডিএনএ এটি ধারণ করে। এটি এমন একটি স্থান যেখানে কোষের বেশির ভাগ আরএনএ তৈরি হয়। সাইটোপ্লাজম হলো কোষের ভিতরের এক ধরনের তরল পদার্ধ। কোষের অভ্যন্তরের ক্ষুদ্র অঙ্গগুলোকে অঙ্গাণু বা অর্গানেল বলা হয়, যেমন মাইটোকন্ড্রিয়া, লাইসোসোম, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, গলজি বস্তুু ইত্যাদি। মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে; লাইসোসোম কোষের মধ্যে অবাঞ্ছিত পদার্থগুলোকে হজম করে এবং এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম এবং গলজি বস্তু প্রয়োজনীয় প্রাণ অণু সংশ্লেষণ করে এবং তাদেরকে সঠিক অবস্থানে নিয়ে গিয়ে প্রক্রিয়াকরণ এবং বাছাই করে কোষের অভ্যন্তরীণ সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উপরন্তু, উদ্ভিদ কোষে ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে, যা সালোকসংশ্লেষণের জন্য দায়ী। এই সমস্ত অঙ্গাণুগুলির মধ্যে সাইটোপ্লাজমের স্থানটি সাইটোসোল নামে পরিচিত। সাইটোসোলে ফাইব্রাস অণুর একটি সংগঠিত কাঠামো রয়েছে যা সাইটোস্কেলিটন গঠন করে, যা একটি কোষকে তার আকৃতি দেয়, অঙ্গাণুগুলোকে কোষের মধ্যে স্থানান্তর করতে সক্ষম করে এবং একটি প্রক্রিয়া প্রদান করে যার মাধ্যমে কোষ নিজেই নড়াাচড়া করতে পারে। সাইটোপ্লাজম হলো যেখানে বেশির ভাগ রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে এবং যেখানে বেশির ভাগ প্রোটিন তৈরি হয়। মানবদেহে ৩০ ট্রিলিয়নেরও বেশি কোষ রয়েছে। [তাহিরা ইয়াসমিন]